প্রায় সম্পূর্ণ কাজে শেষ মুহূর্তে বাধা পড়ায় বিচলিত হয়ে পড়তে পারেন। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষার বিষয়ে ... বিশদ
কল্ল্যার ক্র্যাশারের সামনে পাথরের দাম জানতে চাওয়ার মধ্যেই বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল এলাকা। ক্র্যাশারের ম্যানেজারের দাবি, নতুন কেউ এলে প্রথমে এভাবেই সবাই চমকে ওঠে। এটা এখানকার রোজকার ঘটনা। খাদানগুলিতে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর ভাঙার কাজ চলে। কেশিয়া গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, গ্রামগুলিতে বিস্ফোরক মজুত করে রাখে মাফিয়ারা। সেখান থেকেই বিভিন্ন খাদানে নিয়ে যাওয়া হয়। বীরভূমের মতো বিস্ফোরণ হলে পুরো গ্রামটাই উড়ে যেতে পারে।
জিৎপুর গ্রামের ঝাঁ চকচকে ঢালাই রাস্তা দিয়ে গেলেই বোঝা যাবে কী বড় ‘কর্মযজ্ঞ’ চলছে। বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে রয়েছে দৈত্যাকার ড্রিল মেশিন। জেসিবি, ডাম্পার সহ পাথর খাদানে ব্যবহার হওয়া ভারী যন্ত্রাংশ। দেখে বোঝার উপাই নেই একটি বৈধ খাদানের আড়ালে পুরো অবৈধ পাথর সাম্রাজ্য চলছে। সবচেয়ে উদ্বেগের এই বিস্ফোরক নিয়ে।
গতবছর অক্টোবর মাসেই বীরভূমের লোকপুর থানার ভাদুলিয়ায় খাদানে দাঁড়িয়ে থাকা বিস্ফোরকবোঝাই ডাম্পারে বিস্ফোরণ হওয়ায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়। এখানে তো গ্রাম লাগোয়া খাদান। সেখানেই ঘটছে অহরহ বিস্ফোরণ। জনপদের কাছেই থাকে বিস্ফোরক। বীরভূমের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কী হতে পারে, তা ভেবে শিউরে উঠতে হয়।
এই অবৈধ পাথর সাম্রাজ্যে কিছু গ্রামের মানুষ রোজগার করলেও সালানপুর, বারাবনি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা চরম সমস্যায় পড়েছেন। খাদান ও ক্র্যাশার থেকে পাথরবোঝাই ডাম্পারগুলি ছুটে চলে সালানপুরের আমডাঙা থেকে বারাবনি ব্লকের গোরাণ্ডি যাওয়ার রাস্তায়। প্রতিনিয়ত ভারী গাড়ি যাতায়াতের জেরে রাস্তা ভেঙে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। প্রাণ হাতে নিয়ে মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। পাথরবোঝাই ডাম্পারগুলি যেসব রাস্তার পাশ দিয়ে যায় সেইসব এলাকার বাসিন্দাদের রাতের ঘুম উবে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, এখান থেকে পাথর গৌরাণ্ডির জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, সেখানে জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় বনদপ্তরের জমি দখল করে ক্র্যাশার গড়ে তোলা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, হিন্দুস্থান কেবলসের দেশবন্ধু পার্ক থেকে একটি রাস্তা এই পাথর সাম্রাজের বুক চিরে যাবে কল্ল্যা মোড় পর্যন্ত। রাস্তা তৈরির কাজ শুরুও হয়েছে। বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে, ফাঁকা জায়গার উপর দিয়ে এই রাস্তা করার আসল উদ্দেশ্য পাথর শিল্পাঞ্চলের জন্য গ্রিন করিডর করে দেওয়া। যদিও অন্য একটি অংশের মানুষের দাবি, তাতেও যদি জনবহুল এলাকায় ডাম্পার চলাচল বন্ধ হয় নিস্তার পাবেন হাজার হাজার মানুষ। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের ডিসি সন্দীপ কাররা বলেন, বিষয়টি আমার নজরে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। (শেষ)