হস্তশিল্পীদের কর্মোন্নতি ও নতুন কর্মের সুযোগ লাভের সম্ভাবনা। পেশাদার ডাক্তার, আইনজীবী ও অধ্যাপকদের পক্ষে দিনটি ... বিশদ
আলিপুরে কলকাতা পুলিস ট্রেনিং স্কুলের পাশে রয়েছে বিএসএনএলের একটি বড় এলাকা। পোশাকি নাম টেলিকম ফ্যাক্টরি। সেখানে এক সময় টেলিফোনের হ্যান্ডসেট ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ তৈরি হতো। বর্তমানে টেলিফোন সেট উৎপাদন বন্ধ থাকলেও সেখানে পাইপ ও কেবল উৎপাদন হয়। সেই কারখানা সরিয়ে খড়গপুরে নিয়ে যেতে চাইছে বিএসএনএল। তাতে গোটা চত্বর ফাঁকা হবে এবং তা নিলামে তোলা হবে। তার জন্য ইতিমধ্যেই আগ্রহপত্র চাওয়া হয়েছে। এই ফ্যাক্টরিরই একটি অংশের হেরিটেজ তকমা রয়েছে। আগ্রহপত্রে স্পষ্ট ভাষায় লেখা আছে, ৫২ হাজার ১৭৮ বর্গমিটার এলাকা বিক্রি করা হবে, যার মধ্যে ১০ হাজার ১৪ বর্গমিটার এলাকা হেরিটেজ। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন বিএসএনএলের আইএনটিটিইউসি সমর্থিত ট্রেড ইউনিয়নের সম্পাদক গৌতম চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘হেরিটেজ সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন।’ এফএনটিও’র সম্পাদক গোরাচাঁদ বসু এবং টেলিকম ফ্যাক্টরির সম্পাদক কৃষ্ণ গুহও এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
কেন সরকারি সম্পদ বিক্রি করায় এতটা আগ্রহী কেন্দ্র? ২০২১ সালে বাজেট পেশ করার সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক, দপ্তর বা সরকারি সংস্থার হাতে এমন কিছু সম্পদ আছে, যা সেভাবে কাজে আসছে না। সেগুলিকে যদি বেচে দেওয়া যায়, তাহলে সেখনে পর্যটনকেন্দ্র বা অন্য কোনও পরিকাঠামো গড়ে উঠতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, রিয়েল এস্টেট সংস্থাগুলির কাছে সরকারি সম্পদ বিক্রি করাই ছিল সরকারের আসল উদ্দেশ্য। এরপর ২০২২ সালে অর্থমন্ত্রকের আওতায় গঠিত হয় ন্যাশনাল ল্যান্ড মনিটাইজেশন কর্পোরেশন, যার ১০০ শতাংশ মালিকানা সরকারের। তারাই সরকারি সম্পদ বিক্রির কাজে নেমেছে। এর আগেও উত্তর ২৪ পরগনায় বিএসএনএলের হাতে থাকা দু’টি বিশাল জমি বিক্রির উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
আর্থিকভাবে ধুঁকতে থাকা বিএসএনএলকে চাঙ্গা করার তেমন কোনও উদ্যোগ নেয়নি মোদি সরকার। বরং টেলিকম দুনিয়ায় প্রতিযোগিতার বাজারে তাকে ক্রমশ পিছিয়ে দিতেই বেশি আগ্রহী কেন্দ্র—এমন অভিযোগও ওঠে। এই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটি নিজেদের বাঁচাতে ইতিমধ্যেই তাদের হাতে থাকা বিপুল পরিকাঠামোকে বিকল্পভাবে ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। তারা পড়ে থাকা বাড়ি ভাড়া দিয়ে আয় করছে। এই শহরেই এমন বহু বাড়ি থেকে ভাড়া বাবদ বিএসএনএল মাসে কোটি টাকার উপর রোজগার করছে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, আলিপুরের এই সম্পত্তিও তেমনভাবেই কাজে লাগানো যেত। তা না করে শুধুমাত্র পয়সার জন্য হেরিটেজ সম্পত্তি বিক্রি করার কি আদৌ কোনও প্রয়োজন ছিল? প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।