সব কর্মেই অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। কর্মের পরিবেশে জটিলতা। মানসিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করুন। ... বিশদ
এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দু-দু’বার ‘বোমা’ ফাটল। ফাটাল সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব ডেভেলপিং সোসাইটিজ (সিএসডিএস)। আমরা জানি, এই ঐতিহ্যবাহী সমীক্ষক সংস্থাটি কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হয়। পূর্ববর্তী রিপোর্টে সিএসডিএস তুলে ধরেছিল—মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব নিয়ে দেশবাসীর মনোভাব। স্বভাবতই চওড়া হয়ে উঠেছিল মোদি সরকারের কপালের ভাঁজ। ভোটের মুখে সেই দুশ্চিন্তার মেঘ ঢাকা দেওয়ার কৌশল খুঁজতে গেরুয়া শিবির যখন হয়রান, ঠিক তখনই সামনে এল আর একদফা জনমত যাচাইয়ের ফলাফল। কেন্দ্রীয় শাসকের পক্ষে দুঃসংবাদ এটাই যে, এই সমীক্ষা রিপোর্টে মোদি সরকারের ‘হ্যাটট্রিক’-এর গাওনা-বাজনার সারবত্তা নিয়ে রীতিমতো সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে, আপাতভাবে মোদি সরকারকেই ফের ক্ষমতায় আনার পক্ষে এখনও বেশিরভাগ মানুষ। ৪৪ শতাংশ চান, মোদিই সরকার তৈরি করুন এবং ৩৯ শতাংশের চাহিদা উল্টো। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই রিপোর্টে মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব নিয়ে প্রাথমিকভাবে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সমীক্ষালব্ধ সংখ্যা-তথ্যের ময়নাতদন্ত করে দেখা যাচ্ছে, মোদির জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে যথেষ্ট কমেছে। ২০১৯-এ ৪৭ শতাংশ ভোটার মোদির দ্বিতীয় সরকার চেয়েছিলেন। সংখ্যাটি পাঁচবছর বাদে ৪৪-এ নেমে এসেছে, মানে ৩ শতাংশ মানুষের মন গিয়েছে ছুটে। নেহরুর রেকর্ড ছোঁয়ার স্বপ্ন এখনও কি পূরণ হওয়ার অবকাশ আছে নরেন্দ্র মোদির? ২০১৯-এ এই সমীক্ষায় নেতিবাচক উত্তর দেন ৩৪ শতাংশ মানুষ। মোদিকে পছন্দ করেন না এমন মানুষজন এবার আরও দলে ভারী—৩৯ শতাংশ! এই দুই পরিসংখ্যানে লুকিয়ে রয়েছে আরও একটি সূক্ষ্ম তথ্য: গতবার পক্ষে-বিপক্ষের ব্যবধান ছিল (৪৭-৩৪=) ১৩, সেটাই এবার নেমে এসেছে মাত্র (৪৪-৩৯) ৫-এ! পরিস্থিতিটা ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলার মতোই ভয়ংকর নয় কি? ১৭ শতাংশ উত্তরদাতা ‘নো কমেন্টস’ বলে কাকে এড়াতে চাইলেন? মোদি-শাহ অনেক দিন ধরেই বুক বাজাচ্ছেন, ‘আব কি বার ৪০০ পার’ এবং ভোট সংগ্রহে তাঁরা ৫০ শতাংশের গণ্ডি পেরবেন! নববর্ষ হল শুভেচ্ছা বিনিময়ের একটি পবিত্র মুহূর্ত। কিন্তু তার প্রাক্কালে প্রকাশিত সমীক্ষা রিপোর্টে জনতা জনার্দনের যে কঠোরতর মনোভাব ব্যক্ত হয়েছে, তাতে শুভেচ্ছার ভাগ কমই দৃষ্ট হল। বিজেপি তো বটেই, এনডিএ’র ছুটন্ত অশ্বমেধের ঘোড়ার সামনেও একটি কালো বেড়াল রাস্তা কেটে দিল না কি?