বিমা, মেয়াদি সঞ্চয় বা শেয়ার থেকে অর্থকড়ি আয় বাড়বে। ঝামেলা থেকে দূরে থাকুন। ধর্মে মতি। ... বিশদ
হাসোডি গ্রামের রোড শো খুব বড় নয়। পাটভাঙা সাদা পাঞ্জাবি-পাজামাতে হাজির তিনি। কপালে লাল আশীর্বাদী টিপ। নীল-কালো ওয়েস্ট কোটে বুকপকেটের কাছে আটকানো নিজের ও মোদির ছবি স্টিকার। সদ্য কামানো মসৃণ গাল। কাঁচাপাকা চুলে লেগে আছে দু’চারটে ফুলের পাপড়ি। ছোট ম্যাটাডরে উঠে হাত নাড়ছেন আর থেকেই হ্যালোজেনের আলোয় ঝকমকিয়ে উঠছে বাঁ হাতে ইষৎ ঝোলা সোনালি চেনের ঘড়ি ও অনামিকার আংটি। চারপাশে উড়ছে গেরুয়া পতাকা। ভিড় করা জনতার গলায় হিন্দুত্ব, মোদির জয়ধ্বনি। জ্বলে উঠল ঈশ্বরাপ্পার চোখদুটো। দেখলে কে বলবে, মাসখানেক পরে বয়স ৭৬ হবে!
দু’দণ্ড দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ নেই। উপায় বাতলে দিলেন ঈশ্বরাপ্পার ব্যক্তিগত সহকারী মোহন। কথা হবে রাস্তায়। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজারে যেতে যেতে। ছুটল গাড়ি। সামনের সিট সামান্য এলিয়ে কথা শুরু করলেন ঈশ্বরাপ্পা-দ্য রেবেল।
প্র: ভোটে আর লড়বেন না বলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত প্রার্থী তো হলেন?
উ: এটা কর্ণাটক বিজেপির শুদ্ধিকরণের লড়াই। জাতীয় স্তরে ও কর্ণাটকে বিজেপির মধ্যে কী চলছে, তা নিয়ে যাতে আলোচনা হয়, সেই জন্যই নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কথা কিন্তু হচ্ছে।
প্র: ভোটের বাকি তিনদিন। আম জনতার মন কী বুঝছেন?
উ: মানুষ যেভাবে সমর্থন করছে, ভাবনার অতীত। বিজেপি জেডিএসের ৭০ শতাংশ কর্মী-সমর্থকরা আমার পাশে। ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে সেটিং করে প্রার্থী দেওয়ায় কংগ্রেস সমর্থকরা ক্ষুব্ধ। তারাও আমাকে সমর্থন করছেন।
প্র: দল তো সাসপেন্ড করেছে!
উ: এটা সাময়িক সমস্যা। মিটে যাবে।
প্র: কিন্তু নির্দল হয়ে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধেই লড়ছেন?
উ: ইয়েদুরাপ্পার পরিবার রাজ্যের বহু নেতাকে সাইডলাইনে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কেন্দ্রে সোনিয়া-রাহুলের পরিবারতন্ত্র মুক্ত ভারত গড়তে লড়ছেন মোদি। এখানে কী চলছে? ইয়েদুরাপ্পা নিজে জাতীয় নির্বাচন কমিটির সদস্য। এক ছেলে রাঘবেন্দ্র সাংসদ। অপরজন, বিজয়েন্দ্র বিধায়ক হওয়ার পাশাপাশি রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে রয়েছেন। বাবা-ছেলের হাত থেকে বিজেপিকে বাঁচাতে লড়ছি।
প্র: দক্ষিণ ভারতে বিজেপি এবার কি আদৌ ভালো ফল করতে পারবে?
উ: কর্ণাটকে মোদির ভালো প্রভাব আছে। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পা ও তাঁর ছেলের উপর বহু মানুষ ক্ষুব্ধ। কী যে হবে, বলা কঠিন।
প্র: ৪০০ আসন জেতার কথা বলছেন মোদি। কতটা বাস্তবসম্মত দাবি?
উ: অসম্ভব তো নয়।
প্র: বিজেপির ফল খারাপ হলে তখনও কি তাদেরই সমর্থন?
উ: ওই যে, বিজেপি আমার মা হয়। মায়ের কাছেই ফিরব। জিতে মোদির পাশে দাঁড়াব।
কাটিচিন কাটে গ্রামের জনসভার মঞ্চের দিকে যাওয়ার আগে হেসে বললেন ঈশ্বরাপ্পা।
লড়াই সহজ নয়। তরুণ বয়সে ১৯৮৯ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা কে এইচ শ্রীনিবাসের হাত থেকে শিমোগা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। এখন প্রৌঢ়ত্ব পেরিয়েও কি পারবেন আরও একবার? রাত ১০টার সময় প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের ভিড়, উল্লাস, দেদার চেইন পটকা ফাটার আওয়াজে বোধহয় আশার ক্ষীণ আলো দেখছেন প্রাক্তন এই উপ মুখ্যমন্ত্রী।
ইতিহাসের পুনর্জন্ম দেখার অপেক্ষায় শিমোগাও।