পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
জেলার পুলিস সুপার ভি সলোমন নেশাকুমার বলেন, পাঁশকুড়া থেকে অসমে কাজ করতে যাওয়া দুই ব্যক্তি শনিবার রাতে খুন হয়েছেন। আমরা অসম পুলিসের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলছি। ঠিক কী কারণে খুন হয়েছেন তাঁরা, তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি। আমরা সমস্ত তথ্য জানার চেষ্টা করছি।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়ার গড়পুরুষোত্তমপুর এলাকার ঠিকাদার শেখ হাবিবুর অসমের বিভিন্ন জায়গায় ঠিকাদারির কাজ করেন। হাবিবুর সাহেবের হয়ে অসমের বিভিন্ন জায়গায় কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন শেখ মহম্মদ। অন্যদিকে, স্থানীয়ভাবে যোগাযোগ করে মাসখানেক আগে অসমে কাজে যান ইদ্রিশ সাহেব। তাঁরা অসমের তিনসুকিয়া জেলার দুমদুমা থানা এলাকায় কাজ করছিলেন। খুন হওয়া এই দুই ব্যক্তির সঙ্গে একই জায়গায় নির্মাণ কাজ করতেন শেখ মুস্তাকিন, গড়পুরুষোত্তমপুরের রহিম আলি, রানিহাটির শেখ সায়েদ আলি। তাঁরা সকলে একই ঘরে থাকতেন।
ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ স্ত্রী মুর্সিদা বিবির সঙ্গে কথা বলেন ইদ্রিশ সাহেব। সেই সময় তিনি জানান, রান্না করছেন। খাওয়ার পরে ফোন করবেন। এরপর রাত ৮টা থেকে বারবার ফোন করলেও ইদ্রিশ সাহেব আর ফোন ধরেননি। এদিন সকালে তাঁর বাড়িতে খুনের খবর আসে।
মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে প্রত্যেককে তাদের বাড়ি কোথায় তা জিজ্ঞাসা করে। এরপর পশ্চিমবঙ্গ ও মুসলিম শুনেই আচমকা আক্রমণ করে। গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ দিয়ে ইদ্রিশ সাহেব ও মহম্মদ সাহেবকে খুন করা হয়। সনুকে আক্রমণ করা হলেও তিনি কোনওমতে পালিয়ে বাঁচেন। তাঁর হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
এদিন সকালে এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। হতদরিদ্র ইদ্রিশ সাহেবের বাড়িতে পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। শেখ মহম্মদ সাহেবের চার ছেলে ও দুই মেয়ে। এদিন সকালে খবর পেয়ে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ফোনে দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এদিন সকালে মৃত ইদ্রিশ সাহেবের বাড়িতে যান জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান, জেলা পরিষদের নারী ও শিশুকল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ সুমিত্রা পাত্র, গোপালনগর পঞ্চায়েতের প্রধান অরুণকুমার হাজরা প্রমুখ। পুলিসও যায়।
ইদ্রিশ সাহেবের ভাই হামিদুল খান বলেন, দাদা এক মাস ন’দিন আগে অসমে গিয়েছিল। নাম ও পরিচয় জেনে শুধু বাঙালি মুসলিম বলেই ওদের খুন করা হয়েছে। আমরা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি চাই। মহম্মদ সাহেবের খুড়তুতো ভাই শেখ আহম্মেদ আলি বলেন, আমরাও জেনেছি, বাঙালি মুসলিম বলেই দুষ্কৃতীরা খুন করেছে।
সিরাজ সাহেব বলেন, অসমে এনআরসি নিয়ে বাঙালি খেদাও অভিযান শুরু হয়েছে। বেছে বেছে বাঙালিদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। বাঙালি হওয়ার ‘অপরাধে’ই পাঁশকুড়ার দুই হতদরিদ্র মানুষকে খুন করা হয়েছে।
অসমের দুমদুমা থানার ওসি মোহিনীমোহন কোচ অবশ্য বলেন, নির্মাণকাজ করা শ্রমিকদের মধ্যে ঝামেলার জেরে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। রান্না করার সময়ই রাজু গোর নামে এক শ্রমিক আচমকা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এর ফলে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত রাজু অসমের বাসিন্দা। তাকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।