একাধিক সূত্র থেকে আয় ও সঞ্চয় বৃদ্ধির যোগ। কাজকর্মে উন্নতি হবে। মানসিক চঞ্চলতা ও ভুল ... বিশদ
জাল নথির ভিত্তিতে পাসপোর্ট তৈরি হচ্ছে কীভাবে? এই প্রশ্নে প্রথম থেকেই যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে তদন্তকারীদের মধ্যেই তুমুল সন্দেহ তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে আলিপুর আদালতের ভর্ৎসনাও শুনতে হয় গোয়েন্দাদের। তদন্তকারী অফিসারের উদ্দেশে বিচারক মন্তব্য করেন, ‘পাসপোর্টের পুলিস ভেরিফিকেশন কি পিওনরা করেন? পুলিসি যাচাই প্রক্রিয়া কীভাবে হয়?’ সাংবাদিক বৈঠকে সিপি মনোজ কুমার ভার্মাও জানিয়েছিলেন, ‘যাচাই প্রক্রিয়ায় কোনও গলদ থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’ এরপরেই নড়েচড়ে বসে কলকাতা পুলিস। এই কাণ্ডের অন্যতম দুই মাথা সমরেশ বিশ্বাস ও মনোজ গুপ্তাকে জেরা করে তদন্তকারীরা পুলিস-যোগ খুঁজে পান। লালবাজার সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে এসসিও’র পাসপোর্ট শাখায় পোস্টিং পেয়েছিলেন আব্দুল। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে একটি পাসপোর্ট যাচাই করাতে তৎকালীন এই সাব ইনসপেক্টরের কাছে হাজির হন পাসপোর্টকাণ্ডের চক্রী সমরেশ। অভিযোগ, ঠিকানা যাচাই না করেই তা ‘অ্যাপ্রুভ’ করে দেন এসআই। সেজন্য দেওয়া হয়েছিল ৩০ হাজার টাকা।
গত সেপ্টেম্বর মাসে ভবানীপুর থানায় প্রাথমিকভাবে ১৩০টি পাসপোর্টের বৈধতা প্রসঙ্গে অভিযোগ জমা পড়ে। দেখা যায় তার মধ্যে ৫২টি পাসপোর্ট কলকাতার ঠিকানায় তৈরি হয়েছে। সবকটিরই পুলিসি যাচাই হয়েছে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে। নিয়মমাফিক প্রতিটি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে যাচাইকারী অফিসারের (ভেরিফিকেশন অফিসার) নাম নথিবদ্ধ থাকে পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ ও লালবাজারের এসসিও’তে। গোয়েন্দারা দেখেন, এই ৫২টি পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন অফিসার হিসেবে আব্দুল হাইয়ের নাম ও সরকারি সিলমোহর রয়েছে। সেখানেই সন্দেহ দানা বাঁধে। শুক্রবার তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। জবাবে অসঙ্গতি মেলায় শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয় অবসরপ্রাপ্ত এসআইকে।
লালবাজার সূত্রে খবর, প্রথমেই ‘ঘুষ’-এর টোপ গিলে নেওয়ায় এসআইকে জালিয়াতিতে শামিল করে সমরেশ। অভিযোগ, কলকাতার ঠিকানায় তৈরি হওয়ায় সমস্ত পাসপোর্ট যাচাইয়ে তাঁর প্রতি সইয়ের দাম ছিল ৩০-৪০ হাজার টাকা। ভুয়ো নথির ভিত্তিতে তৈরি হওয়া পাসপোর্ট ‘যাচাই’ করে দু’মাসে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা পকেটে ঢুকেছে আব্দুলের। সমরেশের এই জালিয়াতির ‘নেক্সাস’ থেকেই মনোজ গুপ্তার সঙ্গে পরিচয় হয় আব্দুলের। লালবাজার সূত্রে খবর, ডিউটি টাইমের বাইরেও ‘যাচাই-সই’ করতেন অভিযুক্ত। জেরায় আব্দুল জানিয়েছে, সমরেশের বাড়িতে গিয়েও পাসপোর্ট ‘ভেরিফিকেশন’ সই করেছেন তিনি। শনিবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় অভিযুক্তকে। ধৃতকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।