বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
মৌমাছি পালকরা জানিয়েছেন, এতদিন বর্ষার সময়ই মাইটের আক্রমণ বেশি মাত্রায় দেখা যেত। কিন্তু এবার শীতেও মারাত্মক আক্রমণ দেখা দিয়েছে। আর তাতেই মৌমাছির লার্ভা পচা রোগ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে মৌপালকদের মাথায় হাত পড়েছে। লার্ভা পচা রোগের ফলে নতুন মৌমাছি জন্মাতে পারছে না। স্বাভাবিকভাবেই মার খাচ্ছে মধু উৎপাদন। গত ১৮ বছর ধরে মৌমাছি পালন করা এক ব্যক্তি বলেন, আগে একটি কলোনি অর্থাৎ মৌমাছির একটি বাক্স থেকে এক সিজনে ২৫-৪০ কেজি মধু পাওয়া যেত। কিন্তু এবার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। কোথাও বাক্স থেকে কোনও মধু-ই পাওয়া যাচ্ছে না, কোথাও একটি বাক্স থেকে ৫-১০কেজি মধু মিলছে। মাইটের আক্রমণ রুখতে মৌপালকরা মৌমাছির বাক্সের ভিতরে ও উপরে সালফার গুঁড়ো দিয়ে রাখেন। অনেকে কাঠির মাথায় তুলে জড়িয়ে তাতে ফরমিক অ্যাসিড মাখিয়ে রাখেন মৌমাছির বাক্সে। কেউ কেউ আবার মাইটের আক্রমণ রুখতে এক ধরনের চাইনিজ ফিতেও ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এবার কিছুতেই কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন মৌপালকরা।
সারা বাংলা মৌপালক কর্মী ইউনিয়নের সহকারি সম্পাদক নাসিরুদ্দিন সর্দার বলেন, একদিকে মধুর উৎপাদন মার খাচ্ছে, অন্যদিকে মধুর বাজার নেই। গত বছর মৌপালকরা ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে মধু বিক্রি করতে বাধা হয়েছিলেন। এবছর সিজন শুরু হয়ে গেলেও মৌপালকরা জানেন না, মধুর দর কত। ফলে যে যেমন পারছেন, সেই দামেই বিক্রি করছেন। চিনি, গুড়ের সমান দামে মধু বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকারি তরফে মৌপালকরা মধু উৎপাদনের জন্য যেসব সহায়তা বা অনুদান পেয়ে থাকেন, তা খুবই স্বল্প। অভিযোগ, বাঁকুড়া, মেদিনীপুরে ইউক্যালিপটাসের জঙ্গল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। নতুন করে গাছ লাগানো হচ্ছে না। ফলে যদি এই অবস্থা চলতে থাকে, তা হলে আর কয়েক বছর পর ইউক্যালিপটাসের মধু আর পাওয়াই যাবে না। কার্তিক মাসের শেষ থেকে মধুর সিজন শুরু হয়। জ্যৈষ্ঠর শেষ পর্যন্ত সিজন চলতে থাকে। ইউক্যালিপটাস থেকে শুরু হয়ে সর্ষে, ধনে, লিচু, সুন্দরবন, তিল থেকে মধু সংগ্রহ হয়। কিন্তু সেই মধু সংগ্রহে দিন দিন ঝক্কি বাড়ছে বলে অভিযোগ মৌপালকদের। তাঁরা বলেছেন, সাধারণত রাতের বেলা মৌমাছিদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে হয়। মৌমাছির বাক্স পাততে প্রশিক্ষিত কর্মীর প্রয়োজন হয়। কারণ, মৌমাছি হুল ফোটায়। কিন্তু রাতের বেলা গাড়িতে মৌমাছির বাক্স নিয়ে যাওয়ার সময় অনেক জায়গায় পুলিসি হয়রানির মুখে পড়তে হয় তাঁদের।
সাধারণত শীতে পশ্চিমী হাওয়া বইলে মৌমাছি বাক্স থেকে বের হতে চায় না। এবারের ঠান্ডায় মধু উৎপাদন অনেকটাই কমে গিয়েছে। তার উপর মাইটের আক্রমণ বাড়তি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত মৌবাক্স সরিয়ে রাখা হচ্ছে। যাতে অন্য বাক্সে থাকা মৌমাছিরা আক্রান্ত না হয়।