পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
দলের অন্দরমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৌসম দলে ঢোকার পরেই তাঁকে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা হয়নি তা নয়। কিন্তু তৃণমূলের ঘরোয়া রাজনীতির গতি সম্পর্কে সচেতন নেত্রী শুরুতেই কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। একের সঙ্গে এক আলোচনায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, কাজের ভিত্তিতে তিনি মূল্যায়ন করবেন। তাঁর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক দিয়ে কোনও নেতার মূল্যায়ন হবে না। সবটাই মূল্যায়ন হবে লোকসভার ফলাফলের উপরে। দলের লিড পাওয়ার ভিত্তিতে লিডার নির্বাচন হবে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, খোদ তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলার বিরল সুযোগ, জেলা পর্যবেক্ষকের সঙ্গে রাজনৈতিক বোঝাপড়া, নিজস্ব ব্যক্তিত্ত্ব, দক্ষতা ও পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে বহুধাবিভক্ত শাসকদলকে আপাতত একঘাটে আনতে পেরেছেন মৌসম। তবে এই পরিবেশ ধরে রাখা কঠিন কাজ।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা উত্তর মালদহের প্রার্থী মৌসম নুর অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা কৌশলে এড়িয়েই গিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক নেতার নিজের কিছু মত থাকে। তা অন্যের সঙ্গে না মিললেই দু’জনের দ্বন্দ্ব আছে এমনটা বলে দেওয়া যায় না। তবে তৃণমূলস্তর থেকে আসা সমস্ত নেতৃত্ব, যাঁরা আমার কাছে এসেছেন তাঁদের বলেছি, কাজের মধ্যে দিয়েই একজন নেতা-নেত্রীর মূল্যায়ন হয়। যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাজের মধ্যে দিয়েই সর্বভারতীয় নেত্রী হয়ে উঠেছেন। জেলাতে, উত্তর মালদহে কাজের মানুষ কাজ করার সুযোগ পাবেন। যিনি দক্ষতার সঙ্গে তা পালন করবেন তিনিই নেতৃত্বের স্বাভাবিক দাবিদার। আগামী লোকসভা মালদহের রাজনীতিতে আমাদের বড় পরীক্ষা। সেখানে আমাকে এবং আমাদের নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে দেখাতে হবে। ঐক্যবদ্ধতা অনেক কঠিন পরিস্থিতি সামলে দিতে পারে।
মালদহ তৃণমূল কংগ্রেস মানেই জেলা থেকে ব্লক পর্যন্ত গোছা গোছা গোষ্ঠী। দলের রাজ্য নেতৃত্ব থেকে জেলা নেতৃত্ব পর্যন্ত তা বিলক্ষণ জানেন। এমনকী ধারাবাহিকভাবে তা আমজনতার সামনেও এসেছে নানা সময়ে। কিন্তু তৃণমূলের অন্দরমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারিতে মৌসম নুর দলে যোগ দেওয়ার পরেই গোষ্ঠী রাজনীতির ঝাঁঝ কমে গিয়েছে। বিশেষ করে ব্লকস্তরের গোষ্ঠীরাজনীতির দলপতিরা আচমকাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেছে। উপরতলার গোষ্ঠীপতিদের মধ্যে বিদ্বেষ মিটে গিয়ে গলাগলি শুরু না হলেও তাঁরাও পরিস্থিতি যাচাই করে পা ফেলতে চাইছেন। সেখানে একটা স্থিতাবস্থা তৈরি হয়েছে। এই বদলের অনকেটাই অবশ্য উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্রীক। তবে দক্ষিণ মালদহেও তার প্রভাব নেই এমনটাও নয়। সদ্য গাজোল, চাঁচল-১, হরিশ্চন্দ্রপুরের দু’টি ব্লকের মতো তীব্র গোষ্ঠীকোন্দলে জরাজীর্ণ এলাকায় মৌসমের সভাকে কেন্দ্র করে গোষ্ঠীপতিদের মধ্যে সৌহার্দ্যের বিরল ছবি দলের অনেককেই চমকে দিয়েছে।
মৌসম শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের নিচুতলায় মূলত ক্ষমতা ও পদাধিকার নিয়েই বিবাদের জায়গা তৈরি হয়েছিল। অতীতে জেলা রাজনীতির দখল রাখতে গিয়ে জেলা নেতাদের কেউ কেউ তাতে মদত দিতেন। মৌসম দলে আসার পরে উত্তর মালদহের নিয়ন্ত্রণ নেত্রী তাঁর হাতেই রাখতে চান এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। দলে কাজের ভিত্তিতে মূল্যায়নের কথাও মৌসম পরিষ্কার করে দিয়েছেন। এতে লোকসভা ভোট নিয়ে দলে প্রতিযোগিতার আবহ এসেছে। এতেই মালদহের শাসকদলের বহুচর্চিত গোষ্ঠী রাজনীতিতে রাশ পড়েছে।