বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল

মুক্তির মন্দির সোপানতলে...

আজ সাধারণতন্ত্র দিবস। ১৯৫০ সালে আজকের দিনেই কার্যকর করা হয়েছিল স্বাধীন ভারতের সংবিধান। দেশ স্বাধীন করতে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন অসংখ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী। তাঁদের স্মরণ করল যাদবপুর বিদ্যাপীঠের ছাত্রছাত্রীরা।

একবার বিদায় দে মা
শহিদ ক্ষুদিরাম বসু। ১৮ বছর ৭ মাস ১১ দিন বয়সে তিনি আপন করে নিয়েছিলেন ফাঁসির দড়িকে। বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে মুজফ্‌ফরপুরের অত্যাচারী ব্রিটিশ বিচারক কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু ঘটনার দিন কিংসফোর্ড অন্য গাড়িতে ছিলেন। ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্লর ছোড়া বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় দুই ব্রিটিশ মহিলার। প্রফুল্ল চাকী ধরা পড়ার আগেই আত্মহত্যা করেন। আর ব্রিটিশ পুলিসের হাতে ধরা পড়ে যান ক্ষুদিরাম। বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়। ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ফাঁসির মঞ্চে ওঠেন অগ্নিযুগের সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী। ১১ আগস্ট আজও আত্মবলিদান দিবস হিসেবে পরিচিত।
 —প্রাপ্তি ভৌমিক, নবম শ্রেণি

আমাদের পথপ্রদর্শক
গান্ধীবুড়িকে আমরা সবাই চিনি। মানবতাবাদী, দেশপ্রেমিক এই বৃদ্ধা ছিলেন গান্ধীজির আদর্শে অনুপ্রাণিত। জীবনের শুরুতে নানান প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার হন তিনি। তাঁর অকাল বৈধব্য, সমাজের নানা বাধানিষেধ মাতঙ্গিনী হাজরার দেশপ্রেমের কাছে হার মেনেছে। দেশের নারী সমাজের কাছে আজও তিনি দৃষ্টান্ত। ব্রিটিশ অপশাসনের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন গান্ধীবুড়ি। আইন অমান্য আন্দোলন, চৌকিদারি কর বন্ধ আন্দোলন, ভারত ছাড় আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। কারাবরণ করতে পিছপা হননি। ১৯৪২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তমলুক থানা দখলের আন্দোলনে যোগ দেন। ব্রিটিশ পুলিসের গুলিতে প্রাণ হারান। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনি উচ্চারণ করেন। মাতঙ্গিনীর তেজস্বিতা, সাহসিকতা ও আত্মত্যাগ হোক আমাদের প্রেরণা।
—দেবস্মিতা মাইতি, নবম শ্রেণি

অলিন্দ যুদ্ধের সৈনিক
তখন শীতকাল। কলকাতায় জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর। রোদ ঝলমলে দিন। ঘড়িতে বেলা ১২টা। হঠাৎই চোখে পড়ল সাহেবি পোশাক পরা তিন যুবক দাঁড়িয়ে। জায়গাটা রাইটার্স বিল্ডিংয়ের সামনে। তাঁরা তড়িঘড়ি দোতলায় উঠে এলেন। কারা বিভাগের ইনস্পেক্টর জেনারেল কর্নেল সিম্পসন সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে চান। অনুমতির তোয়াক্কা না করে দরজা ঠেলে ঢুকলেন তিনজন। কিছু বোঝার আগেই গর্জে উঠল ওই তিন যুবকের বন্দুক। সিম্পসন সাহেব মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। বাংলার এই তিন স্ফুলিঙ্গের নাম— বিনয়, বাদল ও দীনেশ। সংক্ষেপে বি-বা-দী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ারের নামকরণ করা হয় এই তিন বিপ্লবীর নামে— বিবাদী বাগ। আর তাঁদের রাইটার্স অভিযান ইতিহাসের পাতায় ‘অলিন্দ যুদ্ধ’ নামে খ্যাত।
—দীপ্তনীল মহাপাত্র, নবম শ্রেণি

‘আনন্দমঠ’ই অনুপ্রেরণা
ছয় ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ সন্তান। শৈশবে বাবা-মাকে হারিয়ে কাকার কাছে মানুষ হন। দুষ্টু স্বভাবের বালকটির কাছে তাঁর চট্টগ্রাম ছিল পৃথিবীর সেরা স্থান। গ্রামের দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার হাতেখড়ি। ১৯১৭ সালে বহরমপুর কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। কৈশোরকালেই যুক্ত হয়েছিলেন বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে। বিপ্লব মানে সর্বাত্মক চেতনা। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা উপন্যাস ‘আনন্দমঠ’কে অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করে গিয়েছেন। হৃদয়ঙ্গম করেছিলেন এই উপন্যাসের বিখ্যাত গান ‘বন্দেমাতরম’। গড়ে তুলেছিলেন এক বিরাট বাহিনী। সেই বাহিনীর সদস্য ছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মতো বিপ্লবীরা। তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন। এর জন্য ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি এই মহান বিপ্লবীর ফাঁসি হয়। তিনি হলেন সকলের প্রিয় মাস্টারদা সূর্য সেন। বলেছিলেন, ‘বন্ধুগণ, এগিয়ে চল। কখনও পিছিয়ে যেও না। দাসত্বের দিন চলে যাচ্ছে। স্বাধীনতার লগ্ন আগত। ওঠো জাগো। জয় আমাদের সুনিশ্চিত।’
—অনন্যা বৈদ্য, নবম শ্রেণি


