নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: আবাসে নাম নেই। পলিথিনের ছাউনির নীচে শিশু সহ পাঁচজনের সংসার জলপাইগুড়ির অরবিন্দ পঞ্চায়েতের করলাভ্যালি চা বাগানে। পরিবারের কর্তা ফিলিপ ভূমিজ অন্য একটি বাগানে শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে সদস্য বলতে তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। স্ত্রী তিনবছর আগে মারা গিয়েছেন। আগে মাথার উপর একটা টিনের ছাউনি ছিল। কিন্তু ঝড়ে তা উড়ে গিয়েছে। এখন তিনদিকে টিন দিয়ে কোনওমতে ঘেরা আর মাথার উপর পলিথিন। তার মধ্যেই পাঁচজনের সংসার। বাগানে ৩৩টি পরিবারের নাম উঠেছে আবাসের তালিকায়। অথচ বাদ পড়ে গিয়েছে এই হতদরিদ্র পরিবারটি। কিন্তু কেন? উত্তর নেই স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের। প্রত্যেকেই দায় চাপিয়েছে অন্যের কাঁধে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের রুবিনা মুন্ডা বলেন, ওই পরিবারটির আবাস তালিকায় নাম নেই কেন, এই প্রশ্ন আমারও। কয়েকদিন আগে বিডিও বাগানে এসেছিলেন। ওই পরিবারটি কীভাবে দিন কাটাচ্ছে তা দেখানো হয়েছে বিডিওকে। এখন দেখা যাক, কী হয়। জলপাইগুড়ি সদরের বিডিও মিহির কর্মকার বলেন, করলাভ্যালি চা বাগানে গিয়েছিলাম। কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ২০১৮ সালের সমীক্ষার ভিত্তিতে আবাস তালিকায় নাম উঠেছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কিছু চা শ্রমিকের নাম দিয়েছেন, যারা আবাসের তালিকার বাইরে থেকে গিয়েছেন। বিষয়টি জেলাশাসককে জানানো হয়েছে।
ফিলিপের তরুণী মেয়ে ভূমিকা ভূমিজ বলেন, বৃষ্টি হলেই পলিথিনের ফুটো দিয়ে ঘরে জল পড়ে ভেসে যায়। তখন কারও বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়। রান্না করতে করতে বৃষ্টি এসে গেলে নিভে যায় উনুন। সেদিন আর ভাত জোটে না। রোদ-ঝড়, জল যাই হোক না কেন, টিনের ঘেরা আর পলিথিনের ছাউনির নীচেই কাটাতে হয়।
ভূমিকার আত্মীয় মিঠুন ভূমিজ পাশেই থাকেন। তাঁর কথায়, পরিবারটি খুবই কষ্টে রয়েছে। কতবার পঞ্চায়েতকে বললাম, তবুও আবাসের তালিকায় নাম উঠল না। বৃষ্টি এলে এর-ওর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয় পরিবারটিকে।