যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
লকডাউন এবং আনলক পর্বের গোড়ায় যে শিল্পগুলি সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম পর্যটন শিল্প। বড় সংস্থা, যারা মূলত ভিন রাজ্যের জন্য পর্যটন প্যাকেজ ঘোষণা করে, তারা এখনও অনেকটাই দিশাহীন। এক বছর আগেও এই সময় যে পরিমাণে পর্যটক ভিন রাজ্যে বেড়াতে যেতেন, তার ছিটফোঁটাও এখন নেই। কিন্তু ছোট আকারের ভ্রমণে ফের উৎসাহ ফিরে পেয়েছেন সাধারণ মানুষ।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর সার্ভিস প্রোভাইডার্স অব বেঙ্গলের সহ সভাপতি সমর ঘোষ বলছেন, ছোট রুটের পর্যটনের বহর গত কয়েক মাসে অনেকটাই বেড়েছে। তাঁর কথায়, যাঁরা দূরের কোনও জায়গায় বেড়াতে যেতে পছন্দ করেন, তাঁদের অনেকেই এখনও মনস্থির করতে পারছেন না। তাঁরা করোনা ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা করছেন। যে বাঙালি পুরীর জন্য মুখিয়ে থাকে, তাঁরাও যে সবাই দল বেঁধে পুরী যাচ্ছেন, তা নয়। বরং সেই ভিড়ের অনেকটাই দীঘায় পৌঁছচ্ছে। মন্দারমণির মতো সমুদ্র সৈকতগুলিতে পর্যটক রাখার পরিকাঠামো তুলনামূলক কম। কিন্তু সেখানেও ভিড় বেশ ভালো, দাবি করেছেন সমরবাবু। তিনি বলেন, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির যেখানে যেখানে পর্যটনকেন্দ্র আছে, সেখানেই মানুষ যাচ্ছেন। সপ্তাহ শেষে পুরুলিয়ায় এখন বুকিং পাওয়া কঠিন। প্রায় একই অবস্থা শান্তিনিকেতন বা বিষ্ণুপুরের মতো জায়গাগুলিতেও। আর এই সুযোগে হোম-স্টেগুলিও ভালো ব্যবসার মুখ দেখছে। আপাতত পরিস্থিতি এমনই চলবে বলে আশা করছেন সমরবাবুরা। তাঁদের কথায়, যেহেতু এবার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পিছিয়ে গিয়েছে, তাই ভোটের দিনগুলি বাদ রাখলে বাকি সময় ছোট ডেস্টিনেশনগুলিতে ভিড় থাকবে।
ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন বসুও বলছেন, পরিস্থিতি এখন আগের তুলনায় অনেক ভালো। বহু মানুষ আছেন, যাঁরা হয়তো অনেক দূরে কোথাও বেড়াতে গিয়েছেন বারবার। কিন্তু রাজ্যের, বিশেষত দক্ষিণবঙ্গের অচেনা জায়গাগুলিতে যাননি। তাঁরা এখন সেইসব ডেস্টিনেশনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। গাড়ি নিয়ে দু’-এক দিনের জন্য ঘুরে আসা যায়, এমন পর্যটনস্থলগুলি এখন ভালো ব্যবসা করছে, দাবি করেছেন নীলাঞ্জনবাবুও।
পর্যটন মন্ত্রকও রাজ্যের ছোট এবং অফবিট জায়গাগুলিকে সামনে আনার জন্য প্রচার চালাচ্ছে। তাদের তরফে আয়োজন করা হচ্ছে অঞ্চলভিত্তিক নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেই বাড়তি আনন্দটুকু যাতে সাধারণ মানুষকে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসতে পারে, তার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র। এমনকী, আইআরসিটিসিও ইতিমধ্যেই হোলিকে ঘিরে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। রাজ্যের মধ্যেই স্বল্প সময়ের জন্য অল্প খরচে যাতে সাধারণ মানুষ ঘুরে আসতে পারেন, তার সন্ধান দিচ্ছে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা।