Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ছোট গল্প
মানকচু, ফুল ও
ডাবের গল্প
চিরঞ্জয় চক্রবর্তী

আমি যখন বাজারে যাই, কেউ ঘুম থেকে ওঠে না। অত সকালে বাজারে যেতে দেখে পাশের বাড়ির লিলি বলেছিল, ‘তুমি কি বাসি মাল কিনতে যাও?’ উত্তরে শুধু হেসেছিলাম, কিছু বলিনি। সকালবেলা বাসি মালও পাওয়া যায়, লোকে কত কিছু ভাবে। অনেকেই বাজারের ব্যাগ হাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রাতর্ভ্রমণ করে। আমার সেসব বালাই নেই। সকাল সকাল ধনার চায়ের দোকানে গিয়ে বসি। সেখানেই সবাই আসে। সবাই বলতে বন্ধুরা। একটু কথা হয়, আড্ডা হয়, তারপর বাজার করে বাড়ি ফেরা।
এই বাজারটা নতুন হয়েছে, তাই সবাই নতুন বাজার বলে। বাঙালির ইতিহাসে নতুন বাজার বলতে শোভাবাজার এর পাশে নতুন বাজারকে বোঝে। অনেকে ভুল বোঝে। আগে বাজার করতে হলে প্রায় পনেরো মিনিট হাঁটতে হতো। বাজার ভর্তি ভারী ব্যাগ বয়ে আনতে হতো। বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। বাবা বেশি দিন কষ্টটা করেননি। আমাদের পাড়ায় একটা লোক মাথায় করে কাঁচা আনাজ ফেরি করত, সবাই তাকে ভাইটি বলে ডাকত। প্রায় সব বাড়িতেই সে আনাজ বেচত। মা একটা ঝুড়ি দিয়ে এই এই আনাজ দাও বলে মা রন্নাঘরে চলে যেতেন। ভাইটি তার মতো মেপে বলত এত হয়েছে। মা রান্নাঘর থেকে এসে টাকা দিতেন। ওজন বা পরিমাপ দেখতেন না। আমাদের বাড়িতে প্রতিদিন সে কিছু একটা ফাউ দিত। সেটা কাঁচা আম, পাকা তেঁতুল বা একমুঠো কড়াইশুটি। মা কোনওদিন জিজ্ঞাসা করেননি, এটা কেন দিচ্ছ? বা কোনটার কত দাম? ভাইটি একটা বড় গোল ঝুড়িতে করে আনাজ-তরকারি আনত। নামানোর সময়ে ধরতে হতো, আবার তুলে দিতে হতো। কয়েকবার কেউ না থাকায় দাদা আর আমি তুলে দিয়েছি বা ধরে নামিয়েছি। আমার খুব ইচ্ছা ছিল একদিন নামাতে গিয়ে ছেড়ে দেব। আনাজপাতিগুলো বারান্দাময় দৌড়াবে, সব মিলে মিশে এক হয়ে যাবে। মনে হবে আকাশ থেকে তরকারিগুলো পড়ছে। তরকারির বৃষ্টি হচ্ছে। পরিকল্পনার কথা দাদাকে বলে দেওয়ায়, দাদা আমাকে নিয়ে ধরতে চায় না। একদিন দাদা ছিল না, আমি আর জ্যাঠতুতো ভাই নান্টু ঝুড়ি ধরেছিলাম। আমার বহুদিনের সাধ ছিল বৃষ্টি দেখব, তাই সেইদিন ইচ্ছা করেই ছেড়ে দিয়েছিলাম। ঝুড়িটা আস্তে আস্তে কাত হয়ে যাচ্ছে, আনাজ তরকারি বড় বারান্দায় লুটোপুটি খাচ্ছে। টমেটো, ঢেঁড়স, আলু, লঙ্কা, কপি, মুলো সব পড়ছে। নান্টু ধরে আছে। ভাইটি চেঁচাচ্ছে, ‘ছোট ছেড়ে দিয়েছে। ছোট ছেড়ে দিয়েছে।’
বললাম, এত ভারী তোলা যায়? 
মা এসে খুব বকল, হয়তো মেরেওছিল দু’ঘা। আমার সেসব মনে নেই, তবে মানকচুটা চাকার মতো গড়াতে গড়াতে কাঁচা ড্রেনে পড়ে গিয়েছিল। ভাইটি দেখতে পায়নি। আনাজপাতি তোলার সময়ে মিলিয়েও দেখেনি। সব গুছিয়ে চলে গিয়েছিল। মানকচুটা নর্দমায় পড়ে যাওয়ায় একটা অপরাধবোধ তৈরি হয়েছিল। সেটাই জীবনের প্রথম অপরাধবোধ তৈরি হওয়া এবং চাপতে শেখা। প্রতিদিন সকালে ভাইটি এলেই মনের ভিতর গুড়গুড় করত, মানকচুর কথাটা বলবে না তো?
কিছুদিন পরে হঠাৎ ভাইটি আসা বন্ধ করে দিল। আর আনাজপাতি বিক্রি করতে আসে না। মা খোঁজ করতেন। সবাইকে বলতেন, ভাইটিকে দেখলেই যেন ডাকা হয়। ভাইটির দেখা পাওয়া যায় না। পাশাপাশি বাড়ির যারা ভাইটির থেকে সব্জি কেনে, কেউ জানে না ও কোথায় থাকে। এমনকী, ওর নামটাও কেউ জানে না। সবাই বলে, তাই ভাইটি বলেই ডাকতাম, নাম জিজ্ঞাসা করা হয়নি। কেউ বলেছিল ভাইটি মরে গিয়েছে। একদিন রাতে আমি বিছানায় শুয়ে দাদাকে বলেছিলাম, ‘জানিস,আমি যেদিন ঝুড়ি ফেলে দিয়েছিলাম, সেদিন একটা মানকচু গড়িয়ে নর্দমায় চলে গিয়েছিল। ভাইটি দেখতে পাইনি। লোকটা ভূত হয়ে যদি আসে?’ দাদা কোনও কথা না বলে মুখ ঘুরিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। তখন আমি ক্লাস থ্রিতে পড়ি, দাদা ফাইভ।
ভাইটি না আসায় দাদা আর আমি বাজারে যেতাম। তখন সবে আমাদের এখানে ইলেকট্রিক ট্রেন চালু হয়েছে। রেল লাইন পার হতে সবাই ভয় পেত। তখনও ইলেকট্রনিক সিগনাল হয়নি। সিগনালের হাত উঠত-নামত। সতর্ক হয়ে রেল লাইন পার হতে হতো। একদিন সকালে বাজার যাওয়ার পথে রেল লাইন পার হচ্ছি, পিছন থেকে একজন বলে উঠল, ‘দুই ভাই যাও কই?’
পিছন ফিরে দেখি ভাইটি। দাদা হাত ধরে টানছে, রেল লাইন আগে পার হতে হবে। আমি দেখছি ভাইটি বেঁচে আছে। আমি লাফিয়ে লাফিয়ে রেল লাইন পার হচ্ছি। অন্য পারে গিয়ে দাঁড়ালাম। দাদা বলল, ‘বাজারে যাচ্ছি। তুমি তো আর আসো না?’
ভাইটির পোশাক পাল্টে গিয়েছে— কোমড়ে বেল্ট, পায়ে বুটজুতো, ফুলহাতা আকাশি রঙের জামা। বেশ গর্বের সঙ্গে বলল, ‘দিদিকে বোলো আমি ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়েছি।’ একটু থেমে বলল, ‘ফেরার সময়ে দেখে পার হবে। লাফিয়ে লাফিয়ে যাবে না।’
আমি তখনও দেখছি কচুর চাকাটা গড়াচ্ছে, ভাইটি দেখতে পাচ্ছে না। আমার একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস পড়ল।
দুই
ধীরে ধীরে আমাদের এলাকায় জনবসতি বাড়তে থাকল। আমাদের অঞ্চলটা একটা দ্বীপের মতো। কলকাকাতার কাছে হলেও যাতায়াতের খুব সমস্যা। ট্রেন ছাড়া একটা গোরুর গাড়িরও অধম বাস। তবুও মানুষ এখানে এসে বাড়ি করছে।
রেল লাইনের এ পারে প্রচুর জনবসতি। গ্রামটা আস্তে আস্তে পাল্টাতে থাকল। সেই সূত্রে আমাদের বাড়ির কাছে রাস্তায় একটা বাজারের সূচনা হল। পাড়ার বেকার ছেলে ও অভাবী মানুষদের জায়গা দেওয়া হল। বাজারটা একবেলা বসবে। মনুর মা ক’দিন ধরে ঘ্যান ঘ্যান করছে, ও ব্যবসা করবে। মনুর মা মনু আর তার তিনটে মেয়ে নিয়ে একাত্তর সালে বাংলাদেশ থেকে আসে। ওই সময়ে আমাদের বাড়ির পিছনে একটা বস্তি তৈরি হয়। ওখানেই থাকে। সকাল হলেই মনু আর তার ছোট বোনটা আমাদের বাড়িতে রান্নাঘরের বারান্দায় এসে বসে, প্রথম বাক্য উচ্চারিত হয়— দিদিমা, খিদে পেয়েছে। রুটি দাও। মা প্রথমদিন চমকে উঠেছিলেন। সক্কালবেলা অর্ধ উলঙ্গ হাড্ডিসার শিশুরা কোথা থেকে এল? আমাদের কাজের দিদি রানিদি মাকে বলে, ‘এই তো মনু আর তার বোন।’ এদের কথা বলতে গিয়ে মা কেঁদে ফেলতেন, ঈশ্বর দুধের শিশুদের কষ্ট দূর করতে পারেন না? মা’র মৃত্যু পর্যন্ত সকালবেলার রুটি ওদের বাধা ছিল। ঝড়-বৃষ্টি-জল যাই হোক, ওরা আসবেই।  মনুর মা আমাদের বাড়িতে নিয়মিত কাজ করত না। কখনও উঠোন ঝাড়ু দিত, কখনও নারকেল পাতা থেকে শলা বের করত। বাসন্তীপুজো, কালীপুজোর সময় ভোগের বাসন একা রানিদি মেজে উঠতে পরত না, তাকে সাহায্য করত। হয়তো আরও কিছু করত আমি সব জানি না। তবে রোজ দুপুরে রানিদির পাশে বসে ভাত খেত। 
একদিন রাতে মা বললেন, ‘মনুর মাকে দুশো টাকা দিতে পারিস? ফেরত চাইবি না কিন্তু।’
—ওকে রেখেছ?
—না। ও ফুলের ব্যবসা করবে।
—তুমি কী বল?
—পারলে দে। যদি ছেলেমেয়েগুলো অন্তত দু’বেলা খেতে পায়।
মনুর মা ফুলের দোকান করল।
আমাদের বাড়িতে অনেক বিগ্রহ, রোজ ফুল কিনতে হয়। আমরা এক বিধবা মাসির থেকে ফুল কিনি। মাসি তার ছোট ছেলেকে নিয়ে ভোর রাতে আসে। ছেলেটা ফুলের বস্তার গায়ে হেলান দিয়ে ঘুমায়। মাসি খুব যত্ন করে ফুল দেয়। আমাকে বাবা বলেই ডাকে। মনুর মা মাসির পরে সাতনম্বরে বসে। মনুর মা দোকান দিয়েছে। ডাকে না, আমিও যাই না। আমার তো মাসি আছে। একদিন ট্রেনের গণ্ডগোলে মাসি আসতে পারেনি। আমি মনুর মা’র কাছে গিয়ে বলেছিলাম, ‘মাসি ফুল দাও।’ আমার ব্যাগটা ফিরিয়ে দিয়ে বলল, সব বাসি ফুল, তোমাকে আমি দিতে পারব না।
সবাই তো বাসি ফুল বেচছে। কেউ তো আজ ফুল তুলে আনেনি। কাল কিনেছে আজ বেচছে।
মাসি মনোযোগ দিয়ে শোনার পর বলেছিল, ‘আমি তোমাদের বাড়ির সব জানি তো, আমি দিতে পারব না।’
দিলীপের মা ফুল দেয়। যখন মাসির দোকান ছিল না বা বলা ভালো যখন বাজার তৈরি হয়নি, তখন থেকেই দিলীপের মা ফুল দেয়। মা’র কাছে মাসি নালিশ করত, ‘জানো দিলীপের মা ফুলের মধ্যে বসেই ভাত খায়, কিছু মানে না।’ মা আমাকে ব্যাপারটা জিজ্ঞাসা করেছিল। আমি উত্তর করিনি, কারণ আমি কোনওদিন দেখিনি। দিলীপের মা আমাকে বাবা বলে ডাকত, যত্ন করে ফুল দিত। একবার মাথা ঘুরে বাজারের মধ্যেই পড়ে গিয়েছিল। পরীক্ষা করে জানা গেল ওঁর রক্তচাপ নিম্নমুখী। ডাক্তারবাবু ওঁকে ভালোমন্দ খেতে বলেছেন। বিধবা মহিলা তিনটি সন্তান, মা এবং নিজে, পাঁচজনের সংসার ফুল বেচে কোনওমতে চালান। ভালোমন্দ খাবেন কোথা থেকে? বাজারে ভিতরেই জীবনের চায়ের দোকান। ওকে বলে দিয়েছিলাম, দিলীপের মাকে একটা করে ডিম সেদ্ধ দিতে। মাসখানেক পরে মা বলল, শুনে খুব আনন্দ পেয়েছি, ভালো করেছিস।
এসব কি বলার কথা?
মা হেসেছিল। মা নিজে পুজোর কাপড় কিনে দিত দিলীপের মাকে। মা’র পুরনো শাড়িও পরতে দেখেছি। কখন এসব সংগ্রহ করত আমি জানি না। দিলীপের মা একদিন বলেছিল, বাবা না থাকলে বাঁচা যায় না, সব সময়ে একজন বাবার দরকার।
তিন
ডাক্তারবাবু বাবাকে রোজ একটা ডাব খেতে বলেছে। বাড়িতে কয়েকটা গাছ থাকলেও রোজ রোজ কে ডাব পাড়বে? এক সঙ্গে অনেক ডাব পেড়ে রাখলে শুকিয়ে যাবে।
তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, রোজ তো বাজার যেতেই হয়, কিনে নিয়ে আসব। বাজারে ঢোকার মুখেই ডাবের দোকান। একজন পুরুষ মানুষ বসত। তাকে দেখলাম না। এদিক ওদিক দেখছি, অন্য কোথাও বসল কি না। রাস্তার উপর বাজার ঘুরে কোথাও চোখে পড়ল না। লোকটার থেকেই ডাব নারকেল কিনি, লোকটাও ভালো ছিল। তার জায়গায় একটা মহিলা ডাব নিয়ে বসেছে। আমি যার থেকে রোজ সকালে ডাব পান করি সে নেই। সে আমার কাছে দশটা টাকা পাবে। তার কাছে টাকা বাকি রেখে অন্য লোকের থেকে ডাব নেওয়াটা ঠিক হবে না। বাড়ি থেকে বাজার আসার সময়ে আমি মনে মনে ঠিক করেছি, রোজ একটা করে লাগবে, প্রথম দিন দুটো কিনব। একটা স্টকে থাকবে। যদি কোনওদিন আসতে না পারি বা ডাবওয়ালা না আসে। অগত্যা মহিলার সঙ্গেই দরদাম করে দুটো ডাব নিলাম। সে কেটেকুটে দিল। নিজে আর খেলাম না। কেন জানি লোকটার কথা জিজ্ঞাসাও করিনি। সেই মহিলা একশো টাকার নোট ভাঙিয়ে আশি টাকা দিতে পারল না। অগত্যা ওর কাছে ডাব দুটো রেখে বাজারে ঢুকলাম। নিয়ম হয়ে গেল, প্রতিদিন বাজারে ঢুকে আমি ডাব বেছে দিতাম, ও কেটেকুটে রাখত, ফেরার সময়ে নিয়ে আসতাম। ওর দোকানে দু’বার যাওয়ার দরকার পরত।
কথায় কথায় জানতে পারি এর নাম জাহানারা। আগে যে ডাব বেচত এ তার বউ। সে আসে না কেন?
সে এখন জেলে আছে। প্রথমপক্ষের বউকে গভীর রাতে ধানখেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে হেসো দিয়ে গলা কেটে দিয়েছে। কারণ জাহানারাকে সে বেশি ভালোবাসে। পুলিস ধরে নিয়ে গিয়েছে। দু’পক্ষের মিলে আটটা ছেলে মেয়ে। বাপ জেলে গেলেও খিদেটাকে তো ভিটেতে রেখে গিয়েছে। সকাল সন্ধে খিদে পায় তো? তাই জাহানারা বাজারে চলে এসেছে। প্রথম পক্ষের  বড় ছেলে ক্লাস এইটে পড়ত, সে মায়ের সঙ্গে থাকে। নাম বাদশা। গাছে উঠতে পারে, ডাব পারে, মায়ের সঙ্গে বাজারে আসে। এই কাজ ওর ভালো লাগে না। ও পড়তে চায়। ও মাস্টার হতে চায়। জাহানারার বড় মেয়ে ক্লাস সিক্সে পড়ত, তারও লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মা, দাদা সকালে বাজারে আসে, সে ঘরের কাজ করে। রান্নাবান্না করে রাখে। ছোট ভাইবোনদের সামলায়। জাহানারা একদিন বলল, বুঝলে আমি তাজমহল গড়তে পারব না। দিন তো নিজের মতো গড়ায়, দেখতে দেখতে কয়েকবছর হল।
বাদশার উজ্জ্বল কালো গোঁফ জানান দেয় যুবক হয়েছে। এখন ও-ই ডাব কাটে, মা পাশে বসে পয়সা নেয়। একদিন সকালে আমাদের বাড়িতে কয়েকটা হিমসাগর আম নিয়ে এসেছিল।
—কোথায় পেলে?
—বাড়ির।
—দাম কত?
—দাম দিতে হবে না। তোমরা খাবে।
মা বাটিতে করে ওকে মুড়ি বাতাসা দিয়েছিল, ও বলল, কোঁচড়ে ঢেলে দাও। কিছুতেই গ্লাসে জল খেলো না। কল থেকে আঁজলা ভরে জল পান করল। মাকে প্রণাম করল দূর থেকে মেঝেতে মাথা ঠুকে। মা একটা কী দিয়েছিল প্যাকেট করে ছেলের জন্য নিয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পর আমি বাজারে গিয়েছি। ডাব লাগবে না। তাই কোনও কথা না বলে বাজারে ঢুকছিলাম। ওই ডাকল। সামনে দাঁড়াতেই বলল, ‘তুমি আমার ছেলে হবে?’
সকালবেলা বাক্যটা শুনে আমি হকচকিয়ে গিয়েছি। ওর দিকে তাকিয়েছিলাম কিছু বলতে পারিনি। ও ঘোমটা টেনে মুখে একটা সরল হাসি নিয়ে বলেছিল, ‘ভালো ছেলের মা হওয়া যে কী আনন্দের তোমাকে বোঝাব কী করে?’
অলঙ্করণ: সোমনাথ পাল
29th  August, 2021
অপারেশন ৭১: পর্ব ৪
রেডিও সিগন্যাল
সমৃদ্ধ দত্ত

