বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
১) মন্দির-ভাবনার সূত্রপাত।
২) মন্দিরের বিবিধ রূপ।
৩) মন্দির সম্পর্কে ‘শ্রীভাগবতামৃতবর্ষিণী’।
৪) মন্দিরে সম্পর্কে ‘শ্রীভাগবতামৃতবর্ষিণী’।
৫) মন্দিরের বৈশিষ্ট্য ও মাহাত্ম্য।
৬) বিবিধ-প্রসঙ্গ।
৭) পরিশিষ্ট।
১) মন্দির-ভাবনার সূত্রপাত:
ঈশ্বর সর্বভূতে অধিষ্ঠিত অথবা তিনি সর্বত্র বিরাজমান। এরূপ ধারণা করা সমস্ত স্তরের মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন—‘‘মন্দির, প্রার্থনাগৃহ, দেববিগ্রহ বা ধর্মগ্রন্থ—সবই মানুষের ধর্মজীবনের প্রাথমিক অবলম্বন বা সহায়মাত্র। তাকে ক্রমশ অগ্রসর হতে হবে।’’ মানুষের জীবনে যখন অভাববোধ আসে এবং তা আধুনিক সভ্যতা বা বিজ্ঞানজগৎ সেইস্থান পূর্ণ করতে অসমর্থ হয়, তখন সে ধর্মের (মন্দির বা সদ্গুরুর) স্মরণ নেয়। তখন তার প্রিয় দেব-দেবীকে আত্মবৎ-সেবার জন্য শাস্ত্রোক্তভাবে দেব-বিগ্রহ স্থাপন বা মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। সেটা একক বা যৌথভাবেও সম্পন্ন হতে পারে। স্থানবিশেষে এবং দেব-দেবীবিশেষে মন্দিরের বহুবিধ উপনাম হতে পারে। যেমন—‘দেবমন্দিরম’, ‘দেবস্থানম’, ‘ঠাকুরঘর’, ‘দেবতাঘর’, ‘গোঁহাইঘর’, (‘গোহাইঘর’), ‘নামঘর’, "Ramakrishna Universal Prayer Hall", "Ramakrishna Temple/ Shrine", "Om prayer Hall", Vivekananda sacred Place", "Akshar Dham Temple" ‘কোইল (Koil), ‘আলয়ম্’, ‘দেবালয়’, ‘চৈত্য (দেবগৃহ)’, ‘হর্ম্য (দেবাঙ্গন)’ প্রভৃতি। ভারতের প্রাচীন সংস্কৃত কাব্য অনুযায়ী মানবদেহ হচ্ছে মন্দির, (‘‘আলয়ং দেবশরীরঃ ভূতম্) আধুনিক ভাষায় মানবদেহকে বলা হয়— "Mobile Temple" (চলমান মন্দির)।
২) মন্দিরের বিবিধরূপ:
শাস্ত্রক্তোভাবে মন্দিরনির্মাণ এবং বিগ্রহস্থাপনের পূর্বে নানাদিক নিয়ে ভাবতে হয়। যাতে সেখানে পূজা—সেবার ত্রুটি না থাকে। দুঃখের বিষয় যে, ভারতের এবং পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের অসংখ্য সর্বজনীন বা ব্যক্তিগত দেবালয়ে নিয়মিত পূজা-সেবা বিলুপ্ত হয়েছে। আমরা দেখেছি যে, বিত্তবাণদের সুনাম ও সুযশের আশায় তৈরী মন্দিরে দর্শনার্থীদের সংখ্যা নগন্য। প্রাধান্য পায় মনোমালিন্য। আর পরিবেশ থাকে অপরিচ্ছন্ন। আবার যেখানে দেবতা বা দেবীর আদেশমতো মঠ বা মন্দির নির্মিত হয়েছে বা হচ্ছে, সেখানকার আধ্যাত্মিক পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। যেমন—রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন প্রতিষ্ঠিত পুরীর ‘জগন্নাথ মন্দির’, রাজা ত্রিলোচন প্রতিষ্ঠিত ত্রিপুরার ‘‘চতুর্দ্দশ দেবতা বাড়ি’’, ত্রিবাঙ্কুরের রাজা মার্তণ্ড বর্মা প্রতিষ্ঠিত ত্রিবান্দ্রমের ‘শ্রীপদ্মনাভ স্বামী মন্দির’ ইত্যাদি। উল্লেখ্য, উপমহাদেশের ৫১টি শক্তিপীঠস্থানের মন্দিরসমূহের নির্মাণকর্ম দেবী ভগবতীর আদেশে সুসম্পন্ন হয়েছে। এই প্রসঙ্গে স্মরণ করা যায় যে, ১৮৪৭ সালে রাণী রাসমণি দৈব-নির্দেশে কাশীধাম যাত্রা স্থগিত করে দক্ষিণেশ্বরে দেবী ভবতারিণীর মন্দির ইত্যাদি নির্মাণ করেন।