মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
‘তামাক ক্যান্সারের কারণ’— সিগারেট, খৈনি, পান মশলা সহ যে কোনও তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটের গায়ে লেখা থাকে এই সতর্কবাণী। তবে সবকিছু জেনে শুনেও অনেকেই এই কথাগুলির কোনও মান দেন না। তাঁদের বাড়ির লোক প্রতিনিয়ত নেশা ছাড়তে বললেও তিনি নেশা ছাড়তে রাজি নন! এছাড়াও অপর একটি দল রয়েছে। এই দলের মানুষজন নেশা ছাড়তে চাইলেও ছাড়তে পারছেন না। তবে এই মারণ নেশা থেকে মুক্তি কোথায়? হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাবিজ্ঞানের অবশ্য দাবি, হোমিওপ্যাথিতে রয়েছে এই সমস্যা সমাধানের মোক্ষম দাওয়াই।
প্রথমত বুঝতে হবে যে তামাকজাত দ্রব্যের সেবন থেকে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। এরমধ্যে ক্যান্সার হল সবথেকে উল্লেখযোগ্য সমস্যা। এক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যান্সার, মুখের ক্যান্সার, খাদ্যনালীর ক্যান্সার, ব্লাডার ক্যান্সার, রেক্টাম ক্যান্সার হতে পারে। তবে এখানে মনে রাখাতে হবে, তামাক সেবন করলে ক্যান্সার বাদেও আরও হাজারো সমস্যা হতে পারে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য সমস্যাগুলি হল— হার্ট অ্যাটাক, ইস্কিমিয়া (হৃদ্গতির ছন্দপতন), স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, অ্যানিউরিজম অব অ্যাওটা, পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ, ছানি, গ্লকোমা, ডিমেনশিয়া, ফার্টিলিটি কমে যাওয়া ইত্যাদি। আবার মেয়েদের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য সেবনের ফলে প্রি-ম্যাচিওর বাচ্চার জন্ম দেওয়া, বাচ্চার ক্লেপ প্যালেট সহ আরও বেশকিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
এক্ষেত্রে চিকিৎসার প্রথম ধাপে নেশায় আসক্ত ব্যক্তিকে নেশা থেকে দূরে সরে আসতে হবে। অর্থাৎ প্রথমে নেশা বন্ধ করা চাই। নেশা বন্ধ করার পরই শুরু হবে ক্রেভিং। অর্থাৎ মস্তিষ্ক বারেবারে নেশা করার ইচ্ছা প্রকাশ করবে। এই নির্দিষ্ট সময়ে নেশা না করলে শুরু হয়ে যাবে উইথড্রল সিনড্রোম। নেশায় আসক্ত ব্যক্তি অভিযোগ করতে পারেন তাঁর পায়খানা হচ্ছে না, পেট ফেঁপে আছে, বুক ধড়ফড় করছে, মনঃসংযোগের অভাব, কোনও কিছু ভালো লাগছে না ইত্যাদি নানা সমস্যার কথা। এখানেই শুরু হবে আসল চিকিৎসা। এই পর্যায়ে ওষুধ এবং কাউন্সিলিং এই দুইয়ের মেলবন্ধনে কাজ করতে হবে।
ওষুধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল— ট্যাবেকাম, ফসফরাস, ক্যালাডিয়াম, লোবেলিয়া ইনফ্লেটা, আর্সেনিক অ্যালবাম কোকা ইত্যাদি ওষুধগুলি উইথড্রল সিনড্রোমের বিরুদ্ধে কাজ করে। এছাড়া নাক্স ভোমিকা ওষুধটি এই নির্দিষ্ট সময়ে ভীষণ কার্যকরী। খুব সিগারেট পান করার অভ্যেস থাকলে স্ট্যাফিসাগ্রিয়া, ড্যাফনি ইন্ডিকা ওষুধগুলি দেওয়া হয়ে থাকে। তবে এই ওষুধগুলির বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়। তাই সবার প্রথমে একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কাউন্সিলিং-এর মাধ্যমে তাঁর প্রতি সহমর্মিতা এনে বোঝাতে হবে সিগারেট ছাড়ার নানা উপকারিতা সম্বন্ধে। তাঁকে প্রতিনিয়ত তামাক ছাড়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
তবে অনেকসময় এত কিছুর তামাকের নেশা ছাড়তে পারেন না। তখন রিহ্যাবে গিয়ে চিকিৎসা করতে হবে।