Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ছোট গল্প
উত্তরসাধক
মানস সরকার

বাড়ি থেকে বেরনোর মুখেই ফোনটা এল। দো-পাট ধুতির কোঁচাটা কোমরে বাঁ-হাতে দিয়ে আর একটু তুলে ডান হাত দিয়ে হাফহাতা পাঞ্জাবির বুক পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে কানে দিল গৌরদাস।
—দাদা, নমস্কার। ফ্রি-ফাউন্ডেশন থেকে অভীক বলছিলাম।
চিনতে পারল সঙ্গে সঙ্গেই। অভীক বলে এই ছোকরার সঙ্গে গৌরদাসের আলাপ হয়েছিল চন্দননগরে একটা বারোয়ারিতে গত বছর জগদ্ধাত্রী পুজোর অনুষ্ঠানে গাইতে গিয়ে। একটা এনজিও চালায়। বেশ কয়েকজন কম বয়সের ছেলেমেয়েকে জুটিয়ে নানা সেবামূলক কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ সাড়া ফেলেছে। গৌরদাসের বাউলগানে মুগ্ধ হয়ে নিজেই এগিয়ে এসে আলাপ করেছিল। দাসপাড়ায় গৌরদাস একমাত্র বাউল। তার খ্যাতি জেলা-রাজ্য-দেশ ছাড়িয়ে এখন বিদেশের মাটি ছুঁয়েছে। নিজের গানের কথা সে দিনের পরিচয় যত না বলেছিল গৌরদাস, তার চেয়ে বেশি ছিল তার এই দাসপাড়া গ্রামের কথা। তিরিশ ঘর আদিবাসীর কথা। শুনে বেশ উৎসাহী হয়ে এখানে এসে কিছু দেওয়ার কথা বলেছিল ছেলেটা। সরস্বতী পুজোয় মগরায় আবার ছেলেটার সঙ্গে দেখা হলেও এ নিয়ে আর কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। গৌরদাসও না। ছেলেটাই বলেছিল, খুব তাড়াতাড়ি আবার দেখা হবে। মাঝখানে এই ভাইরাস আর লকডাউনের ঝামেলা হওয়ায়, আর যোগাযোগ হয়ে ওঠেনি।
কপালে জমা ঘামটা সুড়সুড় করছিল গৌরদাসের। গলায় তাও একটু মিঠাভাব এনে বলল, —বলো গো, আছ কেমন?
—আর কেমন, একটু অমায়িক হওয়ার চেষ্টা করল অভীক,—যা চলছে। শোনো না দাদা, সামনের সপ্তাহে ভাবছিলাম, একবার তোমার গ্রামে আসব। কয়েকটা বাচ্চাকে পুজোর কিছু জামা-কাপড়, স্যানিটাইজার আর মাস্ক বিলি করব ভাবছিলাম।
নিজে থেকে কোনও ব্যাপারে যোগাযোগ করার অভ্যাসটা কোনওকালেই নেই গৌরদাসের। এখন নাম করা বাউল হয়েছে বলে নয়। কোনওদিনই করত না। সে গাইতে যাওয়া হোক বা সুযোগ সুবিধার ব্যাপারে ধরা-করা। তার ওসব আসে না। ছোকরার কথার দাম আছে দেখে সে খুশিই হল ভেতরে। বলল—তা এসো না। এখন তো আমার সে রকম আসর-টাসরও নেই। বলতে গেলে ফাঁকাই আছি।
—তাহলে তো ভালোই হল। আমি টাকা-পয়সা পাঠিয়ে রাখছি। ওখানে সেদিন ওই তিরিশটা ফ্যামিলিকে দুপরে একটু খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করে রাখো।
ঘামটা কপাল থেকে চুঁইয়ে নাকে আর চোখে এসে ঠেকছিল। বাঁ হাত দিয়ে সেটা পুঁছে নিল গৌরদাস—ঠিক আছে। হয়ে যাবে। তোমরা এসে তাহলে এখানেই খাওয়া-দাওয়া কোরো সে দিন। ক’জন আসবে?
 —ওই তো ধর না, ড্রাইভার নিয়ে চারজন।
—বেশ। তাহলে রোববার ব্যবস্থা করি?
—করো। আর...ইয়ে একটু গানটান হবে তো?
হাসি পেল গৌরদাসের। গান কি সব সময় ঠোঁটে আসে। অথচ সে জানে গান তার সব সময় ভেতরে ভেতরে চলে। কাউকে বোঝানো যাবে না। মুখে বলল আগে এসো তো। সে নয় হবে খন।
