বিমা, মেয়াদি সঞ্চয় বা শেয়ার থেকে অর্থকড়ি আয় বাড়বে। ঝামেলা থেকে দূরে থাকুন। ধর্মে মতি। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার মেদিনীপুর সদর ব্লকের বেনাডিহির বাসিন্দা রীনা খাতুন বিবি(১৬) প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সন্তান প্রসবের পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রবিবার রাতে আইসিইউতে রোগীর মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন রোগীর পরিজনরা। বিপদ আঁচ করতে পেরে হাসপাতাল চত্বরে মোতায়েন করা হয় বিপুল পুলিস বাহিনী। নামানো হয় র্যাফ। আইসিইউ চত্বর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। যদিও রোগীর পরিজনরা আইসিইউ থেকে সোজা মাতৃ মা বিভাগের দিকে চলে আসে। হাসপাতাল সংস্কারের জন্য সেখানে বাঁশ রাখা ছিল। সেই বাঁশ হাতে মাতৃ-মা বিভাগে কার্যত তাণ্ডব চালাতে থাকে ৪০-৫০ জন। হাসপাতালের একাধিক কাচের দরজা, চেয়ার, টেবিল, পাখা সবকিছু ভেঙে চুরমার করে দেয়। চিকিত্সক ও নার্সরা ভয়ে বাথরুমে আশ্রয় নেন। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিস। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে একজন এসআই সহ দুই পুলিসকর্মী জখম হন। ঘটনায় রাতেই সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। সোমবার তাদের আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। হাসপাতালের তরফে এনিয়ে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত রাউথ বলেন, মাত্র ১৬ বছরে গর্ভবতী হয়ে পড়েছিল নাবালিকা। নাবালিকা প্রি-এক্লাম্পসিয়া ছিল। প্রসবের আগে থেকেই প্রবল খিঁচুনি শুরু হয়। আমরা অনেক চেষ্টায় সুস্থ সন্তান ডেলিভারি করি। কিন্তু প্রসবের পরেও প্রসূতির রক্তক্ষরণ হতে থাকে। অনেক চেষ্টা করে সন্তানকে বাঁচানো গেলেও নাবালিকাকে বাঁচানো যায়নি। এক্ষেত্রে চিকিত্সার গাফিলতির প্রশ্নই আসে না।
ভূপতিনগর থানার এক্তারপুরে নার্সিংহোমে সোমবার সকালে প্রসবের পর প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের বাড়ির লোকজন নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে ভূপতিনগর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে যায়। নামানো হয় র্যাফ। আপাতত নার্সিংহোম বন্ধ। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। জানা গিয়েছে, মৃত প্রসূতির নাম গঙ্গা গায়েন(২০)। বাড়ি ভূপতিনগর থানার বাসুদেববেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের খাটমারি গ্রামে। রবিবার প্রসব বেদনা নিয়ে গঙ্গাকে মুগবেড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১২টা নাগাদ শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় তাঁকে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। যদিও অ্যাম্বুলেন্স চালক মুগবেড়িয়া হাসপাতাল থেকে লাগোয়া একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক রোগীর অবস্থা দেখে ভর্তি নিতে চাননি। এরপর তাঁকে এক্তারপুরে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোর ৫টা নাগাদ ডেলিভারি হয়। ২কেজি ৮০০গ্রাম ওজনের একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন গঙ্গা। কিন্তু, রক্তক্ষরণের জেরে শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতি হয়। তমলুকে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান।
প্রসূতির মৃত্যুর খবর মৃতের আত্মীরা নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালান। তাতে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তমলুক হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত হয়। সদ্যোজাত শিশুকে তমলুক মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতার স্বামী পিণ্টু গায়েন বলেন, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ঝুঁকি নিয়ে ডেলিভারি করাতে গিয়ে বিপত্তি ঘটল। সরাসরি তমলুকে নিয়ে গেলে হয়তো মৃত্যু এড়ানো যেত। আমরা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের উপযুক্ত শাস্তি চাইছি।