সশস্ত্র সংগ্রামের পথ
দেশপ্রেমিক শব্দটা শুনলেই আপামর বাঙালির মনে যাঁর ছবিটা ভেসে ওঠে, তিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তিনি সারাটা জীবন নিঃস্বার্থভাবে দেশের সেবা করে গিয়েছেন। গান্ধীজির অহিংস সত্যাগ্রহের পরিবর্তে ইংরেজদের ভারত ছাড়া করতে নেতাজি বেছে নিয়েছিলেন সশস্ত্র সংগ্রামের পথ। পরবর্তীকালে তিনি একটি রাজনৈতিক দলও প্রতিষ্ঠা করেন। দলটির নাম— ফরওয়ার্ড ব্লক। সুভাষচন্দ্র ১১ বার কারারুদ্ধ হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় তিনি উপলব্ধি করেন, এটাই মোক্ষম সময় ব্রিটিশ শাসনকে ধাক্কা দেওয়ার। তিনি ছদ্মবেশ ধারণ করে দেশত্যাগ করেন। রাসবিহারী বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজ পুনর্গঠন করে তার সর্বাধিনায়ক হন। ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তিতে আজাদ হিন্দ ফৌজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। নেতাজির অমর উক্তি— ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।’
—মনোমিতা কানু, দশম শ্রেণি


অমর দেশপ্রেমী
ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন ভগৎ সিং। দেশের স্বাধীনতার জন্য হাসতে হাসতে তিনি ফাঁসির মঞ্চে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর মহান উক্তি আজও প্রাসঙ্গিক— ‘ওরা (ইংরেজরা) আমাকে মেরে ফেলতে পারে, কিন্তু আমার ভাবনাকে মারতে পারবে না।’ ভগৎ সিংকে ঘিরে যেভাবে বিপ্লবী চেতনা ছড়িয়ে পড়েছিল, তার গুরুত্ব অপরিসীম। বটুকেশ্বর দত্তকে সঙ্গী করে পার্লামেন্টের ফ্লোরে বোমা নিক্ষেপ করেছিলেন ভগৎ। তাঁর আদর্শ আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
—নির্ণয় পাল, দশম শ্রেণি

যাদবপুর বিদ্যাপীঠ
প্রধান শিক্ষকের কলমে
সালটা ১৯০৫। বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে উত্তাল দেশ। স্বদেশি আন্দোলনের জোয়ার বইছে চারদিকে। তারই ছাপ পড়েছে জীবনযাত্রায়। তাই মাতৃভাষায় শিক্ষা কিংবা গবেষণার কাজই বা বাদ যায় কেন? সেই কাজে অগ্রণী ভূমিকা নিলেন ঋষি অরবিন্দ, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা। গঠিত হল ‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’। ১৯০৬ সালে যাদবপুরে শুরু হল বেঙ্গল টেকনিক্যাল স্কুলের পথচলা। ইতিমধ্যে দেশ স্বাধীন হয়েছে। নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে পরবর্তীকালে এরই নামকরণ হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
এই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন ত্রিগুণা সেন। পরে তিনি হন রেক্টর। তাঁর আগ্রহ ও জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্যোগে শুরু হল ফের সলতে পাকানোর কাজ। ১৯৫৭ সালের ১১ মার্চ প্রতিষ্ঠা হল যাদবপুর প্রাইমারি স্কুল। স্কুলটি উদ্বোধন করেন পণ্ডিত বিধুশেখর শাস্ত্রী। বর্তমানে সেই স্কুলেরই নাম যাদবপুর বিদ্যাপীঠ। সেদিনের সেই চারাগাছ আজ মহীরুহ। বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম মিলিয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৭০০। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের মেধা তালিকায় প্রায় প্রত্যেক বছর স্থান করে নেয় এই স্কুল।
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ছড়িয়ে রয়েছেন এই স্কুলের প্রাক্তনীরা। আর এই প্রাক্তনীরা প্রচণ্ড সক্রিয়। সেই সঙ্গে পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা মিলে একটি যৌথ পরিবার। সকলের সার্বিক সহযোগিতায় এই স্কুল উৎকর্ষের চরম শিখরে পৌঁছেছে। পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ক্লাসরুমগুলি রঙিন করা হয়েছে। বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের সৃষ্টিশীলতাকে আঁকায় ধরা হয়েছে।
রয়েছে গ্রন্থাগার, উন্নতমানের কম্পিউটার সহ বিভিন্ন বিষয়ের ল্যাবরেটরি, ইন্ডোর গেমের সুন্দর আয়োজন। প্রত্যেক তলে রয়েছে পরিশোধিত জলের ব্যবস্থা। কিউআর কোডের মাধ্যমে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি নথিভুক্ত করা হয়। আর এর থেকে অভিভাবকরা জানতে পারেন, তাঁদের সন্তানদের গতিবিধি। আধুনিকতায় মোড়া স্কুলটি জুড়ে আছে সুন্দর সাংস্কৃতিক আবহ। তবে, আজও এখানে পড়তে আসে ফার্স্ট জেনারেশন লার্নার। নতুন প্রজন্মকে স্বপ্নের ঠিকানার পথ বাতলে দেয় যাদবপুর বিদ্যাপীঠ।
—পার্থপ্রতিম বৈদ্য, প্রধান শিক্ষক
3d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৬৮ টাকা৮৭.৪২ টাকা
পাউন্ড১০৫.৮৯ টাকা১০৯.৬২ টাকা
ইউরো৮৮.৬৬ টাকা৯২.০৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা