প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
বিখ্যাত রসায়নবিদ লুই পাস্তুর (জলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কর্তা হিসেবে যিনি পরিচিত) ১৮৯০ সালে ক্যালমেটের সঙ্গে দেখা করেন। বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ নিয়ে সেসময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন ক্যালমেট। তাঁর কাজ মুগ্ধ করে পাস্তুরকে। ভিয়েতনামের হো চি মিন শহরে (সায়গন নামেও পরিচিত) জলাতঙ্ক ও গুটিবসন্তের টিকাদান প্রচারাভিযান চলছিল। সেই অভিযানে অংশ নিতে ক্যালমেটকে অনুরোধ করেন পাস্তুর। রাজি হন তিনি। হো চি মিনে গিয়ে নাজা নাজা সাপের (ভারতীয় কোবরা) প্রাণঘাতী ক্ষমতার বিষয়ে জানতে পারেন ক্যালমেট। তারপর সাপের কামড়, বিষ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। ১৮৯১ সালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন ক্যালমেট। সাপের বিষক্রিয়া ও তার প্রতিরোধক হিসেবে বেশ কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে তাঁর যে পরীক্ষা, সেই বিষয়টি তুলে ধরেন গবেষণাপত্রে। আরও তিন বছর সাপের বিষ নিয়ে বিশদে পড়াশোনা করেন তিনি। সঙ্গে চলে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ১৮৯৪ সালে খরগোশের মধ্যে একটি অ্যান্টি কোবরা সেরাম সফলভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম হন ক্যালমেট। এই পরীক্ষার জন্য হেনরি সেওয়াল নামক একজন বিজ্ঞানীর সাহায্য নিয়েছিলেন তিনি। খরগোশের দেহে এই সেরামটি কাজ করলেও মানুষের ক্ষেত্রে তা তেমন ফলপ্রসূ হল না। চিন্তায় পড়লেন ক্যালমেট। এরপরের বছর, ১৮৯৫ সালে সেই যুগান্তকারী পদক্ষেপ বিলেন তিনি। সাপের বিষ সংগ্রহ করে সেটি ঘোড়ার শরীরে প্রবেশ করিয়ে তৈরি করা হল প্রতিষেধক। অর্থাৎ ঘোড়ার দেহের রক্তে তৈরি হওয়া বিষ প্রতিরোধক প্রক্রিয়াজাত করে মানুষের দেহে প্রয়োগ করা হল। তৈরি হল সাপের বিষের ওষুধ— অ্যান্টিভেনাম। বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা বিজ্ঞানে সাড়া ফেলে দিলেন ক্যালমেট। এরপর বিভিন্ন দেশে নানা পরীক্ষা হয়েছে। প্রক্রিয়াগত কিছু বদল এসেছে। ঘোড়ার পাশাপাশি ভেড়ার সাহায্যেও অ্যান্টিভেনাম তৈরি করা হয় অনেক ক্ষেত্রে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাপের বিষে মানুষের মৃত্যুহার কমাতে আরও নানা পরীক্ষা হচ্ছে দেশ তথা বিশ্বজুড়ে।
লিখছেন শান্তনু দত্ত