পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
অপু ট্রিলজির শেষ ছবি ‘অপুর সংসার’ ১৯৫৯ সালে মুক্তি পেয়েছিল। সেই ছবিতে দেখা যায়, স্ত্রী অপর্ণার মৃত্যুর পর সংসারের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় অপু। কিন্তু শেষাংশে ফের অপু ফিরে আসে নিজের সন্তান কাজলের কাছে। বাবা ও ছেলের অনিকেত যাত্রার ইঙ্গিত দিয়েই অপু ট্রিলজি (পথের পাঁচালি, অপরাজিত ও অপুর সংসার) শেষ করেছিলেন সত্যজিৎ। কিন্তু মূল ‘অপরাজিত’ উপন্যাসে অপু ও কাজলের সম্পর্কের আরও দিক ধরা পড়েছে। তাদের কলকাতা ও নিশ্চিন্দিপুরের জীবন বর্ণিত হয়েছে। অপু ট্রিলজিতে না-দেখানো সেই অংশ নিয়েই ‘অভিযাত্রিক’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুভ্রজিৎ। চিত্রনাট্য তাঁরই লেখা। ইতিমধ্যে ওই চিত্রনাট্য পড়ে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বিভূতিভূষণের নাতি তথাগত বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রযোজনায় গৌরাঙ্গ ফিল্মস। এই সংস্থা অনেক বছর আগে ‘হারমোনিয়াম’, ‘সফেদ হাতি’র মতো তপন সিংহের ছ’টি বিখ্যাত ছবি প্রযোজনা করেছিল। রাজা সেনের ‘তিনমূর্তি’ ছিল এই প্রযোজনা সংস্থার শেষ বাংলা ছবি। এই ছবির নিবেদনেও রয়েছে চমক। প্রথম কোনও বাংলা ছবি নিবেদন করতে এগিয়ে এসেছেন বলিউডের প্রশংসিত পরিচালক মধুর ভাণ্ডারকর। তাঁর কথায় ‘একজন পরিচালক এবং সিনেমাপ্রেমী হিসেবে আমি সত্যজিৎ রায়ের ভক্ত। অপুর জার্নিটা আমাকে সবসময় আকর্ষণ করে। এই উদ্যোগে যুক্ত হতে পেরে ভালো লাগছে।’
বড় পর্দায় অপু মানেই প্রথম যে প্রশ্নটা জাগে, সেটা হল অপুর ভূমিকায় কে? যদিও এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন শুভ্রজিৎ। এখনই পুরো বিষয়টা তিনি খোলসা করতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘ধীরে ধীরে সবকিছু জানানো হবে। এখনও অনেক অভিনেতার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে।’ ‘অপরাজিত’ উপন্যাসের শেষাংশ অর্থাৎ ১৯৪০ সাল পর্যন্ত ফুটিয়ে তুলতে হবে। সেই সময়কার গ্রাম ও শহর কলকাতাকে নতুন করে সৃজন করার জন্য প্রচুর রিসার্চ ওয়ার্ক করেছে ইউনিট। বিভিন্ন অংশে রেইকি করা হয়েছে। কারণ এই ছবিতে অপু-কাজলের পাশাপাশি আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ‘সময়’। সময়কালকে ধরতে ছবি হবে সাদা-কালো। উপন্যাসে বেশ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলেও লীলাকে সত্যজিতের ট্রিলজিতে রাখা হয়নি। তবে, ‘অভিযাত্রিক’ এ পাওয়া যাবে লীলা চরিত্রটি। এছাড়াও থাকবে উপন্যাসের রাণুদি। পরিচালক বললেন, ‘দুর্গা ও অপর্ণা চরিত্র দুটিকেও কোনওভাবে পর্দায় দেখা যাবে।’
অপু ট্রিলজির সঙ্গে সত্যজিৎ রায় ছাড়াও আরও তিন মহান শিল্পীর নাম জড়িয়ে রয়েছে— ক্যামেরায় সুব্রত মিত্র, শিল্প নির্দেশনায় বংশী চন্দ্রগুপ্ত ও সঙ্গীত পরিচালায় পণ্ডিত রবিশঙ্কর। এ বিষয়ে পরিচালকের বক্তব্য,‘ওই চারজন তো আমাদের কাছে শিক্ষক স্থানীয়। তাঁদের কাজ দেখে আমরা শিখি। যতই বলি, আমার ছবি আলাদা, ট্রিলজির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তবুও জানি দর্শক তুলনা করবেন। তাই নিয়ে পুরো টিমের খুব টেনশন।’ শুভ্রজিতের এই ছবিতে বেশ কয়েকটি ঋতু ধরা পড়বে। তাই সামনের বৈশাখে অর্থাৎ গ্রীষ্মের শুরু থেকেই ‘অভিযাত্রিক’-এর শ্যুটিং শুরু করতে চান পরিচালক।