ফোনটা পাঞ্জাবির বুক পকেটে রেখে এবার সে বউকে হাঁক পাড়ল,—বাসন্তী তোমার ছোট ছেলেকে এবার তুলে দাও। বেলা তো ভালোই হল?
গৌরদাস আর বাসন্তীর আসলে একমাত্র ছেলে প্রতুল। প্রতুলের ছেলেকে বাসন্তী আদর করে ছোট ছেলে বলে। ঠাকুরমা’র অতিরিক্ত আদরে নাতি যে বিগড়াচ্ছে বিলকুল বোঝে গৌরদাস। বছর ষোলোর কুশলের পড়াশোনার নামগন্ধ নেই। পাশের গ্রামের ধানকুলি হাইস্কুলে ক্লাস টেনে পড়লে কী হবে, এখনও মাঠে ঘাটে ঘুরে তার দুষ্টুমির শেষ নেই।
মুখ গম্ভীর করে বাসন্তী বলল,—একটু ঘুমচ্ছে, ঘুমোক না। তোমাদের যে কেন এত মাথা ব্যথা।
ছোট করে শ্বাস ফেলল গৌরদাস। রাত পর্যন্ত ছেলের মোবাইল ফোন ঘাঁটে নাতি মাঝে মাঝে। কখনও সেখানে আঙুল টিপে টিপে কী সব খেলে। কখনও গানের ছবি দেখে। তার মানে, কাল রাতেও তাই করেছে। বাসন্তীও জানে। অথচ এ নিয়ে টুঁ শব্দটা করে না।
সেই কোন ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গৌরদাসের। চরণ বাউলের আখড়ার দিনগুলো। সপ্তাহে তিনদিন করে তো যেতই। পাশের ‘সওনাগ্রাম’ দাসপাড়া থেকে মাইল দেড়েক তো বটেই। ভোরের বেলা খালি পায়ে গুরুর শেখানো ধ্বনি আর বুলি বাতাসে মিলিয়ে দিতে দিতে হাঁটা। সাতটা নাগাদ পৌঁছে যেত আখড়ার আটচালায়। গুরুমা আখের গুড় মেখে মুড়ি দিতে কলাইয়ের বাটিতে। আটচালার চালাতে গাঁজার হালকা গন্ধ মেখে সে মুড়ি খেতে অমৃত লাগত। তারপর কাঁসার লোটা থেকে গলায় জল ঢেলে শান্ত হয়ে বসা। কিছুক্ষণ পর পাশের কুঠি থেকে এসে আটচালায় বসতেন চরণ। নিজে ধরতেন দো-তারা। পায়ে মাঝে মাঝে বাঁধতেন ঘুঙুর। ওই গ্রামেরই অভয় রুই ধরত হারমোনিয়াম। সে খোমকা, খঞ্জনি, একতারা—সবই বাজাতে পারত। অভয় রুইয়ের কাছেই তো গৌরদাসের এত কিছু বাজাতে শেখা। গুরু অভয়কে বলতেন সুরের দরবেশ। সুর, ধ্বনি আর রেওয়াজে হারিয়ে যেত বেখেয়ালে সে।
ছেলে বড় হলে প্রতুলকে নিজের কাছে বহুবার বসাতে চেয়েছে। ছেলে বোল বুঝতে চাইত না। সুর, শব্দ থেকে দূরে পালাত। পড়াশোনাটাও ঠিক করে শেষ করল না। বিরক্তি প্রকাশ করত বাসন্তী। জোর করেনি গৌরদাস। এ জোর করার নয়। জড়িয়ে নেওয়ার জিনিস।
অনুষ্ঠানের বায়না জমে উঠতে দাসপাড়ায় মিষ্টির দোকান দিইয়েছিল প্রতুলকে। টিভি শো বা বিদেশ যেতে শুরু করলে প্রতুল বর্ধমান শহরে ইয়া বড় স্টোর রুম দিয়েছে। দু’বার সেখানে গেছে গৌরদাস। এলাহী ব্যাপার। সরু চাল, ডাল, গন্ধ তেল, মেয়েদের মাথার রকমারি মেকআপ—সব এক ছাদের তলায় ঠান্ডা হাওয়ায়। মোবাইলে টাকা। গোটা দোকান ঘরটায় কেমন সুন্দর গন্ধ। তবে কৃত্রিম।
অথচ সে নিজে এত শো করেও দোপাট্টা ধুতি পরে, টেপা মোবাইলে কথা বলে আর লাল সুতোর বড় বিড়ি খায়। লম্বা শ্বাস ফেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে গৌরদার।
খিচুড়ি আর চচ্চড়ির গন্ধ ভেসে আসছিল ক্লাবঘর থেকে। রান্না ওখানেই হচ্ছে। ক্লাবের সামনের বারান্দায় খাওয়ানো হবে। এখানকার কাজ আপাতত শেষ। কাজ বলতে মাস্ক, স্যানিটাইজার আর পুজোর জামাকাপড় বিলি। তিরিশ ঘর আদিবাসীর খান পঞ্চাশেক ছেলে-মেয়ে। অভীক কথা রেখেছে। সবাইকে জিনিসগুলো দিতে পেরেছে। একটা বাচ্চাও ফেরত যায়নি। খুব আনন্দ হচ্ছে গৌরদাসের।
