বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
যে সমস্ত করদাতা আয়কর দেন, তাঁদের দাখিল করা হিসেবের ‘অ্যাসেসমেন্ট’ হয় তার পরের বছর। সেখানে যদি আয় এবং করপ্রদানে কোনও গরমিল ধরা পড়ে, তাহলে তার জন্য জবাবদিহি করতে হয় করদাতাদের। প্রয়োজনে বাড়তি কর এবং পেনাল্টিও দিতে হয়। আয়কর কর্তাদের বক্তব্য, এই নিয়মের বাইরেও আইনের একটি ধারা আছে, যেখানে পুরনো কোনও বছরের কর প্রদানের হিসেবের খাতা ফের খুলে দেখতে পারে বিভাগ। সর্বাধিক ছ’বছর পর্যন্ত পিছিয়ে গিয়ে হিসেবের খাতা নতুন করে খুলতে পারেন কর্তারা। এবার সেই অস্ত্রটিতেই শান দিতে চাইছে ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট। চলতি আর্থিক বছর থেকে ছ’বছর আগে যে অ্যাসেসমেন্ট হয়েছিল, সেই হিসেবের খাতা যেমন খোলা হচ্ছে, তেমনই তার পরের বছরগুলিরও আয়কর জমার হিসেব যাচাই করে দেখছে আয়কর দপ্তর।
কেন এই তোড়জোড়? দপ্তরের কর্তাদের কথায়, কোনও ব্যক্তি কর দেবেন, এবং তা যাচাই করা হবে দপ্তরের তরফে, এটি রুটিন বিষয়। কিন্তু তার পরেও দপ্তরে প্রচুর তথ্য আসতে থাকে, যা থেকে আঁচ পাওয়া যায় বেআইনি লেনদেনের। সেই তথ্যগুলি যাচাই করার সময় অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বহু করদাতার কর নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু দপ্তরের নজর এড়িয়ে তাঁরা বড় অঙ্কের লেনদেন করেছেন বা সম্পত্তি কিনেছেন। অর্থাৎ কালো টাকা বা সম্পত্তি হয়েছে আয়কর দপ্তরকে অন্ধকারে রেখে। সেই কালো টাকা যেমন ভোটের বাজারে খাটানোর সম্ভাবনা থাকে, তেমনই লাগাতার বেআইনি লেনদেন রুখতে করদাতাদের আতসকাচের নীচে রাখে দপ্তর। এখানকার কর্তারা বলছেন, কালো টাকার কারবার রুখতে আগে থেকেই কলকাতাকে পাখির চোখ করেছে আয়কর দপ্তর। কালো টাকা দেশে ফেরানোর জন্য যাতে আইনি সমস্যা না হয়, তার জন্য আইন এনেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। পাশ হয়েছে আনডিসক্লোজড ফরেন ইনকাম অ্যান্ড অ্যাসেটস (ইমপোজিশন অব ট্যাক্স) বিল। সেই আইনকে কাজে লাগিয়ে কালো টাকা উদ্ধারে নামে কেন্দ্র। চলতি কথায় তাকেই বলা হয় ব্ল্যাক মানি আইন। সেই আইনকে কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যেই করদাতাদের একটি লম্বা তালিকা ধরানো হয়েছে আয়কর দপ্তরকে। সেই অনুসন্ধানের পাশাপাশি আরও কালো টাকার হদিশ করতেই ফের নজরে কলকাতা।
দপ্তরের কর্তাদের কথায়, তাঁদের কাছে কালো টাকা সংক্রান্ত যে গোপন তথ্য আসে, তা যাচাই করে একটি তালিকা তৈরি করা হয়। সেই তালিকায় কলকাতা রয়েছে তৃতীয় স্থানে। প্রথমে রয়েছে মুম্বই এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে গুজরাত। মুম্বইতে ১০ হাজারের কিছু বেশি এবং গুজরাতে সাত হাজারের সামান্য বেশি করদাতাকে আনা হয়েছে নজরে। ওই দুই শিল্প অধ্যুষিত রাজ্যের পাশাপাশি কলকাতায় যে কালো টাকার রমরমা বাড়ছে, এটা তার একটা বড় উদাহরণ, বলছেন দপ্তরের কর্তারাই।