সম্পাদকীয়

এখন লক্ষ্য শুধুই শাস্তি

আর জি কর ইস্যুতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অংশত অচলাবস্থা জারি রয়েছে। বিনা নোটিসে, প্রায়ই অশান্ত হয়ে উঠছে শহর এবং রাজ্যের নানা স্থান। পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসব দুর্গাপুজোর বাকি আর মাত্র তিনসপ্তাহ। এটা নিছক কোনও আনন্দ-প্রহর নয়, অর্থনীতিরও একটি বড় চালিকাশক্তি। এই চক্রে পড়ে থমকে গিয়েছে অনেক উন্নয়ন কর্মসূচি। সর্বোপরি বাংলার মুখ-মান প্রতিদিন একট‍ু একটু করে নিচু হচ্ছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে উঠুক, এটাই চায় সচেতন নাগরিক সমাজ। তবে, সবকিছু ভুলে গিয়ে নয়, একইসঙ্গে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে তরুণী ডাক্তারের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দোষী বা দোষীদের। ‘তিলোত্তমা’ বা ‘অভয়া’র জন্য ন্যায়বিচারের দাবি সবার। এই প্রশ্নে আন্দোলনকারীদেরই সঙ্গে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তিনি একটি রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ কর্ত্রী এবং রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তবুও ক্ষমতার এই দুই স্বাভাবিক উৎস থেকে সরে এসে, স্রেফ এক নাগরিক পরিচয়েই অবিচারের প্রতিকারে আন্তরিক তিনি। তাঁর আহ্বান প্রত্যাখ্যাত হয়েছে আগেই তিনবার। তবু তিনি রুষ্ট হওয়ার পরিবর্তে অধিক সমবেদনা, সহানুভূতি নিয়েই জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চে ছুটে গিয়েছিলেন শনিবার তাঁদের একজন ‘বড় দিদি’ হিসেবে, চেয়েছিলেন ফলপ্রসূ আলোচনা। তাঁঁর ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরাও পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি পর্যন্ত। তবু শর্তের কাঁটায় বিদ্ধ হল পরিবেশ এবং শেষমেশ ভেস্তেই গেল চতুর্থ দিনের আলোচনা। নেপথ্যে জয় হল কার—মৃত্যুর রাজনীতির? একই কারণে সুবিচার আরও দূরবর্তী হল না কি? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নানা মহলে।  
     বেনজির টানাপোড়েনের মাঝেই, শনিবার সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন টালা থানার বিতর্কিত ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। দীর্ঘ জেরার পরই তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তথ্য-প্রমাণ লোপাট, ঘটনাস্থলের বিকৃতি, এফআইআরে দেরি প্রভৃতি অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। একই মামলায় এবার গ্রেপ্তার হলেন সন্দীপ ঘোষও। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তাঁকে আগেই ফাটকে ভরেছিল। ফের দীর্ঘ জেরার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে নতুন মামলাতেও তাঁকে হেফাজতে নিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। খুন-ধর্ষণ কাণ্ডে তথ্য-প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধেও। আগামী কাল, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানি। সিবিআই আগে যে স্টেটাস রিপোর্ট দিয়েছিল তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ‘ফ্রেশ স্টেটাস রিপোর্ট’ চেয়েছে তারা। এবার তা জমা দিতে হবে সিবিআইকে। তাই কলকাতা পুলিসের কাছ থেকে দায়িত্বগ্রহণের ৩১ দিন পর ধর্ষণ-খুন মামলায় সিবিআইয়ের এই জোড়া গ্রেপ্তারি তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁদের নজরে এখন রাজ্যের এক আইপিএস কর্তাও—জোর জল্পনা আমলা মহলে।
সিবিআই সূত্রের খবর, সন্দীপের গাড়ি চালকের বয়ানই এই মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। জেরার মুখে নাকি জানিয়েছেন, ঘটনার দিন গভীর রাতে মালিকের ফোন পান তিনি। সন্দীপকে নিয়ে সোজা আর জি করে পৌঁছে দেন তিনি ভোর ৪টের কিছু পর। সকাল ৬টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তৎকালীন অধ্যক্ষ। তারপর সকাল ৭টার মধ্যে তাঁকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন ওই চালক। সন্দীপের ফোনের টাওয়ার লোকেশন সূত্রেও মিলেছে অবিকল ইঙ্গিত। পিছনের লিফট দিয়েই তিনি অকুস্থলে পৌঁছন বলে সিবিআইয়ের সন্দেহ। তাদের অভিযোগ, সন্দীপের প্রবেশ ও প্রস্থানের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিকৃত করা হয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, প্রথম থেকেই এবং সম্ভবত ইচ্ছাকৃতভাবে তদন্তে গাফিলতি করেছেন টালার ওসি। সহকর্মীর রিপোর্ট পাওয়ার পরও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু হয়নি কেন? সদুত্তর মেলেনি ওসির। জিডি বুকেও মিলেছে বিস্তর গরমিল। সিবিআই সূত্রের দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে চারটির বেশি জিডি নথিভুক্তির দৃশ্য আছে! কিন্তু চেপে দেওয়া হয়েছে তা। এজন্য এক পদস্থ আইপিএস কর্তার দিকেই নাকি ইঙ্গিত করেছেন ওসি। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, ধর্ষণ-খুনের ঘটনাস্থল যে সেমিনার হল নয়, সেই ব্যাপারেও তদন্তকারীরা এখন মোটামুটি নিশ্চিত। তাই নতুনভাবে উঠে এসেছে সেই পুরনো প্রশ্ন, তাহলে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করল কে বা কারা? ধর্ষণ করে খুন, নাকি ধর্ষণের মতো কাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে তাঁকে খুনের পরেই! এই প্রশ্নে ঘুরপাক খাচ্ছে একাধিক তত্ত্ব। এই সূত্রে কয়েকজন ডাক্তারও এখন সিবিআইয়ের আতশকাচের তলায়। সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের এই ধারণাই দৃঢ়মূল হচ্ছে যে, ‘অভয়া’ নিজের প্রিয় কর্মস্থলে ‘পরিকল্পিত’ খুনের শিকার। অপরাধ যা’ই ঘটে থাক, তদন্ত যেন নিরপেক্ষ হয় এবং প্রকৃত সত্য সামনে আসে। সঙ্কীর্ণ রাজনীতি আর নয়, দোষীদের চরমতম শাস্তির দাবিই হোক পাখির চোখ। শুধু জুনিয়র ডাক্তার এবং সাধারণ নাগরিকরাই নন, বলা বাহুল্য, মানবিক মুখ্যমন্ত্রীও সেই দিনের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।
3d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

গৃহসুখ বৃদ্ধি ও সপরিবারে আনন্দ উপভোগ। অন্যের দোষের দায়বহন করতে হতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.০৭ টাকা৮৪.৮১ টাকা
পাউন্ড১০৮.৬৫ টাকা১১২.২০ টাকা
ইউরো৯১.৫৭ টাকা৯৪.৭৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা