বিমা, মেয়াদি সঞ্চয় বা শেয়ার থেকে অর্থকড়ি আয় বাড়বে। ঝামেলা থেকে দূরে থাকুন। ধর্মে মতি। ... বিশদ
কেউ উঠছে না কেন? কৌতূহলের জবাব দিলেন পাশে বসা এক বয়স্ক ব্যক্তি— ‘কংগ্রেসের গ্যারান্টি।! গোটা কর্ণাটকেই সরকারি বাসে মেয়েদের টিকিট লাগে না। প্রতিদিন যাতায়াতে ২০ টাকা বাঁচলে মাসে প্রায় হাজার টাকা। কম নাকি!’ নাহ্, কম তো নয়ই। মহিলাদের জন্য ফ্রি বাস শুধু নয়, মাসে দু’হাজার টাকা, সবাইকে ১০ কেজি চাল, ২০০ ইউনিট ফ্রি বিদ্যুতের মতো পাঁচ গ্যারান্টি বিধানসভার পর লোকসভা ভোটেও কংগ্রেসের বড় ভরসা।
সেই ভরসায় জীবনে প্রথম নির্বাচনী লড়াইতে নেমেছেন আনন্দেয় গদ্দাদেবর্মথেরও। হাভেরির কংগ্রেস প্রার্থী। বিপরীতে বিজেপির বাসবরাজ বোম্মাইয়ের মতো হেভিওয়েট। কিন্তু রাজ্য সরকারের পাঁচ গ্যারান্টিতেই তাঁকে বধ করা যাবে বলে আশা হাভেরি কংগ্রেসের সহ সভাপতি সঞ্জীব নীরালাগির। তাঁর কথায়, ‘মোদির কালো টাকা ফেরানো, ১৫ লাখ টাকা দেওয়া, বছরে দু’কোটি চাকরির গ্যারান্টি ফেল করেছে। আমরা কিন্তু কথা রেখেছি। তাই এ রাজ্যের মানুষ কংগ্রেসের গ্যারান্টিকে ভরসা করে।’ হাত শিবিরের দাবি, হাভেরি ও গদাগ জেলার ৯৯ শতাংশের বেশি ভোটার তাদের গ্যারান্টি থেকে উপকৃত।
উল্টো মতও আছে। অটোচালক বালুর মতে, ‘বোম্মাই আমাদের বিধায়ক ছিলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রীও হন। তখন অনেক কাজ করেছেন। এখানকার সমস্যাগুলি সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল। তিনি জিতলে আমাদেরই লাভ।’ অরুণ পূজারের মতো একাধিক নেতার কথায়, রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলেও হাভেরি চারবার টানা আমরাই জিতেছি। এবারে তো কংগ্রেস প্রথমে মন্ত্রী এইচ কে পাটিলকে প্রার্থী করতে চেয়েছিল। পরে প্রাক্তন বিধায়ক জিএস গদ্দাদেবর্মথের ছেলেকে প্রার্থী করেছে। রাজ্য রাজনীতিতে অভিজ্ঞ বোম্মাই এই প্রথম লোকসভার ভোটে লড়লেও ঠিক ম্যাচ বের করে নেবেন।
হাই ভোল্টেজ হাভেরি কেন্দ্রে দুই দলই যে জাতপাতের অঙ্কমাথায় রেখেছে। হাভেরিতে লিঙ্গায়েত ভোটার প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ। দু’দলের প্রার্থীরাও এই সম্প্রদায়ের। তবে প্রভাবে আনন্দেয় অনেক পিছিয়ে। বোম্মাই অবশ্য তাতেও স্বস্তিতে নেই। ক্ষমতায় থেকেও সেভাবে কোনও কাজ না করার জন্য বিদায়ী বিজেপি সাংসদ উদাসীর উপর বেজায় খাপ্পা আম জনতা। গত বিধানসভা ভোটে এখানকার সাতটি বিধানসভা আসনই (হিরেকেরুর, রানিবেন্নুর, হাভেরি, বাডগি, হাঙ্গল, গদাগ এবং রন) গিয়েছে কংগ্রেসের দখলে। একমাত্র শিরাহাট্টিতে পদ্ম ফুটেছিল। ফলে মোদির গ্যারান্টির পাশাপাশি অতীতে জলসম্পদ মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন উন্নয়নমূলক কাজের ফিরিস্তিও দিতে বোম্মাইকে। তাঁর প্রতিশ্রুতি, জিতলে মুম্বই-চেন্নাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডরের অংশ হাভেরিকে শিল্পতালুক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
হাভেরি বাসস্ট্যান্ডে কাটা ফল বিক্রি করেন লিয়াকত। কথায় কথায় তিনি জানালেন, ‘ফি বছর গরম এলেই পানীয় জলের সমস্যা হয়। গদাগ ও হাভেরির মধ্যে রেলের পরিকাঠামো নির্মাণ করার কথা ছিল। কোথায় কী! এখন বিজেপি বলছে ভোটে জিতলে করবে। এতদিন করেনি কেন?’ জনগণের এই ক্ষোভকেই ইভিএম অব্দি নিয়ে যেতে চান কংগ্রেস প্রার্থী আনন্দেয়।