পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
ঘটনার তিনদিন আগে থেকেই ছুটিতে ছিলেন বিধায়কের দেহরক্ষী প্রভাস দাস। তাছাড়া এই ঘটনার আগে ঘনঘন লোডশেডিং হয় এলাকায়। তারপরই এই ঘটনা ঘটে। ঘটনা পরম্পরা দেখে স্থানীয় বাসিন্দা, এমনকী পুলিসও নিশ্চিত, নিখুঁত পরিকল্পনা করেই এই খুন করা হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সুপারি কিলার দিয়ে বিধায়ককে খুন করা হয়েছে। ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা যাকে পালাতে দেখেছেন তাকেই মূল অভিযুক্ত ধরে নিলেও তার সঙ্গে আরও অনেকে ছিল বলে মনে করছে পুলিস। এই ঘটনায় ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নামেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এদিকে, বিধায়ক খুনের পর কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ হাঁসখালি থানার ওসি অনিন্দ্য বসুকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
রবিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিহত সত্যজিৎবাবুর বাড়িতে আসেন। তাঁর ফোন থেকে নিহত বিধায়কের স্ত্রী রুপালি হালদার বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রুপালি বলেন, দিদি বললেন, দোষীরা শাস্তি পাবেই। কেউ ছাড়া পাবে না। যারা এই কাজ করেছে, প্রত্যেকে গ্রেপ্তার হবে। তোমাদের পাশে আছি। রুপালি বলেন, রাজনৈতিক কারণেই আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছে। আমার স্বামী সবার ভালো করতেন। সবার বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতেন। যে খুন করেছে, সে তৃণমূল করতে করতে বিজেপিতে গিয়েছে। ওদের যেন কঠোর শাস্তি হয়।
শনিবার রাতে ফুলবাড়িতে নিজের বাড়ির কাছে সরস্বতী পুজোর মণ্ডপের পাশে খুন হন তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস(৪০)। বিধায়কের সঙ্গে থাকেন মিলন সাহা। ঘটনার পর তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন হাঁসখালি থানায়। রাতেই পুলিস দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের নাম সুজিত মণ্ডল ও কার্তিক মণ্ডল। তাদের বাড়ি ফুলবাড়িরই মজিদপুর পাড়ায়। ধৃত সুজিত বিজেপি কর্মী। অপর ধৃত কার্তিক মণ্ডল তৃণমূল সমর্থক। এ ছাড়াও, অভিজিৎ পুণ্ডারী, কালীপদ মণ্ডল ও খুনের ঘটনায় ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নাম রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেন, তাঁরা অভিজিৎকে পালাতে দেখেছেন। অভিজিৎ বগুলা কলেজের তৃণমূলেরই ছাত্র পরিষদ নেতা। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিধায়কের সঙ্গে তার মতবিরোধ হতো। একারণে বিধায়ক তাকে একাধিকবার চড় থাপ্পড় দিয়েছেন। গত তিন মাস আগে রাস্তার মাটি বিক্রি নিয়ে বিধায়কের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব বাধে। তবে দ্বন্দ্ব থাকলেও অভিজিৎ বিধায়কের সঙ্গে কথাবার্তা বলত। শনিবার সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিল সে। তার কিছু পরেই এই ঘটনা ঘটে। বিধায়কের ভাই সুজিত বিশ্বাসের অভিযোগ, অভিজিৎই খুন করে পালিয়ে গিয়েছে। ওকে এলাকার লোক ধরেও ফেলত, কিন্তু একটি লরি চলে আসায় সে পালাতে সক্ষম হয়েছে।
ঘটনার পর শনিবার রাতেই পুলিসের নদীয়া মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি বাস্তব বৈদ্য, জেলার পুলিস সুপার রূপেশ কুমার সহ অন্যান্য পুলিস কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। রাতেই ১০০ মিটার দূর থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। খুনের সময় ওই আগ্নেয়াস্ত্রই আততায়ী ব্যবহার করেছিল বলে পুলিসের দাবি। এদিন ভোরের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সিআইডির টিম। তারাও তদন্ত চালাচ্ছে। তিনদিন ধরে বিধায়কের দেহরক্ষী ছুটিতে থাকার সুযোগে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে বিধায়ককে খুনের ঘটনা ভাবাচ্ছে পুলিসকে।