কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায় ... বিশদ
আমি এখনও পর্যন্ত যে ধরনের চরিত্র করেছি, প্রত্যেকটি স্ট্রং, স্বাধীন মহিলা। ‘কাবেরী’ (হইচই প্ল্যাটফর্মের আসন্ন সিরিজ) তেমন নয়। এই ধরনের চরিত্র প্রথমবার করলাম। সেকারণে প্রথমে পারসিভ করতেই পারিনি। কাবেরী সামাজিক চাপের শিকার। কিন্তু তার কোনও নিজস্ব কণ্ঠ নেই। শিক্ষিত মেয়েটি গৃহহিংসার শিকার। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এমন একটা মেয়ে সব কিছু কেন মেনে নিচ্ছে? এই প্রশ্নটা লেখক, পরিচালক এমনকী নিজেকেও করেছি।
কী উত্তর পেলেন?
হইচই আমাকে ডেটা রিসার্চ দেখিয়েছিল, আশপাশে এমন বহু শিক্ষিত মানুষ রয়েছেন। বাইরে থেকে দেখে আমরা হয়তো বুঝতে পারি না। কিন্তু এই সব মেয়েরা তাঁদের পরিবারের কথা ভেবে, সন্তানদের কথা ভেবে, মা-বাবার কথা ভেবে অনেক কিছু মেনে নিয়ে চলছেন। আমার মনে হয়েছিল, এই মেয়েদের নিয়ে আমার কথা বলা দরকার। যাঁরা বাধ্য হয়ে অনেক কিছু মেনে নেন।
কোনও রেফারেন্স ছিল?
না। কোনও রেফারেন্স তৈরি করতেও পারছিলাম না। কারণ আশপাশে এমন চরিত্র আমি দেখিনি। যখন ‘বুলবুল’-এর ‘বিনোদিনী’ করেছিলাম, সেও ভিক্টিম ছিল। কিন্তু সেটা অষ্টাদশ শতাব্দীর গল্প। সে সময় পুরুষতন্ত্রকে বহু মহিলা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। ও তো স্বামী, না হয় একটু গায়ে হাত দিল। না হয় দুটো বাজে কথা বলল। এই ঘটনাগুলোকে স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার মানসিকতার সঙ্গে খুব স্ট্রাগল করেছিলাম। কারণ আমি নিজে উওমেন এমপাওয়ারমেন্ট নিয়ে কাজে বিশ্বাসী। সমাজের ট্যাবু নিয়ে কথা বলা জরুরি বলে মনে করি। আমার বক্তব্য, আনন্দ, অভিমান, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, প্রতিশোধ সবটাই কাজের মাধ্যমে করে এসেছি।
সামাজিক চাপের শিকার কি শুধু মেয়েরাই?
একেবারেই নয়। আমি সাধারণত জেন্ডার বায়াসড হয়ে কাজ করি না। কাবেরী এখানে একটা মেয়ের নাম। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল কাবেরী একটি ছেলেও হতে পারে। একটি ছেলেও অনেক সমস্যা ফেস করতে পারে। মেয়েদের ভালো দেখাতে গেলে ছেলেদের খারাপ দেখাতে হবে, ওটাতে আমি বিশ্বাসই করি না। সমতা তখনই আসবে যখন ছেলে, মেয়ে নির্বিশেষে সকলে ভালো আছে।
কোনও ওয়ার্কশপ করেছিলেন?
পরিচালককে প্রচুর প্রশ্ন করাটাই আমার ওয়ার্কশপ (হাসি)। দেখুন, অভিনেতাদের তো স্বার্থপর বলা হয়। আমি বলব, একটা চরিত্র তৈরি করার জন্য অভিনেতার সেই সময়ের মানসিক গঠন কেমন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সংলাপ, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, চরিত্র কীভাবে কথা বলবে, কখন থামবে, সেগুলোই প্রস্তুতি। অনেক ছবি দেখি। সেটাই আমার হোমওয়ার্ক।
‘জুলি’ চরিত্রে কী কী চ্যালেঞ্জ ছিল?
‘জুলি’র (আড্ডাটাইমসের আসন্ন সিরিজ) জার্নি একেবারে আলাদা। যেখান থেকে উঠে আসে মেয়েটি, তারপর যেখানে যায় সেটা বিরাট পথ। রাজনীতিবিদের চরিত্র কোনওদিন করিনি। অনেক কথা না বলেও বলা যায়। ভালো কাজ আসলে সেটাই। এই লুকটা নিয়ে খুব পরিশ্রম করেছিলাম আমরা। ‘কাবেরী’ আর ‘জুলি’ প্রায় একইসঙ্গে শ্যুটিং করেছিলাম।
দুটো ভিন্নধর্মী চরিত্র একসঙ্গে করতে অসুবিধে হয় না?
একটা চরিত্র থেকে আর একটা চরিত্রে শিফট করা কঠিন। কিন্তু এত বছরের প্র্যাকটিসে হয়ে যায় হয়তো (হাসি)।
স্বরলিপি ভট্টাচার্য
ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়