বিমা, মেয়াদি সঞ্চয় বা শেয়ার থেকে অর্থকড়ি আয় বাড়বে। ঝামেলা থেকে দূরে থাকুন। ধর্মে মতি। ... বিশদ
দুজনেরই নাম এক, পদবিও এক। এক জগন্নাথকে ভোট দিতে গিয়ে অন্য জগন্নাথকে ভোট দিয়ে ফেলবেন না তো ভোটাররা? এই নিয়েই এখন চর্চা শুরু হয়েছে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে। নির্দল প্রার্থী জগন্নাথের ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়টিকে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলেই অভিযোগ করছেন বিজেপির জগন্নাথ সরকার।
ঘটনাচক্রে দুই জগন্নাথ সরকারই শান্তিপুরের বাসিন্দা। বিদায়ী সাংসদ বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার শান্তিপুর ব্লকের আরবান্দি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। আর নির্দল হিসেবে দাঁড়ানো জগন্নাথ সরকার বাগআঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঢাকাপাড়ার বাসিন্দা। ৫৮ বছর বয়সি নির্দল প্রার্থী জগন্নাথ সরকার এলাকারই একটি সব্জির দোকানে কাজ করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রচার তো দূরের কথা, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর থেকে তাঁকে আর এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। এমনকী যে সব্জির দোকানে তিনি কাজ করেন, সেখানেও তিনি যাচ্ছেন না। বাড়িতে ছেলে জয়দেব ও তাঁর পরিবার রয়েছে। জগন্নাথ কোথায় রয়েছেন, সেটাও বলতে পারছেন না তাঁরা। এলাকায়ও নির্দল জগন্নাথবাবু সেভাবে পরিচিত নন। তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাজনীতির সঙ্গে কখনওই যুক্ত ছিলাম না। এবার মনে হল ভোটে দাঁড়ানো উচিত। তবে এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থী তথা দলের রাজ্য সহ সভাপতি জগন্নাথ সরকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও প্রচার নিয়ে রীতিমতো ব্যস্ত। নির্দল প্রার্থী জগন্নাথ সরকারকে তিনি সেভাবে আমল না দিলেও এর পেছনে তৃণমূলের কারসাজি রয়েছে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, চক্রান্ত করেই আমার নামের সঙ্গে মিল রয়েছে এমন একজনকে নির্দল প্রার্থী করেছে, যাতে ভোটারদের বিভ্রান্ত করা যায়। তৃণমূল ভাবছে এতে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাবে। কিন্তু মানুষ পদ্ম চিহ্ন দেখেই ভোট দেবেন। বিজেপির দাবি, নির্দল প্রার্থী জগন্নাথবাবুর ছেলে তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত। তাই জগন্নাথকে নির্দল হয়ে দাঁড় করানো তৃণমূলেরই সুচতুর পরিকল্পনা। যদিও বাগআঁচড়া অঞ্চল তৃণমূলের আহ্বায়ক সাধন ঘোষ পাল্টা বলেন, নির্দল প্রার্থী জগন্নাথের ছেলে জয়দেব কখনওই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত নয়। আমাদের হয়ে সে কখনও প্রচারেও যায়নি। তৃণমূলের এত দূরাবস্থা হয়নি যে এই ধরনের পরিকল্পনা করতে হবে।
বিজেপি প্রার্থীকে খোঁচা দিয়ে রানাঘাট কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী বলেন, কে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন জানি না। যে কেউই ভোটে দাঁড়াতে পারেন। আসলে বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছেন। নিজে ভোট পাবেন না বুঝতে পেরেই এখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। যদিও রানাঘাট কেন্দ্রে জগন্নাথ বনাম জগন্নাথের নির্বাচনী লড়াই নিয়ে বেশ চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক ও নাগরিক মহলে। অনেকেই বলছেন, নাম বিভ্রাটের কারণে ভোটারদের অনেকেই নির্দল জগন্নাথ সরকারকে ভোট দিয়ে ফেলতে পারেন। তাই অন্তত এক শতাংশ হলেও যে নির্দল জগন্নাথ বিজেপির জগন্নাথের ভোট কাটতে পারেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।