নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাজারে জিনিসপত্রের দামের যুক্তি দেখিয়ে মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন-ভাতা ফি বছর বাড়াচ্ছেন মা-মাটি-মানুষের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ বাংলাজুড়ে যেসব অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী তথা মা-বোনেরা লাখ লাখ প্রসূতি ও শিশুর স্বাস্থ্যের দিকে বছরভর নজর রাখেন, তাঁদের আর্থিক দুর্দশা কাটানোর ব্যাপারে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই তাঁর। তাই কর্মীদের ভাতা বৃদ্ধি বা অবসরপ্রাপ্তদের পেনশনের মতো দাবি আদায় করতে রাস্তায় নেমে আন্দোলনই একমাত্র পথ। প্রয়োজনে সরকারি দপ্তরের সামনে জেলাওয়াড়ি লাগাতার অবস্থানে বসতে হবে এজন্য। সেই পথে হাঁটলে সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবেই। বুধবার ধর্মতলায় সিটু সমর্থিত আসিডিএস কর্মী-সহায়িকাদের সংগঠনের এক সমাবেশে এ কথা বলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো নেতা বিমান বসু। লোকসভা ভোটের পর কোনও প্রকাশ্য জনসভায় এই প্রথম বক্তব্য রাখলেন বিমানবাবু। তিনি ছাড়াও এদিনের সভায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকাদের প্রতি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের উপেক্ষার মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করে ভাষণ দেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কয়েক হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এদিন সকাল ১০টা থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ধর্না-অবস্থানে বসেন।
বিমানবাবু এদিন বলেন, রাজ্যে নাকি অফুরন্ত উন্নয়ন হচ্ছে। বছরজুড়ে খেলা, মেলা, উৎসব চলছে। মাটির নামে, খাওয়া-দাওয়ার নামেও উৎসব হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর রাজত্বে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী মা-বোনেদের অশেষ আর্থিক দুর্গতি চলছে। অন্যান্য অনেক রাজ্যের তুলনায় বাংলায় এঁদের বেতন বা ভাতা অত্যন্ত কম। ৬৫ বছর পর তাঁদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হচেছ অবসরের নামে। কিন্তু এককালীন কোনও অনুদান বা মাসিক পেনশনের কোনও সংস্থান সরকার করেনি অবসরপ্রাপ্তদের জন্য। অথচ নানা ধরনের অস্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রে ভিন্ন নিয়ম বা নীতি গ্রহণ করেছে তারা। এই ব্যবস্থার বদল অবশ্যই দরকার।