পারিবারিক মঙ্গল অনুষ্ঠান ও পুজোপাঠে আনন্দলাভ। বন্ধু বিবাদের যোগ আছে। বিদ্যাচর্চায় উন্নতি। ... বিশদ
শনিবার ভোরে বড়জোড়ার পখন্না অঞ্চলের গোপালপুর গ্রামে তৃণমূলের পার্টি অফিসে বিজেপি-র পতাকা লাগানো হয়। ব্লক তৃণমূল সভাপতি অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি-র পতাকা লাগানোর খবর পেয়ে আমরা গ্রামে যাই। পুলিসও গ্রামে পৌঁছয়। পরে বিজেপি-র পতাকা খুলে ফের তৃণমূলের ঝান্ডা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
বিজেপি-র বিষ্ণুপুর সাংঠনিক জেলার সভাপতি স্বপন ঘোষ বলেন, পখন্না অঞ্চলের বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের অফিসে পতাকা লাগানোর ব্যাপারে আমাকে ফোন করে। আমি ওই ধরনের কাজ করতে নিষেধ করি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
অন্যদিকে, শুক্রবার রাতে তালডাংরা থানার পাঁচমুড়া অঞ্চলের কুলবনী গ্রামে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা তাণ্ডব চালায় বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছে। তাছাড়া ওইদিন রাত ৯টা নাগাদ প্রায় ৩০জন বিজেপি কর্মী সমর্থক জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলে কুলবনী গ্রামে ঢোকে। ওই গ্রামে বাঁকুড়া জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ চন্দনা অধিকারীর বাড়ি। চন্দনাদেবীর অভিযোগ, ওই কর্মী সমর্থকরা প্রথমে কাটারি, শাবল দিয়ে তাঁর বাড়ির দরজা ভেঙে ফেলে। তারপর তাঁর বাড়িতে ব্যপক তাণ্ডব চালায়। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি তাঁরা ভেঙে দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। ঘটনার জেরে শনিবার সকালে তালডাংরা থানার পুলিস গ্রামে টহল দেয়। খবর পেয়ে শনিবার সকালে চন্দনা অধিকারীর বাড়িতে যান সেখানকার তৃণমূলের ব্লক নেতারা।
চন্দনাদেবী বলেন, আমরা রাতে খাবার খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেইসময় জয় শ্রীরাম বলে বিজেপির প্রায় ৩০জন কর্মী সমর্থক আমার বাড়িতে হামলা চালায়। রাতের খাবার ফেলে দেয়। আমার মেয়ের গলায় একটা সোনার হার ছিল। সেটিও ছিনতাই করে। আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। পুরো বিষয়টি পুলিসকে জানিয়েছে।
তবে শুধুমাত্র জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষয়ের বাড়িতে হামলা চালানোই নয়, পাশাপাশি তালডাংরার পাঁচমুড়ার পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের কাছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের অফিসও বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের তালডাংরা ব্লকের সভাপতি সুদিন ভুঁই বলেন, শুক্রবার রাতে বিজেপি বর্বরোচিত আক্রমণ করেছে। জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষের বাড়িতে হামলা চালানোর পাশাপাশি আমাদের দলের শ্রমিক সংগঠনের অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে।
যদিও তালডাংরা মণ্ডলের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব বারিক বলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে আমাদের বিজেপির কোনও কর্মী সমর্থক জড়িত নয়। পুরো ঘটনাটিই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই ঘটেছে।
এদিকে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আরামবাগ মহকুমারও বিভিন্ন জায়গায় ভোট পরবর্তী হিংসা লক্ষ্য করা গিয়েছে। শনিবার সকালে আরামবাগ থানা এলাকার সিয়ারা গ্রামে রাম সাঁতরা নামে এক তৃণমূল কর্মীকে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। রামবাবু বলেন, এদিন সকালে একটি দোকানে চা খাচ্ছিলাম। তখন কিছু দুষ্কৃতী বিজেপির নাম করে আমাকে চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। রামবাবু আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়াও আরামবাগের মনসাতলায় তৃণমূলের কার্যালয়েও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে, শুক্রবার গভীর রাতে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গোঘাটের কামারপুকুর পঞ্চায়েতের হরিসভা গ্রামে বোমাবাজি করতে করতে ঢোকে বলে অভিযোগ। সেখানে পঞ্চায়েত সদস্যা রেখা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। এছাড়াও গোঘাটের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এবিষয়ে তৃণমূলের আরামবাগ ব্লক সভাপতি স্বপন নন্দী বলেন, সিপিএমের লোকজন বিজেপিতে ঢুকেই এলাকায় অশান্তির পরিবেশ তৈরি করেছে। আমাদের কর্মীদের মারধর করছে। পার্টি অফিস ভাঙচুর করছে, দখল করছে। আমরা প্রশাসনকে সমস্ত ঘটনা জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নেবে।
এবিষয়ে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, চতুর্দিকে যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে তার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে তৃণমূলের লোকজন বহু দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাই গ্রামের মানুষজন প্রতিবাদ করছে। তৃণমূল নিজেদের কার্যালয় থেকে পতাকা নামিয়ে আমাদের পতাকা টাঙিয়ে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে।