বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ছবির প্রধান চরিত্র মুরাদ (রণবীর সিং) মুম্বইয়ের বস্তির ছেলে। এক চিলতে ঘরে সঙ্গী মা, বাবা, ঠাকুমা, ভাই। এরই মাঝে মুরাদের গাড়ি চালক বাবা আফতাব (বিজয় রাজ) বাড়িতে নিয়ে আসে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রীকে। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতেও স্নাতকের ছাত্র মুরাদ নির্বাক।
পশ্চিমী র্যাপ সঙ্গীতের অনুরাগী মুরাদের প্রেমিকা সাফিনা (আলিয়া ভাট) মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী। নিজের বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে সাফিনা অত্যন্ত তৎপর। কোনও মহিলাকে মুরাদের আশপাশে ঘেঁষতে দেখলেই আর রক্ষে নেই। মুরাদের বেশ কয়েকটি বন্ধুও রয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন আবার অপরাধ জগতের সঙ্গেও জড়িত।
এসবের মধ্যেই একদিন মুরাদের বাবা পা ভেঙে বসে। পরিবার চালানোর ভার এসে পড়ে মুরাদের উপর। উচ্চবিত্ত বাড়িতে বাবার ছেড়ে আসা ড্রাইভারের চাকরি নিতে বাধ্য হয় সে। পাশাপাশি চলতে থাকে পড়াশোনা। একদিন হঠাৎই কলেজে গিয়ে সে র্যাপ গায়ক এস সি শেরের (সিদ্ধান্ত চতুর্বেদি) মনমুগ্ধকর অনুষ্ঠান চাক্ষুস করে। তারপর নিজের চেষ্টায় দেখা করে ফেলে শেরের সঙ্গে। জীবন বদলে যায় মুরাদের। মূলত শেরের তত্ত্বাবধানেই বস্তির মুরাদ থেকে র্যাপ গায়ক ‘গালি বয়’ হয়ে ওঠে। ছেলের র্যাপ গানকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার ইচ্ছেকে একদমই মেনে নেয়নি মুরাদের বাবা। ছেলের গালে সপাটে চড় মেরে কড়া ভাষায় দিয়েছেন এসব বন্ধ করার বার্তা। এরপর কী হবে তা বলে দিলে ছবি দেখার মজাটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
রণবীর সিং যে এনার্জেটিক স্টার সে তো সকলেরই জানা। নতুন বছরেও স্বমহিমায় তিনি। গোটা ছবি জুড়ে তাঁর অবাধ বিচরণ। তাঁর অভিব্যক্তি, কথা বলার স্টাইল সবেতেই তিনি নিখুঁত। সাফিনার ভূমিকায় অনবদ্য আলিয়া ভাটও। সাফিনা মুরাদকে অত্যন্ত ভালোবাসে। তাই তার ভালোবাসার পাত্রের দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করা মহিলার মাথায় কাচের বোতল ভাঙতেও পিছপা হয় না। এমন এক আবেগপ্রবণ মহিলার চরিত্রে একেবারে যথাযথ আলিয়া।
ছবিতে একজন বিদেশি সঙ্গীত পড়ুয়ার ভূমিকায় আছেন কল্কি কোয়েচলিন। অল্প কিছুক্ষণের জন্য হলেও পর্দায় তাঁর উপস্থিতি নজর কাড়বে। আফতাবের চরিত্রে বিজয় রাজের অভিনয়ও তারিফযোগ্য।
পরিচালক জোয়া আখতার নিজস্ব শৈলীতে প্রতিটি চরিত্রকে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যে ফুটিয়ে তুলেছেন। কায়দা করে দেখিয়েছেন ধনী-দরিদ্রের বিভেদ। অথচ সচেতনভাবে এড়িয়েছেন রাজনৈতিক বিতর্ক। তবে কিছু জায়গায় ছবির কাহিনী অনুমান করা যায়। সিনেম্যাটোগ্রাফি বেশ আকর্ষণীয়। সম্পাদনাও মন্দ নয়।
গান, আরও নির্দিষ্ট করে বললে, র্যাপ সঙ্গীত এই ছবির সম্পদ। জীবনের যন্ত্রণাকে সঙ্গীতের সুর-তাল-লয়ে বেঁধে তৈরি হয়েছে র্যাপ। আর সেই র্যাপ বোমার মতো ফেটে বেরিয়ে এসেছে রণবীরের মুখ দিয়ে। তাই ‘আসলি হিপ হপ’, ‘আজাদি’, ‘আপনা টাইম আয়েগা’ মতো র্যাপের পাশাপাশি ছবির প্রায় প্রতিটি গানই মন কাড়ছে। বিষয়, অভিনয়, সিনেমাটোগ্রাফি, সঙ্গীত সব মিলিয়ে এই ছবি চোখ ও মনকে তৃপ্তি দেয়। ছবি দেখতে দেখতে দু’ কলি গেয়েও পারেন— ‘আপনা টাইম আয়েগা’। আলবাত আসবে!