নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: বেনজিরভাবে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জীবদ্দশাতেই তাঁর আবক্ষ মূর্তির উন্মোচন করেছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু। গোধরায়, ১৯৪৯ সালে। দেশ গঠনে তাঁর অবদান যেন দেশবাসী ভুলে না যায়, সেই জন্যই মূর্তি প্রতিষ্ঠা বলে লিখে গিয়েছেন স্বয়ং নেহরু। আজীবন কংগ্রেসি সেই প্যাটেলের জন্মদিন ৩১ অক্টোবরকে জাতীয় একতা দিবস হিসেবে পালন করে মোদি সরকার। কেন? ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুদিনটিই ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। স্পষ্ট ভাষায় এই অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, সেই কারণেই গুজরাতের ভূমিপুত্র প্যাটেলকে সামনে রেখে রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে গেরুয়া শিবির। বৃহস্পতিবারও কংগ্রেস মনে করিয়ে দিয়েছে, প্যাটেল কিন্তু আসলে বিজেপির নয়, কংগ্রেসের লোক। শুধু তাই নয়, প্যাটেল প্রসঙ্গে বিজেপিকে সরাসরি সাম্প্রদায়িক বিভাজন নিয়ে খোঁচাও দিয়েছেন জয়রাম রমেশ, পবন খেরার মতো কংগ্রেস নেতারা। গোধরায় বল্লভভাইয়ের মূর্তি উন্মোচনের প্রসঙ্গ এবং ছবি এক্স হ্যান্ডেলে টুইট করেছেন জয়রাম। সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘যারা আজ যারা লৌহপুরুষ প্যাটেলকে সম্মান জানানোর কৃত্বিত্ব নিতে চাইছে, তাদের আদর্শগত গুরু (ইঙ্গিত আরএসএস) ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরোধিতা করছিল। প্যাটেলের নেতৃত্বে যে সংবিধান কমিটির প্রস্তাবের বিরোধিতাও করেছিলেন তাঁরা (এম এস গোলওয়ালকর)। আজ সেই দলই সর্দার বল্লভভাইকে শ্রদ্ধা জানাতে উঠেপড়ে লেগেছে! আত্মবিশ্বাসের অভাব আর দ্বিচারিতা ঢাকার মরিয়া চেষ্টা।’ পাশাপাশি, চাঁচাছোলা ভাষায় পবন খেরার সমালোচনা, ‘কিছুদিন আগে পর্যন্তও বল্লভভাইয়ের সমালোচনা করে প্রচার পুস্তিকা বের করেছে আরএসএস। সঙ্ঘিদের (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ) একসময় কড়া শাসনে রেখেছিলেন প্যাটেল। তাই আজ সেই আজীবন কংগ্রেসির সামনে নতমস্তক সঙ্ঘিরা।’
অন্যদিকে, বিষাদের সঙ্গে হলেও ইন্দিরার ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে ফের ভারতের একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্ব তুলে ধরল রাহুল গান্ধীর দল। ভারতকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে প্যাটেলের দেখানো ভালোবাসা আর ভ্রাতৃত্ববোধের পথই আমাদের আদর্শ বলে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন রাহুল। আবার দেশকে অখণ্ড রাখতে ঠাকুরমার আত্মবলিদানের প্রসঙ্গও টানলেন। তবে, সবকিছু ছাপিয়ে গেল দুই শিবিরের বল্লভভাই-তরজা। কারণ, সামনেই যে গুজরাত সহ দেশের ১৫ রাজ্যের ৫০ কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন!
সর্দার প্যাটেলকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।