বিমা, মেয়াদি সঞ্চয় বা শেয়ার থেকে অর্থকড়ি আয় বাড়বে। ঝামেলা থেকে দূরে থাকুন। ধর্মে মতি। ... বিশদ
হাটখোলার বাড়িটি বহু প্রাচীন। দোতলায় গৃহ দেবতার মন্দির। সেখানে কারুকাজ করা রুপোর সিংহাসন। তাতে তাকিয়া। কিন্তু নারায়ণ এখন গোটা দিন সিংহাসনে ওঠেন না। এ বাড়ির প্রবীণ সদস্য দেবব্রত দাস বললেন ‘এখানে একদম কথা কইবেন না। গৃহদেবতা স্নানে মগ্ন। এ সময় গোলযোগ সইতে পারেন না।’ ইশারায় দেখালেন স্নানের স্থান। সেখানে লাল গামছা দিয়ে ঘেরা জায়গা। বড় একটি কাঁসার জামবাটি উপরে বসানো পিতলের একটি স্ট্যান্ড। তার আগায় ঘটি ঝোলানো। সেটি থেকে টপটপ করে গঙ্গাজল পড়েই চলেছে নারায়ণ শিলার মাথায়। ঘটির জল কমে গেলে ফের ভরে দিতে হয়। আচমন করে শুদ্ধ পোশাকে ঢুকতে হয় সে ঘরে। মাঝেমাঝে ভেজা গামছা দিয়ে জল ছেটানো হয় গোটা ঘরে। দাস বাড়ির গৃহকর্তা বলে ওঠেন, ‘গরম সহ্য করতে পারেন না কুলদেবতা। স্নান করবেন গোটা গ্রীষ্মজুড়ে।’ সন্ধ্যায় স্নান শেষে সুগন্ধি মাখেন নারায়ণ। তারপর সুতির পোশাক পরিয়ে সিংহাসনে শয়ান দেওয়া হয়। বছরের অন্যান্য সময় মখমলি চেলি পরেন। শীতে গরম বস্ত্র। আর এ সময় অর্থাৎ বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সুতির কাপড়।
গৃহকর্ত্রী রীতা দাস বলেন, ‘নারায়ণ আমাদের বাড়ির রক্ষাকর্তা। তাঁর যাতে গরমে কোনও কষ্ট না হয় সেই জন্য বেশি যত্ন করতে হয়।’ গৃহকর্তার কথায়, ‘দুপুর বা রাতে ভোগ নিবেদনের পর দেবতার ঘরের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর নির্দিষ্ট সময়ের আগে কোনও অবস্থাতেই সে দরজা খোলা হয় না। বহুবার দুপুরে আচমকা এসে নারায়ণকে দর্শন করতে চেয়েছেন অনেক ভক্ত। কিন্তু আমরা হাতজোড় করে বলেছি, ভগবানের এখন বিশ্রামের সময়। এখন বিঘ্ন ঘটানো অসম্ভব। ক্ষমা করবেন।’
এই সকালবেলা নারায়ণ স্নানঘরে ঢুকে পড়েছেন। এখন তাঁকে বিরক্ত করা যাবে না। কথাগুলি বিশ্বাস না হলে হাটখোলায় দাস বাড়িতে গিয়ে নারায়ণের স্নানের কথা শুধিয়ে আসাই যায় দেবব্রতবাবুকে।