সংবাদদাতা, ফালাকাটা: বস্তিতে ঘুরে কলা কিনে হাটে বিক্রি করেন বাবা। এভাবে যতটুকু রোজগার হয়, তা নিয়ে কোনওরকমে সংসার চলে। অভাবের সংসারে বড় হয়ে ওঠা অপূর্ব দাস মাধ্যমিকে ভেঙে দিয়েছে স্কুলের গত ১৭ বছরের রেকর্ড। ৬৩৪ নম্বর পেয়ে বীরসা বিদ্যাভবন হাইস্কুলের বিগত দিনের রেকর্ড ভেঙেছে সে। আর্থিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও তার স্বপ্ন চিকিত্সক হওয়ার। গ্রামের মানুষের পাশে থাকার প্রবল ইচ্ছে। তবে আর্থিক অনটন নিয়ে কীভাবে ছেলের উচ্চশিক্ষা চালাবেন, তা নিয়ে চিন্তিত পরিবার। ফালাকাটার শালকুমার পঞ্চায়েতে উমাচরণপুরে বাড়ি এই কৃতীর। বাংলায় ৮৪, ইংরেজিতে ৭৭, অঙ্কে ৯০, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৫, জীবনবিজ্ঞানে ৯৭, ইতিহাসে ৯১ এবং ভূগোলে ১০০ পেয়েছে সে। একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় অপূর্ব। খেলাধুলার প্রতি তেমন আগ্রহ না থাকলেও অবসর সময় খবরের কাগজ ও গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে। অপূর্ব বলে, আমি কখনও ঘড়ি ধরে পড়াশোনা করিনি। যখন পড়তে ইচ্ছে করত, তখন পড়েছি। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা পড়েছি। আমার ভালো রেজাল্টের জন্য দুই গৃহশিক্ষক, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদান রয়েছে। বাবামায়ের গাইডেন্স ছাড়া এই ফল হতো না।
পরিবারের আর্থিক অনটন সামাল দিতে অপূর্বর বাবা বাবুলাল দাস বিভিন্ন বস্তিতে গিয়ে কলা কেনেন। সেই কলা হাটে হাটে বিক্রি করে সংসারের খরচ চালান। তিনি বলেন, ছেলে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়। সেক্ষেত্রে পড়াশোনা, সংসারের খরচ কীভাবে চালাব, বুঝতে পারছি না। আর্থিক অনটনের মধ্য দিয়ে ছেলের স্বপ্ন কতটা পূরণ করতে পারব, জানি না। ছেলের পড়াশোনার জন্য সরকারি সহযোগিতা পেলে ভালো হতো। নিজস্ব চিত্র