আজ ব্যবসাদিক্ষেত্রে শুভ অগ্রগতি হতে পারে। কর্মস্থলে জটিলতা কমবে। অর্থাগম যোগ আছে। ... বিশদ
অথচ, হিন্দুত্ববাদের জন্মস্থানের শহরে উলটপুরাণ। হিন্দুত্ব কোনও ইস্যুই নয়! রামমন্দির নিয়ে জাঁকজমক নেই। পোস্টার এবং ব্যানারে দেখা যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদির মুখ এবং গ্যারান্টি। রাজেশ গ্রামযোশি বললেন, ‘দিতে হয় দিয়েছে। আমাদের এখানে তো মোদিজির দরকারই নেই। গাদকারিজি নিজের কব্জির জোরে প্রচার করেন। আর হ্যাঁ, গাদকারি না। নাগপুরে তাঁকে কী নামে আমরা ডাকি জানেন তো? রোডকারি!’ কেন? ‘দেখছেন না রাস্তাঘাট! রাস্তা, উড়ালপুল, এক্সপ্রেসওয়ের জাদুকর কে?’ নাগপুর কোতোয়ালি পুলিস স্টেশনে ক্যুরিয়ার ডেলিভারি করে বেরনো প্রশান্ত হাওলকর বললেন, ‘বিজেপি সরকারে একমাত্র গাদকারিই এমন, যাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত। কেন জানেন? কারণ, উনি কারও সঙ্গে অযথা ঝগড়া করেন না। একমাত্র নেতা, যাঁর সব দলের নেতানেত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক। আরে কাজ করে হাঁকডাক করুন। দেশবাসী আর বিরোধীদের ভয় দেখানো হাঁকডাকে দীর্ঘমেয়াদে লাভ হয় না! কেউ ওসব মনে রাখে না!’ আপনার ইঙ্গিত কাদের দিকে? প্রশান্ত হাসলেন। বললেন, ‘আপনি নাগপুর ঘুরে দেখুন, এখানে কোনও ইডি, সিবিআই, হিন্দুত্ব প্রচার করার দরকার হচ্ছে কি না? গাদকারি কাজ করেন। ভোট চান।’ তাহলে তো গাদকারিজির কোনও চিন্তাই নেই? বিজেপির নাগপুর শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ গাওয়াই ইতস্তত করলেন। বললেন, ‘হ্যাঁ অবশ্যই। তবে তাই বলে চুপ করে বসে থাকলে হবে নাকি? সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে হবে।’
সন্দীপ গাওয়াইয়ের এই সংশয় কেন? কারণ শহরের নাম নাগপুর। আজ পর্যন্ত এক খাতে বয়ে যায়নি। হিন্দুত্ববাদের ল্যাবরেটরি। সুতরাং বিজেপির দুর্গ? ভুল। বরং উল্টো। ১৯৫২ সাল থেকে এই সেদিন পর্যন্ত নাগপুর আসন কংগ্রেসের কাছেই ঘুরেফিরে এসেছে। কে বলল, গেরুয়ায় নিবেদিত নাগপুর? ওই যে শহরের কেন্দ্রস্থলে গর্বিত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে দীক্ষাভূমি। আশ্চর্য নয়? যেখানে হিন্দুত্বের এপিসেন্টার, সেই শহরকেই আম্বেদকর বেছে নিলেন বর্ণহিন্দুত্বকে শিক্ষা দিতে! বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হওয়ার জন্য! তাই ওই বিখ্যাত দীক্ষাভূমি। কংগ্রেস বাদ থাকে কেন? ১৯২০ সালে নাগপুর অধিবেশনেই তো গান্ধীজির একটি কর্মসূচি পাশ হয়েছিল—অসহযোগ আন্দোলন।
অতএব নাগপুরের মধ্যে সর্বধর্ম, সর্বদল এবং সর্ব-আদর্শ মিশে রয়েছে। গাদকারি কি চিন্তামুক্ত? মোটেই নয়। বঞ্চিত বহুজন জোট এবং এইআইএমআইএম প্রার্থী দেয়নি। দলিত এবং মুসলিম ভোট এবার কংগ্রেসে যাবে। অতএব ক্ষীণ হলেও আশাবাদী কংগ্রেস প্রার্থী বিকাশ ঠাকরে। গাদকারি বনাম বিকাশ। দু’জনই ঘরের ছেলে।
মঙ্গলবার ছিল সম্রাট অশোকের জয়ন্তী। অশোক চকে সন্ধ্যায় সেই অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে অটোচালক বৃদ্ধ নাসির বললেন, ‘প্রার্থীরা নাগপুরের ঘরের ছেলে, তো আমাদের কী? আমাদের ঘরের কথা কেউ ভাবে না! দো ওয়াক্তের রুটি-ডাল জোগাড় করতেই ৬০ বছর কেটে গেল!’ নাসির কে? নরেন্দ্র মোদি যাঁদের বলেন, ‘মেরে পরিবারওয়ালো!’ অর্থাৎ, আম ভারতবাসী।