বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
শনিবার প্র্যাকটিস করেনি বলে খেতাব নির্ধারক ম্যাচে আলেজান্দ্রো আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন এমন নয়। আই লিগের শেষ পর্বে তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলার জন্য কাশ্মীর থেকে কেরল ঘুরে বেড়াতে হবে। তাই অদূর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই শনিবার প্র্যাকটিস করেনি ইস্ট বেঙ্গল। তবে চার্চিল ম্যাচের প্রস্তুতি শুক্রবার বিকেল থেকেই শুরু করে দিয়েছেন স্প্যানিশ কোচ। বৃহস্পতিবার লাজংকে পাঁচ গোল দেওয়ার পর খেলোয়াড়দের বাড়ি বা ফ্ল্যাটে পাঠিয়ে দেন আলেজান্দ্রো। শুক্রবার রি-হ্যাবের পর খেলোয়াড়দের নিয়ে ফের হোটেলে ওঠেন স্প্যানিশ কোচ। মাত্র ৭০ ঘণ্টার মধ্যে এই টাফ ম্যাচটি খেলতে নামছে ইস্ট বেঙ্গল। তাই শুক্রবার বিকেল থেকেই হোটেলে স্পেশাল ম্যাসাজ নেন কোর গ্রুপের খেলোয়াড়রা। ল্যাকটিক অ্যাসিড ঝরাতে সকলকেই সুবিধা মতো সুইমিং পুলে সময় কাটানোর নির্দেশ দেন। এরপর প্রথম পর্বের চার্চিল ব্রাদার্স ও বর্তমানের চার্চিল ব্রাদার্সের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ফুটবলারদের জানান অ্যানালিস্ট মারিও। শনিবার সকালে হাল্কা স্ট্রেচিংয়ের পর নিজেদের খেলার ভিডিও বিশ্লেষণ করে দোভাষী মারফত রক্ষিত ডাগর, টনি ডোভালেদের প্রয়োজনীয় বার্তা দেন স্প্যানিশ কোচ। বেলা বারটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত আলেজান্দ্রো খেলোয়াড়দের নিয়ে যান ইকো পার্কে। টেনশন কাটাতে সেখানে দেড় ঘণ্টা ফান গেমে মেতে ওঠেন ফুটবলাররা।
প্র্যাকটিস না করার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘এখন যে কোনও ম্যাচ প্রস্তুতি দুই রকমের হয়। ‘অন দ্য ফিল্ড প্রিপারেশনে’জোর না দিয়ে ‘অফ দ্য ফিল্ড প্রিপারেশনে’ জোর দিয়েছি। তাঁর কথায় যুক্তি আছে। কারণ অল্প ব্যবধানে দুটি ম্যাচ খেলছে ইস্ট বেঙ্গল। আর ইস্ট বেঙ্গল দল যে ফর্মে আছে তাতে কম্বিনেশন প্র্যাকটিসের খুব বেশি প্রয়োজন আপাতত নেই।
শনিবার চার্চিল শিবিরে কথা বলে যা জানা গেল তাতে ইস্ট বেঙ্গল হয়তো রবিবার আই লিগ জয়ের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। ইস্ট বেঙ্গলের মতো হেভিওয়েট দলের বিরুদ্ধে চার্চিলের কোর গ্রুপের চার খেলোয়াড় নেই। ঘরের মাঠে ইস্ট বেঙ্গল একেবারে হাতের মুঠোয় পেয়ে গিয়েছে চার্চিলকে। এই চারজনের মধ্যে দু’ জন ডিফেন্ডার আর দু’জন মিডিও। শনিবার বিদেশি স্টপার হুসেন এলডোর ও লেফট ব্যাক মোহনরাজকে পাচ্ছে না চার্চিল। অধিনায়ক সিসে গত নভেম্বরে যুবভারতীতে পুঁতে দিয়ে গিয়েছিলেন ইস্ট বেঙ্গলকে। সিসে, প্লাজা- উল্ফের ত্রিভুজ আক্রমণ থেকে চার্চিল প্রচুর গোল পেয়েছে। সিসে না থাকায় চার্চিলের ‘ত্রিভুজ’ রবিবারের যুবভারতীতে নেই। তাই জনি অ্যাকোস্টা আর বোরহা গোমেজের কাজটি আরও সহজ হয়ে গিয়েছে। চার্চিল মাঝমাঠে রিকার্ডো কোস্তাও নেই। এমনকী চার্চিলের বিদেশি মিডিও খালিদ আউচোও পুরো ফিট নন। শনিবার অনুশীলনের শেষ দিকে আউচো সাইড লাইনে চলে যান।
তবে এই প্রতিকূলতার মধ্যে গোটা দলকে একা অনুপ্রাণিত করছেন উইলিস প্লাজা। হারার আগে হারতে চাইছেন না প্লাজা। তিনি এদিনও যুবভারতীতে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘সিসে কিংবা রিচার্ড কোস্তার ক্রসগুলি উড়ে আসবে না। তবে নিকোলাস ফার্নান্ডেজ তো আছেন। মনে রাখবেন অ্যান্টনি উল্ফও থাকবে আমাদের পাশে। ওঁরা যদি ভাবে চার নিয়মিত খেলোয়াড় না থাকায় আমরা হীনবল, তবে ভুল করবে। এই দল নিয়েও ইস্ট বেঙ্গলকে প্রত্যাঘাত করা যায়। আমার মতে বোরহা কিংবা জনি আই লিগের সেরা ডিফেন্ডার নন। সেরা ডিফেন্ডার লাভডে। ওকে ছাড়া কোনও ডিফেন্ডারকে আমি ভয় পাই না।’
চার্চিলের চার ফুটবলারকে না থাকা নিয়ে ইস্ট বেঙ্গলের কোচ অনেকটা নায়িমের ঢঙে বললেন, ‘কে আছে কে নেই, তা নিয়ে ভাবছি না। চার্চিলের ১১ জন থাকবে মাঠে। প্লাজাকে নিয়ে কোনও স্পেশাল পরিকল্পনা নেই। আমার একটাই পরিকল্পনা গোয়ার দলকে হারানো।’ এই কথা বলার সময়ে আলেজান্দ্রোর চোখে-মুখে চুঁইয়ে পড়ছিল আত্মবিশ্বাস। কোচের এই আত্মবিশ্বাসই হয়তো আজ তিন পয়েন্ট পাওয়ার পাসওয়ার্ড। চার্চিলকে হাতের মুঠোয় পেয়েও যদি ইস্ট বেঙ্গল আজ তিন পয়েন্ট না পায় তবে এই দলের অধিকার নেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। গত দুটি ম্যাচে খেলা ইস্ট বেঙ্গল প্রথম একাদশে তেমন বদল হবে না। এনরিকে পরে নামলে কোলাডো খেলবেন প্রথম একাদশে।