বারান্দায় পাতা একটা কাঠের চেয়ারে বসে সে পুরো ব্যাপারটা এতক্ষণ দেখেছে। এবার উঠে দাঁড়িয়ে অভীককে বলল,—খাওয়া হতে হতে তো দুপুর গড়িয়ে যাবে। তখন নয় ফেরত এসো। এখন চল, গিয়ে একটু আমার সাধনমন্দিরে জিরিয়ে নেবে।
ভাদ্রমাসের তাপে ছেলেটার ফর্সা মুখটা একেবারে পাকা কামরাঙার মতো লাগছে। সঙ্গের আরও দু-তিনজনও ঘেমে নেমে একসা। গৌরদাসের কথায় মনে হল সবাই বেশ স্বস্তি পেল।
রাস্তায় হাঁটার সময় রুমালে মুখ মুছে অভীক বলল, দাদা, দু-এক কলি হবে না আজ?
একটু অন্যমনস্ক ছিল গৌরদাস। সাত সকালেই পুজোর দুটো অনুষ্ঠানের কথা বানচাল হয়ে গেল। অনেকগুলো টাকার ব্যাপার ছিল। পরশুই অনাদি ফোন করেছিল। গৌরদাসের দলে বাঁশি বাজায়। গলসিতে থাকে। নতুন বিয়ে করেছে। টাকার খুব দরকার। ঠিক করেছিল, বরাত পেলে থোক কিছু টাকা দিয়ে দেবে। সুর যে খুব ভালো তোলে এমন নয়, কিন্তু প্রাণ ঢেলে কাজ করে। গৌরদাসের হাতে তৈরি হলেও এরা শুধু অনুষ্ঠান বোঝে। সুরে ভাসা জানে না। সুরসাধক তৈরি করতে চায় সে। কিন্তু দুনিয়ার নিয়ম বদলাচ্ছে। বাউলগানকে সে দেশে-বিদেশে পৌঁছে দিয়েছে। টাকার জোগানটাও খুব দরকার। শুকনো হাসল গৌরদাস,—গান কি আর রোজ হয়? প্রাণে থাকলেও ঠোঁটে আসে না যে।
অভীকের মুখটা ম্লান লাগল। এতটা পথ উজিয়ে এসেছে কষ্ট করে। টাকা খরচ করে গ্রামের লোকেদের দানধ্যান করল। ব্যাপারটা বেশ লেগেছে গৌরদাসের। আনন্দ পেলে সঙ্গীত আসা উচিত। অথচ সুরে ডুবকি দিতে আজ যে কেন পারছে না, কে জানে!
হাঁটতে হাঁটতেই আশপাশেই ঘরের টিনের চালায় ঝোলানো হাঁড়ি দেখিয়ে সঙ্গের মেয়েটা অভীককে জিজ্ঞাসা করল,—এগুলো কী?
অভীক তাকাল গৌরদাসের দিকে। ঠোঁটের কোণ মৃদু হাসি এনে গৌরদাস বলল—দিদিমণি, ও হল গিয়ে পায়রার ঘর। দেখ ঠাওর করে, কলসিগুলোয় সাদা নোংরা লেগে আছে।
—এভাবে রাখা হয় পায়রাদের! শহুরে মেয়েটা আশ্চর্য হল।
ভাসা গলায় গৌরদাস বলল,—আমরা তো প্রাণের গান গাই। এ দেহে প্রাণ পাখিকে মুক্ত করে গাইতে হয়। গ্রামের লোক সব আমার শ্রোতা। গুরু সাঁই বলতেন পোনা। তা পোনারাও শুনে শুনে বুঝে গেছে, পাখিদের খুলে রাখতে। সব পায়রাগুলো সন্ধেবেলায় ফেরত আসে। আবার ভোরে চলে যায়। মেয়েটা ফোনে একটা ছবি তুলল কলসিগুলোর।
গোপাল টুডু আর মঙ্গল হাঁসদা গোপালের উঠোনে উবু হয়ে বসে তালগাছের কাঠের শির থেকে সরু তারের সুতো ছিলে গোল গোল গিঁট পাকিয়ে বক ধরার ফাঁদ তৈরি করছে। এবার সে দিকে চোখ আটকে যায় মেয়েটার। দু-তিন দিক থেকে ছবি তোলে মোবাইলে। মঙ্গল আর গোপাল কালো মুখে সাদা দাঁত বের করে হাসতে থাকে। ওদের দিকে খেয়াল করে না মেয়েটা। এগিয়ে যায়।
আটচালায় বসে অভীক আর তার সঙ্গীরা যেন শান্তি পেল। মাস্ক খুলে পাশে রেখে হাত-পা ছড়িয়ে ওরা বসেছে সবাই। চড়া রোদের তাপে যেন ওরা ভাজা ভাজা হয়ে গেছে প্রত্যেকে। বড় রাস্তার মোড়ের দোকান থেকে কোল্ড ড্রিঙ্ক আর মিষ্টি আনিয়েছিল গৌরদাস। নাতি নেই। কোথায় যেন বেরিয়ে গেছে। নিজে হাতে সেগুলো বয়ে এনে সবার হাতে দিল। খাওয়ার পর সবাইকে পানীয় সেবা করতে বলে গৌরদাস এসে বসল অভীকের সামনে। ধুতির গেঁজ থেকে বের করল বিখ্যাত লাল সুতোর বীরভূমি লম্বা বিড়ি। ধোঁয়া ছেড়ে দেওয়ালে টাঙানো গুরুর ছবির দিকে তাকাল। গুরু বলতেন, স্বরঅঙ্গে প্রকৃতির ছোঁয়া দিবি বাপ। গুরু দেহ রেখেছেন। দুটো পয়সার মুখ দেখলেও গুরুকে মেনে আজও সিগারেট ছোঁয় না গৌরদাস।
কোল্ড ড্রিঙ্কের প্লাস্টিকের গ্লাসে চমুক দিয়ে অভীক চালায় টাঙানো একতারা আর দোতারার দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করল,—তাহলে একান্তই হবে না দাদা আজ?
টানা বিড়ির ধোঁয়াটা নাক দিয়ে এক টানা ছেড়ে অভীকের দিকে তাকাল গৌরদাস। বাকিরা কোল্ড ড্রিঙ্কে চুমুকের ফাঁকে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে বুঝতে পারছিল। বলল—আজ ক্ষেমা দাও ভাই আমার। আজ যেন পরাণপাখি গলায় মেলছে না।
পানীয় শেষ করে বাঁ হাত তুলল অভীক, না, না দাদা। হতেই পারে। আমরা তো দিয়েই খালাস। কিন্তু সব ব্যবস্থা তো আপনি করলেন। বড্ড খাটনি গেল আপনার। গাওয়ার মুড না থাকাটা খুব স্বাভাবিক। এত ভেতর থেকে গান আপনি...
—না গো ভাই। গান তো আমি সব সময় গাই। মানুষের কানে যায় না এই যা। গুরু বলতেন, ওটা বীজমন্ত্রের মতো ভেতরে ধ্বনি তোলা চাই। ঠোঁট পর্যন্ত আনাটাই কষ্ট। শরীর ছাড়ছে না সুর আজ।
অন্য সবাই ঘাড় নেড়ে সমর্থন করল। অভীক বলল, —না, না, দাদা। আপনি বরং একটু রেস্ট নিন।
—নেব। তোমরা যাওয়ার পর।
—আচ্ছা দাদা, কিছু মনে করবেন না। আপনার ছেলে গান গায়?
খুব গরম করছে গৌরদাসের। বিড়িটা একটা প্লাস্টিকের গ্লাসে ঠেসে ধরে বলল,—না। সে অবশ্য খুব বড় ব্যবসাদার হয়েছে।
অভীক বলল, বাঃ! সেটা হওয়াও আজকের যুগে সহজ নয়।
ক্লাবের সামনে দাঁড় করানো গাড়িটায় অভীকদের যখন তুলে দিল গৌরদাস তখন সূর্য পশ্চিমে অনেকটা হেলে পড়েছে। ক্লাবের বারান্দায় নিজে বসে ওদের খাইয়েছে। গরম খিচুড়ি, চচ্চড়ি আর চাটনি। ওদের আওয়াজ করে খেতে দেখে বেশ তৃপ্তি পাচ্ছিল। গাড়িটা ধুলো উড়িয়ে দাসপাড়ার গলিটা বেঁকতেই কেমন যেন পুরো এলাকাটা নীরব হয়ে গেল আবার।
ধূসর আলোর মধ্যে ক্লান্ত পায়ে হেঁটে বাড়ির দিকে আসছিল গৌরদাস। গোপালের বাড়ির উঠোনে চোখ পড়তে দাঁড়িয়ে গেল। নাতি কুশল ঝুঁকে পড়েছে গোপাল আর মঙ্গলের পাশে।
—এসব কী যে কর কাকা! দাদু বলে পাখিকে বাঁধতে নেই তারে। এই তালের তার টান করে বাঁধলে মনের টঙে কত উঁচুতে সুর ওঠে, জানো?
গৌরদাস কান খাড়া করে শুনল এক কিশোরের গলা এই শেষ বিকেলে ভীষণ উদাস শোনাচ্ছে। গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। আর দাঁড়াল না সে। হন হন করে হাঁটার ফাঁকে শুধু দেখল, হোগলা বনের পিছনের মরা আলোর সূর্যটাকে আজ অনেকদিন পর খুব উজ্জ্বল লাগছে...
অলঙ্করণ: সোমনাথ পাল
03rd  October, 2021
অপারেশন ৭১: পর্ব ৪
রেডিও সিগন্যাল
সমৃদ্ধ দত্ত

১৫ জুন ১৯৭১। ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এস এম নন্দা পলাশির ক্যাম্প পরিদর্শনে এলেন। তিনি এবং ভারত সরকার একটা সাংঘাতিক কঠিন বাজি হাতে নিয়েছে। যদি ভারতীয় নৌবাহিনীর কমান্ডোদের এই কাজটির জন্য পাঠানো হতো, তাহলে অতটা টেনশন হতো না। বিশদ

24th  October, 2021
কোজাগরীর লক্ষ্মীসরা
শান্তনু বসু 

জাগো- জেগে থাক। নিদ্রা যেন চেতনাকে আচ্ছন্ন না করে। শুদ্ধ চিত্তে, শুদ্ধ চরিত্রে প্রতীক্ষা করো। তিনি আসবেন। তাঁর পাদস্পর্শে ধন্য হবে ধরণী। বৈকুণ্ঠ থেকে তিনি নেমে আসবেন গৃহস্থের অঙ্গনে। আসবেন বছরের নির্দিষ্ট একটি দিনে। অতএব নিবিষ্ট মনে স্মরণ কর তাঁকে। আলপনা দাও। নিষ্ঠা ভরে ধানের ছড়া এঁকে রাখ ভূমিতে, এঁকে রাখ তাঁর চরণচিহ্ন। বিশদ

