বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
কয়েক দিন আগে রজার্স কাপের ফাইনালে এই মেদভেদভের মুখোমুখি হয়েছিলেন নাদাল। সেই ম্যাচে মেদভেদভকে ‘বেগেল’ সহকারে হারিয়েছেন স্ট্রেট সেটে হারিয়ে ছিলেন তিনি। এবারও শুরুটা নাদাল সুলভই হয়েছিল। প্রথম দুই সেটে মেদভেদভের বিপক্ষে দাপট বজায় রেখেই এগিয়ে যান রাফা। কিন্তু কে জানত শেষ তিনটি সেটে তাঁকে এমন কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলবেন মেদভেদভ! কেরিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্ল্যাম ফাইনাল খেলতে নেমেছিলেন পঞ্চম বাছাই রুশ খেলোয়াড়টি। তাঁর ফাইনালে উঠে আসাটা যে ‘ফ্লুক ছিল না, সেটা বোঝা গিয়েছে পরের দুই সেটে। নাদালকে বশ মানিয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ সেট ৭-৫, ৬-৪ ব্যবধানে জিতে নেন মেদভেদভ।
তখন মনে হচ্ছিল, ২৩ বছরের রুশ যুবকের ফিটনেসের সঙ্গে আর বুঝি এঁটে উঠতে পারবেন না ৩৩ বছরের নাদাল। কিন্তু নিউ ইয়র্কের ভ্যাপসা গরমে শারীরিকভাবে কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়লেও মানসিক দিক থেকে বিন্দুমাত্র দুর্বল হননি ‘স্প্যানিশ ম্যাটাডোর’। পর পর দুই সেটে হারের ধাক্কা সামলে নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েন নাছোড়বান্দা নাদাল। নির্ণায়ক শেষ সেটে তাঁর অভিজ্ঞতা ও সংকল্পের সামনে টিকতে পারেননি মেদভেদভ। শেষ সেট ৬-৪ গেমে জিতে আনন্দের জোয়ারে ভেসে যান রাফা। সেই সঙ্গে ফ্লাশিং মিডোয় লেখা হয়ে যায় ইউএস ওপেনের ইতিহাসে দ্বিতীয় দীর্ঘতম ফাইনালের কীর্তি। ৪ ঘণ্টা ৫১ মিনিট ধরে চলেছে রবিবারের খেতাবি লড়াই। মাত্র ৪ মিনিটের জন্য দীর্ঘতম ইউএস ওপেনের ফাইনালের রেকর্ড স্পর্শ করতে পারেননি নাদাল-মেদভেদভ।
পঞ্চম সেটে ম্যাচ পয়েন্ট পাওয়ার জন্য একটু জোরেই শটটা মেরেছিলেন রাফায়েল নাদাল। সেটা পড়িমরি করে ফেরালেন মেদভেদভ। কিন্তু শটটা গিয়ে পড়ল বেস-লাইনের সামান্য বাইরে। সে দিকে এক পলক তাকিয়েই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেন রাফা। তারপর চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়লেন কোর্টের মাঝখানে। হলুদ-কালো র্যাকেটটা পড়ে থাকল পাশে। পুরুষদের সিঙ্গলসে দ্বিতীয় সর্বাধিক গ্র্যান্ডস্ল্যামের মালিক এভাবেই শুয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ। খানিক বাদে আনন্দের ঘোর কাটিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী মেদভেদভকে এগিয়ে গিয়ে আলিঙ্গন করলেন। এর পর হেয়ার ব্যান্ডটা খুলে আবেগে নিজের মুখটা ঢেকে রাখলেন কিছুক্ষণ। বোধ হয় দু’ফোঁটা আনন্দাশ্রুও গড়াল। শূন্যে তাকিয়ে ধন্যবাদ জানালেন ঈশ্বরকে। মুখে ঝলমলে হাসি। এই হাসি সর্বসেরা হওয়ার দোরগোড়ায় পৌঁছানোর। এই হাসি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ফেডেরারের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলার হাসি।
চলতি বছরে তিনটি গ্র্যান্ডস্ল্যামের ফাইনালে খেলে দুটিতেই চ্যাম্পিয়ন হলেন নাদাল। ফরাসি ওপেনে নিজের চিরাচরিত আধিপত্য বজায় রাখার পর ফ্লাশিং মিডোয় চতুর্থবারের জন্য জিতলেন ইউএস ওপেন। সিঙ্গলসে সব মিলিয়ে উনিশটা গ্র্যান্ডস্ল্যাম খেতাব হয়ে গেল তাঁর। ফেডেরারের থেকে মাত্র এক কদম দূরে দাঁড়িয়ে তিনি। অচিরেই হয়তো সুইস কিংবদন্তিকেও টপকে যাবেন নাদাল। বিশেষ করে বয়সের অঙ্ক এখন তাঁরই পক্ষে। ফেডেরারের বয়স যেখানে ৩৮, সেখানে নাদালের এখন ৩৩ বছর চলছে। হয়তো আগামী বছরেই ‘ফেড-এক্স’কে পেছনে ফেলে সর্বাধিক গ্র্যান্ডস্ল্যামের মালিক হয়ে যাবেন রাফায়েল নাদাল পেরেরা।