পারিবারিক ক্ষেত্রে বহু প্রচেষ্টার পর শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা। সন্তানের কর্ম উন্নতিতে আনন্দ লাভ। অর্থকর্মে শুভ। ... বিশদ
এদিন দুপুর ২টোর পর এজলাসে ওঠেন বিচারক। প্রবল হট্টগোলের মধ্যে সঞ্জয়কে এজলাসে আনতে কালঘাম ছুটে যায় পুলিসের। স্বয়ং বিচারককেই হস্তক্ষেপ করতে হয়। তাঁর নির্দেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শুরু হয় প্রক্রিয়া। প্রথমেই আর জি কর কাণ্ডের গোটা ঘটনা ক্রমান্বয়ে সঞ্জয়কে শোনান বিচারক। বলেন, ‘আপনি যে ঘটনাস্থলে ছিলেন, তার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। আপনার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনের হদিশও মিলেছে ওখানে।’ ৫০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই এই ঘটনার যথার্থ সত্যতা উঠে এসেছে বলে জানিয়ে দেন বিচারক। সব শেষে বিচারক বলেন, ‘সব তথ্য-প্রমাণই সঞ্জয়ের বিপক্ষে।’ তাই সিবিআই যে ধারায় সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছে, সেই ধারাতেই সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা হল বলে জানিয়ে দেন বিচারক। এর পাশাপাশি আদালত জানিয়ে দেয়, অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় দোষীর আমৃত্যু কারাদণ্ড, ২৫ বছর জেল অথবা সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। মামলার বিষয়ে সোমবারই সঞ্জয়ের বক্তব্য শুনবেন বলে জানিয়ে দেন বিচারক। তখনই একপ্রকার উত্তেজিত হয়ে পড়ে সঞ্জয়।
এজলাসে মামলা শুরুর আগেই মৃত চিকিত্সকের বাবা-মা সহ আত্মীয়রা আদালতে চলে আসেন। আর জি কর কাণ্ডের আঁচ রাজ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বিচার চেয়ে পথে নেমেছিল নাগরিক সমাজ। তাই এই রায়দানের দিকে তাকিয়ে ছিলেন সকলেই। এদিন শিয়ালদহ আদালতের বাইরে সকাল থেকেই শুরু হয় জমায়েত। আদালত চত্বরে ছিল নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনি। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তায় দুর্গ হয়ে উঠেছিল আদালত। রায় ঘোষণার পর সিবিআইয়ের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি পার্থসারথী দত্ত বলেন, ‘অভিযুক্ত সঞ্জয় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সিবিআইয়ের তরফে সন্তোষ প্রকাশ করছি। আমরা যে তথ্য ও প্রমাণ আদালতে তুলে ধরেছিলাম, তা সম্পূর্ণ প্রমাণ করতে পেরেছি। আগামী সোমবার আমরা দোষীর সর্বোচ্চ সাজার আবেদন জানাব।’ নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অমর্ত্য দে বলেন, ‘সিবিআইয়ের পাশাপাশি আমরাও প্রায় ৭৫ পাতার নথি আদালতের কাছে পেশ করেছিলাম। সওয়াল-জবাবে সেই বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছিল। অভিযুক্তের সর্বোচ্চ সাজা পাওয়া দরকার। তার কঠিন সাজা হলে সমাজেও বার্তা যাবে।’ ধৃত সঞ্জয়ের কৌসুঁলিদের বক্তব্য, অনেক প্রশ্নের উত্তর অধরা। অনেক কিছুই প্রকাশ্যে এল না। জানা গেল না, এই ঘটনার পিছনে আর কারা ছিল। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এদিন সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর নিয়ে যে মামলা চলছে, সেই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি শুনানি চান নির্যাতিতার আইনজীবীরা। মামলার নথিতে সেই পিটিশন রেখে দিয়েছে আদালত। কড়া নিরাপত্তায় আদালত থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সঞ্জয়কে। ৬ নম্বর সেলে থাকবে সে। সূত্রের খবর, সন্ধ্যায় জেলে চুপ করে বসে থাকতে দেখা যায় সঞ্জয়কে। সোমবার সকাল ১০টায় ফের তাকে আদালতে হাজির করানো হবে বলে খবর।