17th  October, 2021
অপারেশন ৭১ : পর্ব ৩
প্ল্যান জ্যাকপট
সমৃদ্ধ দত্ত

মধ্যরাতে ফোন করেছেন কে সংকর্ষণ নায়ার। ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (RAW)-এর ডেপুটি ডিরেক্টর।  তিনি এই সংস্থায় পাকিস্তান ডেস্ক মনিটর করেন। প্রাইম মিনিস্টারকে এত রাতে ফোন করার অর্থ বড়সড় কিছু ঘটেছে। বিশদ

17th  October, 2021
পর্ব ২: অপারেশন ৭১
২৫ মার্চ, ১৯৭১
অপারেশন সার্চলাইট
সমৃদ্ধ দত্ত

একজন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হবে? সেরকম হলে আমার ডেডবডির উপর দিয়ে হতে হবে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এরকমই বললেন, তাঁর আর্মি কমান্ডারদের। শেখ মুজিবের দল পাকিস্তানের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছে তো কী হয়েছে? তার মানে কি বাঙালির হাতে পাকিস্তানকে ছেড়ে দিতে হবে? বিশদ

10th  October, 2021
দুর্গা
তপন বন্দ্যেপাধ্যায়

অনেকক্ষণ ধরে একটি গল্পের প্লট খুঁজছেন ভাস্করবাবু, মগজের ভাঁজ খুলে-খুলে দেখছেন কোন ঘটনাটা তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে এই মুহূর্তে, কোন দুটি চোখ ছুঁয়ে-ছুঁয়ে যাচ্ছে তাঁর মনের অন্দরমহল, কিন্তু কিছুতেই পাচ্ছেন না মনোমতো প্লট। যা-ও দু-একটি ঘটনা মনে পড়ছে কোনওটাই মনঃপূত হচ্ছে না। বিশদ

10th  October, 2021
পর্ব  ১: অপারেশন ৭১
সিচ্যুয়েশন রুম
সমৃদ্ধ দত্ত
 

কেন রিচার্ড নিক্সন এতটা ইন্দিরা গান্ধীর বিরোধী? কারণ একাধিক। নিক্সন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে যখন‌ই এশিয়া, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে গিয়েছেন তিনি দেখতে পেয়েছেন, প্রত্যেক রাষ্ট্রপ্রধানের চোখে এক সমীহ। এক বিশেষ শ্রদ্ধামিশ্রিত ভীতি। কারণ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলে কথা। ইনি সর্বশক্তিমান। সুতরাং নিক্সন আনুগত্য পেতেই অভ্যস্ত। তাঁর স্বভাবও সেরকম। একমাত্র ব্যতিক্রম এই মহিলা।
বিশদ

03rd  October, 2021
পিশাচ সাধু
 

ক্যাপ্টেনকে এলাকা ছাড়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছে পরম। এদিকে, বিষ খেয়ে হজম করে দেখিয়ে দেবে বার বার বলছে পিশাচসাধু। বঁড়শিকে পালিয়ে আসতে বলল সহজ। কিন্তু সে রাজি হল না। তারপর... প্রবল দুশ্চিন্তা নিয়ে বাড়ি ফিরছিল সহজ। কিন্তু এলাকার কাছাকাছি আসতেই তার অদ্ভুত একটা অনুভূতি হল। বিশদ

26th  September, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ৩০
পিশাচ সাধু

জয়ন্ত দে

কাকভোরে ঠাকুরদা শশাঙ্ক মিত্রের সঙ্গে বাগানে দেখা করল সহজ। জানাল, বর্ণিনী গুরুদেবের আশ্রমে গিয়ে সব খোঁজ খবর নিয়ে এসেছে। তবে, একটাই খারাপ খবর, গুরুদেব আর ইহজগতে নেই। শশাঙ্ককে আশ্রমে পৌঁছে দেবে কথা দিল সহজ। এর কিছুক্ষণ পরই সৃজনী ফোনে জানাল, নচে বিষ খেয়েছে।  তারপর... বিশদ

