হায়দরাবাদ, ১৪ ডিসেম্বর: হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে ‘পুষ্পা ২’ সিনেমার প্রিমিয়ারে পদপিষ্ট হয়ে এক মহিলার মৃত্যু হয়। ওই মহিলার নাম রেবতী। তিনি অল্লু অর্জুনের অনুরাগী বলে জানা যায়। সেই মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল, শুক্রবার ‘পুষ্পা ২’ খ্যাত অভিনেতা অল্লু অর্জুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। আর তাঁর গ্রেপ্তারি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় হায়দরাবাদে। অল্লুর গ্রেপ্তারি নিয়ে তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিআরএস ও ওয়াই এস আর কংগ্রেসের নেতারা। পুলিস অল্লুকে তাঁর বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় চিক্কাড়পল্লি থানায়। নিম্ন আদালতের নির্দেশে ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয় তাঁর। তারপরেই সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিনেতা। আর হাইকোর্টেই স্বস্তি পান তিনি। ৫০ হাজার টাকার বন্ডে অন্তর্বর্তী জামিন পান অল্লু। যদিও গতকাল, শুক্রবার তাঁর জেলমুক্তি হয়নি। কারণ গতকাল, রাত পর্যন্ত হাইকোর্টের নির্দেশ চঞ্চলগুড়া জেল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছয়নি। তাই গতকাল, শুক্রবার রাতটা জেলেই কাটাতে হয় বড়পর্দার ‘পুষ্পা’কে। আজ, শনিবার সকালে জেল থেকে বেরোন অল্লু। তারপরেই সোজা চলে যান হায়দরাবাদের জুবিলি হিলসের অফিসে। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বাড়িতে যান। তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিনেতা বলেন, ‘আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাকে এতটা ভালোবাসা ও সমর্থন জানানোর জন্য। আমার সমস্ত অনুরাগীদেরও ধন্যবাদ জানাই। চিন্তার কোনও কারণ নেই। আমি ঠিক আছি, দেশের আইনকে শ্রদ্ধা জানাই। তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করব। মৃতার পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রয়েছে। যা ঘটেছিল তার জন্য আমরা দুঃখিত। সেটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমি ওই মৃতার পরিবারের পাশে সবসময়ে আছি, সবরকম সাহায্য করব।’ উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’ ছবির প্রিমিয়ারে গিয়েছিলেন ভাস্কর মাগুদামপল্লি। তাঁর সঙ্গী ছিলেন স্ত্রী রেবতী (৩৯), ন’বছরের পুত্র ও আট বছরের কন্যা। রাত ন’টা বেজে ১০ মিনিট নাগাদ প্রেক্ষাগৃহে ঢোকেন তাঁরা। আধঘণ্টা পর আচমকাই প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করেন অল্লু অর্জুন। অভিযোগ, ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। সুপারস্টারকে দেখার জন্য হলের মধ্যে ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে যায়। সেই হলেই নীচের ব্যালকনিতে বসেছিলেন রেবতী ও তাঁর ছেলে। হুড়োহুড়িতে ছেলেকে নিয়ে পড়ে যান রেবতী দেবী। তড়িঘড়ি পুলিস তাঁদের নিয়ে যায় হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হয় রেবতীর। এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটি। এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেন মহিলার স্বামী। অনিচ্ছাকৃত খুন সহ একাধিক ধারায় অল্লু, তাঁর নিরাপত্তারক্ষী, টিম সহ সন্ধ্যা থিয়েটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। এর আগেই মৃতার পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন অভিনেতা। যদিও অল্লুর গ্রেপ্তারির প্রসঙ্গে মৃতার স্বামী গতকাল, শুক্রবার বলেন, ‘আমার স্ত্রীর মৃত্যুর নেপথ্যে অল্লু অর্জুনের কোনও হাত নেই। আমার ছেলে ছবিটি দেখতে চেয়েছিল, তাই গিয়েছিলাম। পুলিস আমাকে অল্লুর গ্রেপ্তারির কথা জানায়নি।’