একাধিক সূত্র থেকে আয় ও সঞ্চয় বৃদ্ধির যোগ। কাজকর্মে উন্নতি হবে। মানসিক চঞ্চলতা ও ভুল ... বিশদ
এসবিআই রিসার্চের রিপোর্ট বলছে, গ্রামীণ ভারতে বিশেষত ডাল ও শস্য খাওয়া কমে যাচ্ছে। কেন? কারণ, ডালের দাম সাধ্যাতীত। তবু মোদি গরিবি কমিয়েছেন বলে দাবি করছেন। এফএমসিজি সমীক্ষা রিপোর্ট আবার বলছে, এই ‘ফাস্ট মুভিং কনজিওমার গুডস’ যে সংস্থাগুলি উৎপাদন ও বাণিজ্য করে, বিগত তিন মাসে তাদের লোকসান হয়েছে। অর্থাৎ ভোগ্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে না। অথচ অর্থনীতির রীতিই হল, দারিদ্র্য কমলে সর্বাগ্রে ভোগ্যপণ্য ক্রয় প্রবণতা বাড়বে। নীতি আয়োগ কয়েক বছর আগেই বলেছিল, বেকারত্ব ৪৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড করেছে। কিন্তু মোদি বলছেন, ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমা থেকে বেরিয়ে এসেছে। প্রশ্ন হল, তাহলে এখনও ৮২ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দিয়ে যেতে হচ্ছে কেন? এই সংখ্যা তো কমে যাওয়ার কথা!
এদিন দিল্লির ভারত মণ্ডপমে আয়োজিত গ্রামীণ ভারত মহোৎসব অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মোদি আরও দাবি করেছেন, ‘যদি সদিচ্ছা থাকে তাহলে ফল পাওয়া যায়। ১০ বছর ধরে যা বীজ বপন করেছি, তার সুফল এখন পাওয়া যাচ্ছে।’ অথচ ১৯ বছর আগে মনমোহন সিং যে বীজ বপন করে গিয়েছেন, সেই ১০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি আজও গ্রামীণ অর্থনীতির বলভরসা। গ্রামোন্নয়নে মোদির বিস্তারিত ফিরিস্তির তালিকায় অবশ্য সেই ১০০ দিনের কাজ ঠাঁই পায়নি। মনমোহন সিংয়ের আগে অটলবিহারী বাজপেয়ি চালু করে গিয়েছেন মিড ডে মিল, যা গ্রামীণ ভারতের খিদে এবং শিক্ষার দিগন্তকে বদলে দিয়েছে। মোদির গ্রামীণ ভারতের ভোলবদলের কাহিনিতে সেটিও স্থান পায়নি। অথচ বিগত ২৫ বছরে এই দু’টি প্রকল্প গ্রামীণ ভারতে বিপ্লব এনেছে। প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে উচ্চবাচ্য না করায় প্রশ্ন উঠেছে।
মোদির সাফ দাবি, ২০১২ সালে গ্রামীণ দারিদ্র্য ছিল ২৬ শতাংশ। এখন তা ৫ শতাংশেরও কম। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর মতে, দেশের গ্রামবাসী মানুষের ৯৫ শতাংশই গরিব নয়! তাদের ভাগ্য তিনি বদলে দিয়েছেন ব্যাঙ্ক সখী, বিমা সখী, লাখপতি দিদি, জন ধন যোজনার মতো প্রকল্প চালু করে। উন্নয়নের প্রমাণ হিসেবে মোদি আরও বলেছেন, ‘৯৪ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারে এখন মোবাইল ফোন, ব্যাঙ্কিং এবং ইউপিআই সুবিধা রয়েছে।’ গ্রাম যে আর নিছক কৃষি কিংবা কৃষিসংক্রান্ত পেশার উপর নির্ভর করে নেই, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পও বিপুল হারে গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে, সেই দাবিও উঠে এসেছে তাঁর গলায়। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘এই মিডিয়াম অ্যান্ড স্মল ইন্ডাস্ট্রি সেক্টরকে আমরা নতুন প্রাণদান করেছি। তাই গ্রামীণ অর্থনীতিতে এসেছে বাড়তি টাকা।’ কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা কী? নোটবাতিলের পর থেকে হাজার হাজার এমএসএমই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র ২০২২ সালে ঝাঁপ বন্ধ হওয়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থার সংখ্যা ১৩ হাজারের বেশি।