19th  September, 2021
ছোট গল্প
সম্বল
সঞ্জীব ঘোষ

রাঘব একা মানুষ। নিজে রেঁধে বেড়ে খায়। তার এক কামরা পাকা ঘরের সামনে পিছনে অনেকখানি জায়গায় চাষবাস করে নিজের চলে। বাজারে বিক্রি করলে চাল কেনার টাকা উঠে যায়। একটু ছন্নছাড়া হলেও বাঁধা গতের জীবন তার। আশ্চর্যজনকভাবে দীনতা তাকে স্পর্শ করেনি। বিশদ

12th  September, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ২৯
জয়ন্ত দে

বর্ণিনীকে নিয়ে সহজ যখন পৌঁছল, তখন বাড়িতে পিশাচসাধু নেই। বঁড়শি একা। সে শোনাল, তার সন্দেহের কথা। বঁড়শির অনুমান, তার বাবা, যোগীনসাধু সহ একাধিক মৃত্যুর নেপথ্যে ক্যাপ্টেনের হাত রয়েছে। নিজের বক্তব্যের সপক্ষে একটি ডায়েরি দেখাল সে। ডায়েরির পাতার ছবি তুলে নিল বর্ণিনী। তারপর... বিশদ

12th  September, 2021
ছোট গল্প
টরেগাসি
বিনতা রায়চৌধুরী
​​

লিলি ঘরে ঢোকামাত্র শুভায়ু বলে উঠল আমার টরেগাসি? হেসে ফেলল লিলি, ‘আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকো না একটুও, তোমার মন পড়ে থাকে ওই তোমার টরেগাসি-র ওপর। তাই তো?’  ‘কথাটা পুরো সত্য নয়। আবার পুরো মিথ্যেও নয়।’ বলেই হেসে উঠল শুভায়ু।  বিশদ

05th  September, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব ২৮
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

ক্যাপ্টেনের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া বঁড়শির। এমন পরিস্থিতিতে পিশাচসাধু যেন নিজেরই মুখোমুখি— সামনে এসেছে দাঁড়িয়েছে তার অতীত। প্রতিশোধ নিতে সে শুরু করেছে এক নরমেধ যজ্ঞ। জনৈক শ্মশানচারী সাধুকে বলি দিলে সম্পূর্ণ হবে তার এই যজ্ঞ। কিন্তু তার খোঁজ এখনও পায়নি ক্যাপ্টেন। তারপর... বিশদ

05th  September, 2021
ছোট গল্প
মানকচু, ফুল ও
ডাবের গল্প
চিরঞ্জয় চক্রবর্তী

আমি যখন বাজারে যাই, কেউ ঘুম থেকে ওঠে না। অত সকালে বাজারে যেতে দেখে পাশের বাড়ির লিলি বলেছিল, ‘তুমি কি বাসি মাল কিনতে যাও?’ উত্তরে শুধু হেসেছিলাম, কিছু বলিনি। সকালবেলা বাসি মালও পাওয়া যায়, লোকে কত কিছু ভাবে। অনেকেই বাজারের ব্যাগ হাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রাতর্ভ্রমণ করে। আমার সেসব বালাই নেই।
বিশদ

29th  August, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব ২৭
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

বোনকে নিয়ে সহজ পিশাচ সাধুর কাছে গিয়েছিল শুনে রেগে আগুন বিচিত্রদা। কথায় কথায় সহজ জানাল, বঁড়শির আদতে বিয়ে হয়েছে একটা মড়ার খুলির সঙ্গে। এবার বর্ণিনী যেতে চায় ক্যাপ্টেনের বাড়িতে। এদিকে, সহজকে ডেকে নচে শোনাল তার জীবনের কিছু বৃত্তান্ত। তারপর... বিশদ

29th  August, 2021
একনজরে
বার্সেলোনার খারাপ সময় যেন কিছুতেই কাটছে না। লা লিগায় এল ক্লাসিকোর পর বুধবার রায়ো ভায়াকেনোর কাছেও হারল কাতালন ক্লাবটি। অ্যাওয়ে ম্যাচে ০-১ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন সের্গিও বুস্কেতসরা। ...

