প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ততা বৃদ্ধি। গৃহে কোনও শুভানুষ্ঠান উপলক্ষে অতিথি সমাগমে আনন্দ। দেহে আঘাত ... বিশদ
কিন্তু দাবানলকে বাগে আনা মোটেই সহজ নয়। পরিচালক সুকুমার সেই অসাধ্যসাধনের চেষ্টা করেছেন। ২০০ মিনিটের বেশি সময় ধরে সৃষ্টি করেছেন নিজস্ব ‘মহাকাব্য’। কিন্তু নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার সেই চেষ্টাই তাঁকে ফাঁদে ফেলেছে। এই মুহূর্তে দেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা ফাহাদ ফাসিলকে দুরন্তভাবে ব্যবহার করেও সেই ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। গোটা সিনেমা ভয়ঙ্করভাবে অল্লু এবং ফাহাদ নির্ভর। দুই সাইকোপ্যাথের দাম্ভিক পৌরুষত্ব এগিয়ে নিয়ে যায় গল্পকে। অভিনয়ের দিক থেকে একটুও ফাঁক রাখেননি তাঁরা। কিন্তু ‘প্যান-ইন্ডিয়ান’ ফর্মুলার বাধ্যবাধকতা যে বাড়তি আড়ম্বর, সেখানেই আর ভারসাম্য রাখতে পারেননি সুকুমার।
‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’-এর মতোই দ্বিতীয় পর্বেও ছবি শুরু হয় জাপানে। যদিও সেই দৃশ্যের (নাকি স্বপ্নদৃশ্য) কোনও প্রয়োজন ছিল কি না, তা গোটা ছবি দেখলেও মালুম পড়বে না। তারপর গল্প এগয় দ্রুত। লাল চন্দনের চোরাপাচার আটকাতে তৎপর ভাঁওয়ার সিং শেখাওয়াত (ফাহাদ)। আর পুষ্পা (অল্লু) আগের থেকেও আগ্রাসী, ‘ব্র্যান্ড’। প্রথম পর্বে সে ছিল মাটির মানুষ। কিন্তু টাকার লোভে বিপথগামী। এবার জামা থেকে পাচারের কনটেইনার সবেতে তার উল্টো পাঞ্জার ছবি। প্রথম পর্বের গাড়ির মতোই এবার মালদ্বীপে ‘ডিল’ করতে গিয়ে হেলিকপ্টার কিনে নেয়। সহজে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার করে শ্রীলঙ্কায় হাজির হয়। নেশা করে, প্রতিশোধ নিতে চায় আর টাকা দিয়ে কিনে নিতে চায় ক্ষমতা। তবে মহিলাদের অসম্মান করে না। বরং স্ত্রীর অনুরোধে মুখ্যমন্ত্রী ছবি তুলতে রাজি হয়নি বলে সরকারই পাল্টে দেয়। আর তা করতে গিয়েই বাড়ে শত্রু... মঙ্গল শ্রীনু, জলি রেড্ডির সঙ্গে এবার জুড়েছে আরও একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতাপ রেড্ডি (জগপতি বাবু)। পরিচালক সুকুমার নিজের সৃষ্টিকে আরও বড় মাপে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু তা অনেক সময়ই মনে হয়েছে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া। শেখাওয়াতের সঙ্গে পুষ্পার সংঘাতও যতটা আকর্ষণীয় হওয়া উচিত ছিল, ততটা নয়। প্রথম পর্বের বাস্তবোচিত এবং হৃদয়গ্রাহী গল্প এখানে প্রায় অনুপস্থিত।
শ্রীবল্লীকে (রশ্মিকা মন্দানা) অতিরিক্ত আবেদনময়ী করে তুলতে চেষ্টা করেছেন পরিচালক, যা খানিক বিরক্তিকর। একটি দৃশ্যে তার দীর্ঘ মনোলগ ভালো। কিন্তু প্রতিটি সিনেমায় এমন পৌরুষত্বের ধ্বজাধারী সাইকোপ্যাথ নায়কের বক্ষলগ্না হওয়াটা কেমন যেন লাগে! তবে এসব খামতি কার্যত একা ঢেকে দিয়েছেন অল্লু। যোগ্য সঙ্গত করেছে দেবী শ্রী প্রসাদের আবহ এবং মিরোস্লাভ কুবা ব্রোজেকের সিনেমাটোগ্রাফি। রাতে নদীর মধ্যে পাচারকারীদের ধরতে শেখাওয়াতের ধাওয়া, গঙ্গাম্মা যাত্রায় মহানকালী রূপে পুষ্পার নাচ-গান-ফাইটের জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। কিন্তু সেগুলির দৈর্ঘ্য আরও কম হতে পারত।
কিন্তু শেষে কী হল? ফের অপেক্ষা। আসছে ‘পুষ্পা ৩: দ্য র্যামপেজ’।