বিমা, মেয়াদি সঞ্চয় বা শেয়ার থেকে অর্থকড়ি আয় বাড়বে। ঝামেলা থেকে দূরে থাকুন। ধর্মে মতি। ... বিশদ
এরপর স্বাভাবিক নিয়মে কী হওয়া উচিত ছিল? প্রশ্ন করলেন নেহরু পার্কের ঠিক উল্টোদিকে কংগ্রেস নির্বাচনী কার্যালয়ে বসে থাকা দলের সাধারণ সম্পাদক অলোক নায়েক। বললেন, ‘রাজা মহারাজা নবাবদের আত্মসম্মান থাকলে, তাঁরা তো এই অপমানের বদলা নিতে আবার শক্তি সঞ্চয় করে হারানো সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারে ঝাঁপাবেন! কিন্তু সিন্ধিয়া কী করলেন? নিজের সম্মানকে ধুলোয় মিশিয়ে, সেই নরেন্দ্র মোদির কাছে মাথা বিকিয়ে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে আজ গুনায় আবার প্রার্থী হয়েছেন। সামাজিক, পারিবারিক, রাজনৈতিক সম্মান কেড়ে নিয়েছেন যিনি, সিন্ধিয়াকে আজ জয়ী হওয়ার জন্য সর্বত্র তাঁর জয়গান গাইতে হচ্ছে। কারণ, তিনি বুঝে গিয়েছেন রাজপরিবারের গ্ল্যামার আর প্রভাব আর নেই। অথচ এখানে সিন্ধিয়া পদবির কেউ যে হেরে যেতে পারেন, ২০১৯-এর আগে কল্পনাও করা যায়নি। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া ছাড়া আর উপায় ছিল না ওঁর। আপাতত জিততে তাঁকে হবেই। নচেৎ সম্মানের সঙ্গে এবার সিন্ধিয়া পরিবারের অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে। আর তাই গুনায় জ্যোতিরাদিত্যর ভরসা তিনজন—মাধবরাও সিন্ধিয়া, বিজয়ারাজে সিন্ধিয়া এবং সর্বোপরি নরেন্দ্র মোদি। তাঁদের ছবি ও পোস্টার শহরজুড়ে। আর এটা দেখে গুনার মানুষ এখন নিশ্চিত যে, জ্যোতিরাদিত্য শুধু জনপ্রিয়তার মুকুট হারাননি, আত্মমর্যাদাও হারিয়েছেন।’
একটি হাই রোড। তিনটি চৌরাস্তা। একটি বাসস্ট্যান্ড। একটি স্টেশন। দু’টি কলেজ। চারটি হাই স্কুল। বাকিটা বাজার। ধনে, হালুয়া, লঙ্কা এবং চপ্পলের জন্য বিখ্যাত গুনা শহর বলতে এটুকুই। গোয়ালিয়র থেকে চার পাঁচ ঘণ্টার রাস্তা। একদিকে শিবপুরী, অন্যদিকে রাজগড়। এই গুনায় সিন্ধিয়া জিতলে তা হবে একমাত্র মোদি ফ্যাক্টরের জন্যই।
মহারাজ থেকে সেপাইতে পরিণত হওয়া সিন্ধিয়ার জন্য অবশ্য সবথেকে বেশি সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে বিজেপিকেই। নেহরু পার্কে বিকেলে স্থানীয় একটি কেবল চ্যানেলের বিতর্কসভায় কংগ্রেস সদস্য বিজেপির বক্তাকে বললেন, ‘মোদিজি নাকি পরিবারবাদকে ধ্বংস করে দেবেন? আম আদমিকে ক্ষমতা দেবেন? তাহলে তোমরা কে পি সিং যাদবকে প্রার্থী করলে না কেন?’ উত্তর দেবেন কী, বিজেপি সহ সভাপতি অমিত সিং প্রবল বিব্রত। কারণ, প্রশ্নটা খুব যুক্তিসঙ্গত। সিন্ধিয়াকে পরাস্ত করা কে পি সিং যাদবকে গুনায় সারাক্ষণ পাওয়া যায়। অথচ অন্তর্ঘাতের আশঙ্কায় তাঁকেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক দূরের নর্মদাপুরমে।
‘গতবার যে সিন্ধিয়াকে হারানো ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী, এবার তাঁকেই জেতানোর আহ্বান জানাচ্ছেন। মোদিজির গ্যারান্টিতে তো দ্বিচারিতার জল মেশানো! ভরসা করব কীভাবে?’ বললেন সুরিন্দর শর্মা। গুনা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক। কংগ্রেসের সমর্থক। সিন্ধিয়ার উপর রাগ হয়েছে নিশ্চয়ই? শর্মা ভ্রু কুঁচকে বললেন, ‘কেন? সিন্ধিয়াদের তরবারিতে আজ পর্যন্ত রক্তের দাগ দেখেছে কেউ? এই বংশে শুধুই গদ্দারির ইতিহাস! ১৮৫৭ সালেই তো আমরা স্বাধীন হয়ে যেতাম, সিন্ধিয়ারা বেইমানি না করলে...!’