বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
যে গ্রামাঞ্চলের উপর ভরসা করে তৃণমূল এবারও জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল, সেখানেই বড় ধাক্কা খেতে হয়েছে তাদের। এই বিধানসভার মধ্যেই পড়ছে খলিসানি ও রঘুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। এছাড়া রয়েছে উলুবেড়িয়া পুরসভা এলাকা। কিন্তু, ফলাফল প্রকাশ হতেই দেখা গিয়েছে এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই তৃণমূল বিপুল ব্যবধানে পিছিয়ে রয়েছে। অথচ এই রঘুদেবপুরের নেতাজি সংঘ মাঠেই জনসভা করে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও ভোটের ফলাফলে তার যে কোনও প্রভাব পড়েনি, তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
যদিও এই ফলাফল নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাননি এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ইদ্রিশ আলি। তিনি বলেন, আমরা জয়ী হয়েছি। ফল আগের তুলনায় কেন খারাপ হল, তা নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব পর্যালোচনা করবে। আমরা আমাদের ত্রুটি সংশোধন করব। জেলা তৃণমূলের সভাপতি (গ্রামীণ) পুলক রায় বলেন, আমাদের আশানুরূপ ফল হয়নি। কেন ভালো ফল হল না, তা নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। বিজেপির জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক বলেন, অনেক বুথে আমাদের এজেন্ট বসতে দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই ভোট দিয়েছেন। সম্পূর্ণ অবাধ ভোট হলে আমরা জয়ী হতাম।
উলুবেড়িয়া (পূর্ব) বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ইদ্রিশ আলি শেষ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৭৯১ ভোটে জয়ী হয়েছেন। অথচ গত ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হায়দর আজিজ সফি প্রায় ১৭ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। সেবার হায়দার আজিজ সফি পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ১৯২টি ভোট, অন্যদিকে সিপিএমের সাবিরুদ্দিন মোল্লা পেয়েছিলেন ৫৫ হাজার ৯২৩টি ভোট। বিজেপির পাপিয়া মণ্ডল পেয়েছিলেন মাত্র ২৮ হাজার ২২৯টি ভোট। এবার সিপিএমের ভোটের প্রায় পুরোটাই বিজেপির দিকে গিয়েছে। ফলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। আর গত বছর হওয়া লোকসভার উপনির্বাচন থেকেই এক সময়ের লালদুর্গ বলে পরিচিত উলুবেড়িয়ায় সিপিএম ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছিল। এবারের ভোটে তারই প্রতিফলন হল। এখানে সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট মাত্র ৯ শতাংশ। অথচ মাত্র তিন বছর আগেই তাদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩২ শতাংশের কাছাকাছি।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, গোটা রাজ্যের সঙ্গে উলুবেড়িয়া (পূর্ব) বিধানসভার উপনির্বাচনেও মেরুকরণের ভোট হয়েছে। একদিকে তৃণমূল, অন্যদিকে তৃণমূল বিরোধী মেরু। আর সাধারণ ভোটাররা তৃণমূল বিরোধী হিসেবে বিজেপিকেই বেছে নিয়েছেন। আর সেই কারণেই এখানে সিপিএম মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আর মাত্র দু’বছরের মধ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে বিজেপির এই উত্থান নিয়ে এখন থেকেই সব মহলে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।