ফের মালদহে আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া এলাকা থেকে চোরাই মোবাইল সেট উদ্ধার হল। বুধবার রাতে ইংলিশবাজার থানার মহদিপুর স্থলবন্দরের বড় পার্কিং এলাকা থেকে ১০টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে ইংলিশবাজার থানার আইসি আশিস দাস জানিয়েছেন। ...

তেলের ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারের মৃত্যু হল বসিরহাটে। মাটিয়া থানার গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা হরিদাস হালদার (২৬) বসিরহাট থানায় সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজে নিযুক্ত ছিলেন। ...

দীপাবলির উপহার। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর পাইপলাইনের মাধ্যমে লাদাখের গ্রামে পৌঁছল পানীয় জল। মঙ্গলবার এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মান-মেরাগ গ্রামে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বদমেজাজ ও কঠিন ব্যবহারে ঘরে-বাইরে অশান্তি ও শত্রুতা। পেট ও বুকের সংক্রমণে দেহসুখের অভাব। কর্মে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৯৬৯: ইন্টারনেটের আগের স্তর আরপানেটের আবিষ্কার
১৯৭১: অস্ট্রেলিয় ক্রিকেটার ম্যাথু হেডের জন্ম
১৯৮১: অভিনেত্রী রীমা সেনের জন্ম
১৯৮৫: বক্সার বিজেন্দর সিংয়ের জন্ম
১৯৮৮: সমাজ সংস্কারক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৯৯: ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড়ে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু
২০০৫: দিল্লিতে পরপর তিনটি বিস্ফোরণে অন্তত ৬২জনের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার    
পাউন্ড    
ইউরো    
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,৭৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৬,২৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৯৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৫,০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৫,১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১২ কার্তিক, ১৪২৮, শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১। অষ্টমী ২১/৭ দিবা ২/১০। পুষ্যা নক্ষত্র ১৪/৪৮ দিবা ১১/৩৮। সূর্যোদয় ৫/৪৩/৮, সূর্যাস্ত ৪/৫৭/৪৪।  অমৃতযোগ দিবা ৬/২৮ মধ্যে পুনঃ ৭/১৩ গতে ৯/২৮ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৩ গতে ২/৪২ মধ্যে পুনঃ ৩/২৭ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৫/৪৮ গতে ৯/১৩ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৬ গতে ৩/১০ মধ্যে পুনঃ ৪/১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৩১ গতে ১১/২০ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৯ গতে ৯/৪৫ মধ্যে। 
১১ কার্তিক, ১৪২৮, শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১। অষ্টমী দিবা ৯/১৬। পুষ্যা নক্ষত্র  দিবা ৮/১০। সূর্যোদয় ৫/৪৪, সূর্যাস্ত ৪/৫৮। অমৃতযোগ দিবা ৬/৩৫ মধ্যে ও ৭/১৯ গতে ৯/৩১ মধ্যে ও ১১/৪৩ গতে ২/৩৮ মধ্যে ও ৩/২৩ গতে ৪/৫৮ মধ্যে এবং রাত্রি ৫/৪৩ গতে ৯/১১ মধ্যে ও ১১/৪৭ গতে ৩/১৫ মধ্যে ও ৪/৭ গতে ৫/৪৫ মধ্যে। বারবেলা ৮/৩৩ গতে ১১/২১ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/১০ গতে ৯/৪৬ মধ্যে। 
২২ রবিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৫ উইকেটে জয় পাকিস্তানের

11:42:00 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১ : পাকিস্তান : ১২২/৪ (১৭ ওভার)

10:55:43 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: পাকিস্তান ৭৫/১ (১১ ওভার)

10:21:48 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: পাকিস্তান ৩১/১ (৫ ওভার)

09:49:25 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৪৮ রান

09:45:03 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: আফগানিস্তান ৯৩/৬ (১৫ ওভার)

08:49:51 PM