পারিবারিক মঙ্গল অনুষ্ঠান ও পুজোপাঠে আনন্দলাভ। বন্ধু বিবাদের যোগ আছে। বিদ্যাচর্চায় উন্নতি। ... বিশদ
এদিন কচুয়ার ঘটনায় গুরুতর জখম ও অল্প আহতদের দেখতে হাসপাতালে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। খোঁজখবর নিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলে যখন মমতা গাড়িতে উঠতে যাচ্ছেন, তখনই ছুটে আসেন এই দুই মায়ের একজন সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়। ‘দিদিকে’ হাতের কাছে পেয়ে কাতর স্বরে অনুরোধ করেন, ছেলের পায়ের ড্রেসিং হচ্ছে না। বারবার বলার পরও কেউ শুনছে না। এরকম হলে তো ওর পা আর বাঁচানো যাবে না দিদি। মুখ্যমন্ত্রী শোনামাত্রই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তাঁর সঙ্গে থাকা এক সংসদ সদস্যকে। যদিও মমতা চলে যাওয়ার প্রায় তিন ঘণ্টা পরেও পরিস্থিতির কোনওরকম পরিবর্তন হয়নি বলেই অভিযোগ। একাধিক শীর্ষ সূত্রের খবর, পিজি’র ট্রমা সেন্টারের পরিষেবার মান নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নানা অভিযোগ আসছে। তা নিয়ে তাঁর ক্ষোভ বাড়ছিল। এদিনের ঘটনাগুলি শুনে ১০০ কোটির বেশি খরচে তৈরি ট্রমা সেন্টারের পরিষেবার হাল কেন এমন, কেন সবগুলি ব্যবস্থা এখনও চালু করা যায়নি, কোন খাতে এই বাড়ি করতে কী কী খরচ লেগেছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন দুপুরে কথা বলার সময় ট্রমা সেন্টারের উল্টোদিকে বসে থাকা রোগীর বাড়ির লোকজন এই বাড়িতে চিকিৎসাধীন রোগীদের সঙ্গে নার্সদের একাংশের চরম দুর্ব্যবহার নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পাশাপাশি এত কোটি টাকা দিয়ে তৈরি বাড়ির সামনে রোগীর বাড়ির লোকজনের বসবার কোনও ছাউনি না থাকা নিয়ে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এদিন সুমিত্রাদেবী বলেন, বসিরহাটের ইটিন্ডা হাইস্কুলে পড়াশোনা করে আমার ছেলে। স্কুল থেকে যখন সাইকেলে ফিরছিল, একটা লরি পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়। স্থানীয় বদরতলা হাসপাতাল হয়ে সেদিনই পিজি’র ট্রমা সেন্টারে ওকে ভর্তি করি। শুরুতে সব ঠিক ছিল। ডাক্তারবাবুদের ব্যবহার, পরিষেবা অসম্ভব ভালো। কিন্তু, নার্সদের ব্যবহার ঠিক নয়। শুধু তাই নয়, সময়ে ড্রেসিং না হলে ওর বাঁ পা টা বাঁচবে না— এমন কথা জানিয়েছিলেন ডাক্তারবাবুরা। কিন্তু, ড্রেসিং হয়নি। ড্রেসিং করার জন্য একটা বিশেষ মেশিন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। সেটাও আসেনি। ছেলের পা এখন বাদ দেওয়ার মতো অবস্থা।
অন্যদিকে, চোখে জল নিয়ে কেতুগ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত হাজরা ও রত্না হাজরা বললেন, ছেলে প্রদীপ একটি গ্যারাজে কাজ করে। ক’দিন গাড়িতে রং করার সময় পিছন দিক থেকে একটি গাড়ি এসে ধাক্কা মারে। খুবই খারাপ অবস্থায় এখানে আনা হয়। ভালোই ছিল। কিন্তু দরকার পড়লেও সময়মতো ওকে রক্ত দেওয়া হয়নি। যখন শেষ সময়ে জীবনের জন্য কাতড়াচ্ছে, জল চাইছে, জলও দেওয়া হয়নি ওকে। মর্মান্তিকভাবে মারা গেল ও।