মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
চীনের গণ্ডি পেরিয়ে ভারতের মাটিতে এসে উপস্থিত হয়েছে নোভেল করোনা ভাইরাস। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ জটিল দিকে মোড় নিচ্ছে। উদ্বিগ্ন দেশের স্বাস্থ্য মহল। এমন খবরে গৃহস্থ বাড়িতে শিশুর অভিভাবকদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে সদ্য প্রকাশিত নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনের দিকে নজর দিলে অবশ্য অভিভাবকদের ভয় অনেকটাই দূর করা সম্ভব। এই জার্নালে বলা হয়েছে, সৌভাগ্যবশত বাচ্চারা নোভেল করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রেহাই পাচ্ছে। আর যে বাচ্চারা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, তাদেরও অসুখ খুব একটা জটিল দিকে মোড় নিচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে জার্নালে বলা হয়েছে, বড়দের মতো বাচ্চাদের ডায়াবেটিস, অ্যাজমা বা অন্যান্য ক্রনিক রোগ সাধারণত থাকে না। তাই বাচ্চারা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হচ্ছে। অর্থাৎ বাচ্চাদের ইমিউনিটি এই অসুখের প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে বলে এই গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে। তবে এই নিশ্চিন্ত চিত্রটা যে কোনও মুহূর্তে বদলে যেতে পারে। তাই সতর্ক হওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।
নোভেল করোনা ভাইরাসটি মূলত নাক-কান-গলার মতো আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্টে আঘাত আনে। তবে অনেকসময় এই ভাইরাস থেকে ফুসফুসে ভাইরাল নিউমোনিয়া হতেও দেখা যাচ্ছে। রোগটি এই পর্যায় পৌঁছালে সমস্যা সবথেকে জটিল আকার নেয়।
রোগ লক্ষণ ও নির্ণয়
নোভেল করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে সাধারণ ফ্লু-এর মতোই লক্ষণ দেখা যায়। এক্ষেত্রে হাঁচি, কাশি, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, হালকা জ্বর, বমি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। বড় বাচ্চারা অবশ্য এই সমস্ত সমস্যার কথা মুখেই জানাতে পারে। অন্যদিকে একদম ছোট বাচ্চারা মুখে অভিযোগ করতে না পারলেও সারাদিন কান্নাকাটি, ঘ্যানঘ্যান করতে থাকে।
মোটের উপর ভাইরোলজি টেস্ট করিয়েই এই রোগ সম্বন্ধে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব। তবে যে কোনও বাচ্চা এমন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসলে ভাইরোলজি টেস্ট করাতে হবে— এই পরিস্থিতি এখনও আমাদের এখানে হয়নি।
চিকিৎসা
এখানে প্রথমেই বলে রাখা দরকার, নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মানেই সব শেষ নয়। বরং এই ভাইরাস আক্রমণের পরও অধিকাংশ মানুষই সুস্থ হয়ে যান। তবে এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা এখনও নেই। রোগের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হয়। যেমন— জ্বর হলে জ্বরের চিকিৎসা, বমি হলে বমির চিকিৎসা ইত্যাদি। এছাড়া প্রচুর জলপান করা, বিশ্রামে থাকা প্রয়োজন। বাচ্চাটিকে আলাদা রাখা দরকার।
রোগ প্রতিরোধ
বাচ্চারা নোবেল করোনা ভাইরাসের কবলে পড়লে সমস্যা বেশ গুরুতর রূপ ধারণ করতেও পারে। তাই রোগ প্রতিরোধেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে—
নিয়মিত সময়ান্তরে ভালো করে বাচ্চার হাত ধুয়ে দিতে হবে।
বাচ্চারা যাতে কথায় কথায় চোখে, মুখে, নাকে হাত না দেয়—এই বিষয়টি খেয়াল রাখা দরকার।
অন্তত এই নির্দিষ্ট সময়কালে বাচ্চাকে নিয়ে ভিড়ে না যাওয়াই ভালো।
মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।
সর্দি-কাশির সমস্যায় ভোগা মানুষের থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখতে হবে।
আর বাচ্চার শরীরে এমন কোনও উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসকের কাছে আসা চাই।