নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভিনরাজ্য থেকে সুপারি কিলার নিয়ে এসে খুনের চেষ্টা হল কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্ত (স্বরূপ) ঘোষকে। শুক্রবার ভরসন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে কসবায় তাঁর বাসস্থান রাজডাঙা চক্রবর্তী পাড়ায়। সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে বসে কয়েকজন পরিচিতের সঙ্গে গল্পগুজব করছিলেন সুশান্তবাবু। ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুশান্তবাবুর বাড়ি কসবার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে। সেই বাড়ির সামনেই স্কুটি চেপে আসে সুপারি কিলার। পিলিয়ন থেকে নেমেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে সুশান্তবাবুকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে যায় সে। কিন্ত সেভেন এমএম পিস্তলের ম্যাগাজিনের লক না খোলায় সৌভাগ্যবশত প্রাণে রক্ষা পান ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান। স্কুটি চালক পরিস্থিতি বুঝে পালিয়ে গেলেও, সুশান্তবাবু সহ অন্যরা ধাওয়া করে আততায়ীকে ধরে ফেলেন। তাকে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জেরায় পুলিসকে সে জানিয়েছে, বরো চেয়ারম্যানকে খুনের জন্য তাকে ‘সুপারি’ দেওয়া হয়েছে। সুপারি বাবদ কিছু অগ্রিম টাকাও মেলে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃত সুপারি কিলারের নাম যুবরাজ সিং। বিহারের বৈশালীতে তার বাড়ি। খুনের কাজ সারতে বৃহস্পতিবারই বিহার থেকে এসে বাইপাস সংলগ্ন একটি হোটেলে উঠেছিল যুবরাজ। ঘটনার পর এলাকায় তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সুপারি দেওয়ার নেপথ্য কারিগরকে খুঁজে বের করার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় মহিলারা। ঘটনার জেরে তৃণমূল মহলেও আলোড়ন শুরু হয়। সুশান্তবাবুর খোঁজখবর নিতে সেখানে পৌঁছে যান মন্ত্রী জাভেদ খান, ইন্দ্রনীল সেন এবং মালা রায়। পৌঁছন পুলিসের পদস্থ কর্তারা।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস জেনেছে, গোটা ঘটনার নেপথ্য রয়েছে বন্ডেল গেট এলাকার এক সমাজবিরোধী ছোটু। সে এক গ্যাংস্টারের শাগরেদ বলে এলাকায় পরিচিত। চাঁদু নামে বিহারের এক পরিচিতের মাধ্যমে সুপারি কিলারের খোঁজ শুরু করে। চাঁদু সে কাজের ভার দেয় ইকবাল নামে বিহারের আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিকে। মাত্র ১০ হাজার টাকা সুপারির বিনিময়ে ইকবালের দেওয়া সুপারি নেয় যুবরাজ। পুলিসের ওই সূত্রটি জানিয়েছে, যে স্কুটি চেপে সুপারি কিলার এসেছিল, সেটি ছোটুর। সে নিজেই চালাচ্ছিল স্কুটি। ঘটনার সময়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে তা স্পষ্ট তদন্তকারীদের কাছে। দেখা গিয়েছে একটি সন্দেহজনক গাড়িও।
বিধ্বস্ত সুশান্ত ঘোষ বলেছেন, ‘ঠিক কী কারণে হামলা, তা বলতে পারব না। নিজের পাড়াতেই হামলা হবে, স্বপ্নেও ভাবিনি। আতঙ্কের থেকে বেশি আঘাত লেগেছে। আমি ব্যথিত। আমার পরিবারও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। পিস্তলের লক খোলা থাকলে অন্য কিছু হতে পারত। আমার পরবর্তী পদক্ষেপ আপনাদের সঠিক সময়ে জানাব।’