সংবাদদাতা, করিমপুর: ভোট যত এগিয়ে আসছে প্রচারের ঝাঁঝ তত বাড়াচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। মুর্শিদাবাদ লোকসভা আসনে পুরনো জায়গা ফিরে পেতে উঠেপড়ে লেগেছে বাম-কংগ্রেস জোট। তাদের দাবি, এবারের ভোটে জোট প্রার্থীর জেতার মতো পরিবেশ তৈরি হয়েছে এবং জয়ের ব্যাপারে তারা আশাবাদী। এই কেন্দ্রের বাকি ছ’টি বিধানসভার পাশাপাশি করিমপুর বিধানসভা এলাকার সিপিএম, কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরাও জোর প্রচার শুরু করেছেন। কখনও এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমকে সঙ্গে নিয়ে রোড শো আবার কখনও রাস্তায় রাস্তায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলা। সিপিএমের দাবি, কর্মিসভা ও রোড শো বা বাড়ি বাড়ি প্রচারে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের প্রার্থীকে নিয়ে এলাকার মানুষের উচ্ছ্বাস চোখে পড়ার মতো। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ আসনে তৃণমূল প্রার্থী জিতলেও তার আগে এই আসনে ১৯৮০ সাল থেকে টানা আট বার বামেরা জিতেছে। আর দু’বার ২০০৪ ও ২০০৯ সালে কংগ্রেস জিতে এসেছে। এ বারেও জোট প্রার্থীর জেতার মতো পরিবেশ তৈরি হয়েছে এবং জয়ের ব্যাপারে একশো শতাংশ আশাবাদী। সিপিএমের করিমপুর ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সন্দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল দল মুখে যতই বিজেপির বিরোধিতা করুক না কেন, তলে তলে বিজেপির সবথকে বড় জোট সঙ্গী তারা। এটা রাজ্যের মানুষ বুঝে গিয়েছেন। মানুষ তাই বিজেপি তৃণমূলকে ছেড়ে আমাদের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। স্থানীয় সিপিএম নেতারা জানান, গত লোকসভা নির্বাচনে আলাদা লড়ে কংগ্রেসের ভোট ছিল ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার এবং সিপিএম পেয়েছিল ১ লক্ষ ৮১ হাজার ভোট। এবার দুই দলের ভোট একত্রিত হবে এবং বামেদের চলে যাওয়া বহু ভোট ফিরে আসবে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও করিমপুর ২ ব্লক এলাকায় সিপিএম, কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং ভালো ফল করেছে। তখন বেশ কিছু আসনে সিপিএম প্রায় ২৫ থেকে ২৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এ ছাড়াও তাঁদের জোট সঙ্গী কংগ্রেস বেশ কয়েকটি আসনে জয়লাভ করে।
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে ভোট দিয়ে যে ভুল হয়েছে, তা মানুষ বুঝতে পেরেছেন। যে কারণে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে জোটপ্রার্থীকে এগিয়ে রাখছেন তাঁরা। করিমপুর ২ এরিয়া কমিটির সম্পাদক লিয়াকত হোসেন বলেন, গ্রামে গ্রামে প্রচারে গিয়ে দেখা যাচ্ছে সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের কত ক্ষোভ জন্মেছে। রাজ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পড়াশোনা করেও ছেলেমেয়েদের চাকরি বা কর্মসংস্থান নেই। শিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত সবাইকেই কাজের জন্য পরিবার ছেড়ে দূর দেশে যেতে হচ্ছে। তৃণমূল যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন অনেক দলের জোট ছিল। এখন তৃণমূলের সঙ্গে কোনও দলই আর জোটে নেই। উল্টে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেস সহ বেশ কয়েকটি দল জোট করেছে। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা হয়ে গিয়েছেন সেটা উনি বুঝতে পারছেন।