পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
আবার ভূত! অনীক দত্ত কি ভূতেদের নিয়ে ছবি করার স্বপ্নাদেশ পেয়েছেন?
স্বপ্নাদেশ নয় (হাসি)। আমি যা বলতে চাই, তা ভূতেদের মুখ থেকে বলানোটাই সহজ হবে মনে হল। আর এটা আমার চেনা মাঠ তো, বাড়তি সুবিধাও পাব।
মানুষের মুখ থেকে বলাতে গেলে বিতর্ক শুরু হতো নাকি?
ভূতেদের দিয়ে বলানো কথাতেও যে বিতর্ক হবে না, এমন গ্যারান্টি নেই।
ভবিষ্যতের ভূতের মূল বিষয়টি কী?
এবার আমার ভূতেরা জীবিত অবস্থাতেই বাতিলের দলে ছিল। ভূত হয়েও তারা বাতিল। বাতিল ভূতরা অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কীভাবে লড়াই করে তাই রয়েছে ছবিতে। ভার্চুয়াল জগতে তাদের আনাগোনা। মানুষের সঙ্গে সেই ভূতেদের সম্পর্ক এসব নিয়েই ভবিষ্যতের ভূত তৈরি করেছি।
আচ্ছা, তাহলে এবার ভূতেদেরও শ্রেণীসংগ্রাম?
(একটু ভেবে) এক অর্থে তাই, কিন্তু ওরা কিন্তু অন্য ভূতেদের সঙ্গে লড়াই করছে না। শুধু নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই লড়ছে। ওরা সংরক্ষণ চায় না। বুর্জোয়া-প্রলেতারিয়েত যুদ্ধেও নেই। ফলে ঠিক শ্রেণীসংগ্রাম না হলেও সংগ্রাম তো বটেই।
এখন বাংলা ছবির ট্রেলার আড়াই মিনিট ছাড়িয়ে যাচ্ছে সেখানে আপনারটি মাত্র ১ মিনিট ১২ সেকেন্ডের। কেন?
দেখুন, আমি যা বুঝি, ট্রেলার একটা ছবির আভাস দেবে মাত্র। গল্প ফাঁস করবে না। কিন্তু, এখন তো অনেক সময় ট্রেলার দেখে মনে হয় স্পিলবার্গের ছবি, আর সিনেমাটা দেখে দর্শকরা হতাশ হন। আমি তো বিজ্ঞাপনের লোক, এই ২০ সেকেন্ড, ৩০ সেকেন্ড বা খুব বেশি হলে এক মিনিটে গল্প বলতে অভ্যস্ত। ফলে যেটুকু দরকার ততটাই দেখিয়েছি।
ভবিষ্যতের ভূতে তো আপনার সিগনেচার ‘পান’ (মজা) থাকছে। ট্রেলারে দেখলাম সংবাদপত্র নিয়েও মজা করেছেন...
হ্যাঁ, বেশ কিছু সংবাদপত্র নিয়ে মজা করেছি। ছবিতে দেখবেন। তবে, ‘পান’ করব বলে করিনি। প্রয়োজন হয়েছে তাই রেখেছি।
আপনার ছবিতে রাজনীতি, সমাজের বাস্তব অবস্থা বরাবর স্থান পেয়ে এসেছে। ভবিষ্যতের ভূতেও সেই সব উপাদান থাকবে?
পুরোটা তো আমি খোলসা করব না এখন। ছবিটা মানুষ দেখে বুঝুক কী আছে আর কী নেই। আমি মনে করি, রাজনীতি ছাড়া কিছু হয় না। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যেও রাজনীতি থাকে। প্রেমের গল্প বলতে গেলেও রাজনীতি আসবেই। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে গল্পটিকে অরাজনৈতিক করেন সেটাও কিন্তু এক ধরনের রাজনীতি।
মৃণাল সেনের মৃত্যুর দিন তাঁর বাড়িতে ইন্ডাস্ট্রির ‘হুজ হু’দের দেখা মেলেনি। তাই নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। আপনি সেখানে ছিলেন, কী অনুভূতি হল?
আমরা ভাগ্যবান যে সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেনকে জীবদ্দশায় দেখতে পেয়েছি। ব্যক্তিগত তাগিদ থেকে আমি সেদিন গিয়েছিলাম। অন্ত্যেষ্টি ও স্মরণসভাতেও গিয়েছি। কে এল আর কে এল না, তা নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না। উনি আমার ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ দেখেছিলেন সেটা আমার কাছে পরম প্রাপ্তি। তারপর উনি যেটা বলেছিলেন সেটা প্রকাশ্যে বলতে আমার বাধো বাধোই লাগে।
মৃণাল সেন নাকি বলেছিলেন ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এর মতো ছবি গোটা বিশ্বে হয়নি?
বোধ হয়, দেশে হয়নি বলেছিলেন। বুদ্ধিদীপ্ত, ক্ষুরধার এই ধরনের কিছু শব্দও ব্যবহার করেছিলেন। কিছুদিন আগেই আমি পেপার কাটিংটা দেখলাম। মৃণালবাবুর ওই প্রতিক্রিয়ায় আমি বেশ অবাকই হয়েছিলাম।
এবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব বিতর্কে আসি...
(প্রশ্ন শেষ করতে না দিয়ে) অনেক তো হল। মানুষ বোর হয়ে যাবেন এই এক চর্বিতচর্বণ পড়ে। কারও পক্ষে বা বিপক্ষে নয়, আমার যা দৃষ্টিকটু লেগেছিল বলেছিলাম এবং আমার বক্তব্যে এখনও অনড় রয়েছি। যাক গে প্রশ্নটা করুন।
এই বিতর্কে আপনার কেরিয়ারে কতটা লাভ বা ক্ষতি হল?
আমার কোনও কেরিয়ার নেই, পুরোটাই টিফিন ক্যারিয়ার। ছোটবেলায় তাও ভাবতাম, এখন কিছুতেই কিছু যায় আসে না। ছবি করতে না দিলে করব না। তবে আমার মনে হয় না এমন মূর্খামি কেউ করবে। আমি কোনও বিপ্লব করিনি। যা মনে হয়েছে সেটা শরীরে মধ্যে রেখে বদহজম না করে মজার মোড়কে বলেছি। তাতে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়েছে। আমি বিচলিতও নই, আনন্দিতও নই।
এখন তো আপনি বিগ লিগে। পরের ছবি সুরিন্দর ফিল্মসের সঙ্গে...
নিসপাল সিং রানে আমাকে অনেক দিন ধরে বলছিলেন। অবশেষে পরের ছবিটা ওঁদের সঙ্গে করছি। বিগ লিগ টিগ নিয়ে ভেবে দেখিনি।
রমাপদ চৌধুরীর একটি গল্প নিয়ে ছবি করছেন শুনলাম। নাম দিয়েছেন ‘বরুণবাবুর বন্ধু’। কোন গল্প নিয়ে বানাচ্ছেন?
এই মুহূর্তে আমি নামটা বলতে চাই না। গল্পটা জেনে ফেললে মুশকিল আছে। তাতে ছবির মজাটা থাকে না। আশা করি, পাঠক কিছু মনে করবেন না।