একাধিক সূত্র থেকে আয় বৃদ্ধি ও সঞ্চয় যোগ। নতুন আয়ের দিশাও পেতে পারেন। খেলাধুলায় উন্নতি। ... বিশদ
পাড়ুই থানার মহুলারা গ্রামের বাজারে অটোমোবাইল পার্টসের দোকান রয়েছে আজাহারউদ্দিনের। সেই দোকানের কর্মচারী ছিলেন শেখ তাজিম। প্রায় ৭ থেকে ৮ বছর মোটর পার্টসের সে কাজ করত। শুক্রবার সন্ধ্যায় চা খেতে যাওয়ার নাম করে আজাহারউদ্দিনকে বাইকে চাপিয়ে নিয়ে যায়। কিছুদূর যাওয়ার পরই একটি চারচাকা গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে যায় তাজিম। গাড়িতে ছ’জন অপেক্ষা করছিল। আজাহারউদ্দিনকে জোর করে তাতে তুলে নেওয়া হয়। বাইকটি নিয়ে পিছু পিছু যায় তাজিম। একটি জঙ্গলের মধ্যে গিয়ে থামে গাড়িটি। রাত নটা নাগাদ পঞ্চাশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে আজাহারউদ্দিনের বাড়িতে ফোন করা হয়। টাকা না দিলে বা পুলিসকে জানালে তাঁকে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। ভয় পেয়ে পুলিসের দ্বারস্থ হয় অপহৃতের পরিবার। যৌথ তদন্তে নামে সিউড়ি ও পাড়ুই থানার পুলিস। রাতেই দুবরাজপুরের বালিজুড়ির জঙ্গল থেকে মুর্তোজ নামে এক কমবয়সী যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। সে পুলিসকে দেখে ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পিছু ধাওয়া করে ধরে ফেলে পুলিস। গ্যারেজে কাজ করা মূল ষড়যন্ত্রকারী তাজিম ও বাকিদের খোঁজ পায়নি পুলিস। এদিন বেশ কয়েকটি হুমকি ফোনের কল রেকর্ড ভাইরাল হয়। সেই সব কল রেকর্ড পুলিসকে জমা দিয়েছে অপহৃতের ভাই। শোনা যাচ্ছে, কীভাবে হিন্দিতে ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কোন পথে আসতে হবে, সেটাও বলা হচ্ছে। পুলিস সকলের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে।
এদিন অপহৃত আজাহারউদ্দিন আদালত চত্বরে বলেন, তাজিম বাইক থামিয়ে বলে একটু দাঁড়া। মাথায় একটি কালো কাপড় বেঁধে আমার পীঠে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকায়। বলে, চিৎকার না করে চুপচাপ চল। এরপর প্রথমে আহমদপুর রোড হয়ে সিউড়িতে। তারপর বক্রেশ্বর হয়ে বালিজুড়ির জঙ্গলে নিয়ে যায়। এরপর টেনেটেনে গাড়ি থেকে নামিয়ে আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। মারধোর করে। ভাই, স্ত্রীকে ফোন করে বলে, ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে এখনই চলে আসতে। ভাই দু’ লক্ষ টাকা নিয়ে আসছি বলে।
মাত্র দু’লক্ষ টাকায় দুষ্কৃতীদের মন ভরবে না জেনে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে আজাহারউদ্দিনের পরিবার। তার থানায় গিয়ে পুরো ঘটনা খুলে বলে। পুলিস সময় নষ্ট না করে মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করা শুরু করে। আজাহারউদ্দিন বলেন, রাত তখন দু’টো। পুলিস ওই জঙ্গলে হাজির হয়ে আমাকে উদ্ধার করে। আমার দোকানের কর্মী তাজিমই মূল অভিযুক্ত। অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই তাজিমের সঙ্গে টাকাপয়সা নিয়ে আজাহারউদ্দিনের ঝামেলা চলছিল। পাড়ুই থানার এক অফিসার বলেন, ধৃতকে ১০ দিনের পুলিসি হেফাজত দিয়েছেন বিচারক। ধৃত মাঠের মাঝে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ফেলে দেয়। সেটির খোঁজেও তল্লাশি চলছে।