১৫ জুন ১৯৭১। ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এস এম নন্দা পলাশির ক্যাম্প পরিদর্শনে এলেন। তিনি এবং ভারত সরকার একটা সাংঘাতিক কঠিন বাজি হাতে নিয়েছে। যদি ভারতীয় নৌবাহিনীর কমান্ডোদের এই কাজটির জন্য পাঠানো হতো, তাহলে অতটা টেনশন হতো না। বিশদ

24th  October, 2021
কোজাগরীর লক্ষ্মীসরা
শান্তনু বসু 

জাগো- জেগে থাক। নিদ্রা যেন চেতনাকে আচ্ছন্ন না করে। শুদ্ধ চিত্তে, শুদ্ধ চরিত্রে প্রতীক্ষা করো। তিনি আসবেন। তাঁর পাদস্পর্শে ধন্য হবে ধরণী। বৈকুণ্ঠ থেকে তিনি নেমে আসবেন গৃহস্থের অঙ্গনে। আসবেন বছরের নির্দিষ্ট একটি দিনে। অতএব নিবিষ্ট মনে স্মরণ কর তাঁকে। আলপনা দাও। নিষ্ঠা ভরে ধানের ছড়া এঁকে রাখ ভূমিতে, এঁকে রাখ তাঁর চরণচিহ্ন। বিশদ

17th  October, 2021
অপারেশন ৭১ : পর্ব ৩
প্ল্যান জ্যাকপট
সমৃদ্ধ দত্ত

মধ্যরাতে ফোন করেছেন কে সংকর্ষণ নায়ার। ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (RAW)-এর ডেপুটি ডিরেক্টর।  তিনি এই সংস্থায় পাকিস্তান ডেস্ক মনিটর করেন। প্রাইম মিনিস্টারকে এত রাতে ফোন করার অর্থ বড়সড় কিছু ঘটেছে। বিশদ

17th  October, 2021
পর্ব ২: অপারেশন ৭১
২৫ মার্চ, ১৯৭১
অপারেশন সার্চলাইট
সমৃদ্ধ দত্ত

একজন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হবে? সেরকম হলে আমার ডেডবডির উপর দিয়ে হতে হবে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এরকমই বললেন, তাঁর আর্মি কমান্ডারদের। শেখ মুজিবের দল পাকিস্তানের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছে তো কী হয়েছে? তার মানে কি বাঙালির হাতে পাকিস্তানকে ছেড়ে দিতে হবে? বিশদ

10th  October, 2021
দুর্গা
তপন বন্দ্যেপাধ্যায়

অনেকক্ষণ ধরে একটি গল্পের প্লট খুঁজছেন ভাস্করবাবু, মগজের ভাঁজ খুলে-খুলে দেখছেন কোন ঘটনাটা তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে এই মুহূর্তে, কোন দুটি চোখ ছুঁয়ে-ছুঁয়ে যাচ্ছে তাঁর মনের অন্দরমহল, কিন্তু কিছুতেই পাচ্ছেন না মনোমতো প্লট। যা-ও দু-একটি ঘটনা মনে পড়ছে কোনওটাই মনঃপূত হচ্ছে না। বিশদ

10th  October, 2021
পর্ব  ১: অপারেশন ৭১
সিচ্যুয়েশন রুম
সমৃদ্ধ দত্ত
 

কেন রিচার্ড নিক্সন এতটা ইন্দিরা গান্ধীর বিরোধী? কারণ একাধিক। নিক্সন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে যখন‌ই এশিয়া, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে গিয়েছেন তিনি দেখতে পেয়েছেন, প্রত্যেক রাষ্ট্রপ্রধানের চোখে এক সমীহ। এক বিশেষ শ্রদ্ধামিশ্রিত ভীতি। কারণ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলে কথা। ইনি সর্বশক্তিমান। সুতরাং নিক্সন আনুগত্য পেতেই অভ্যস্ত। তাঁর স্বভাবও সেরকম। একমাত্র ব্যতিক্রম এই মহিলা।
বিশদ

03rd  October, 2021
ছোট গল্প
উত্তরসাধক
মানস সরকার

ছেলে বড় হলে প্রতুলকে নিজের কাছে বহুবার বসাতে চেয়েছে। ছেলে বোল বুঝতে চাইত না। সুর, শব্দ থেকে দূরে পালাত। পড়াশোনাটাও ঠিক করে শেষ করল না। বিরক্তি প্রকাশ করত বাসন্তী। জোর করেনি গৌরদাস। এ জোর করার নয়। জড়িয়ে নেওয়ার জিনিস। বিশদ

03rd  October, 2021
পিশাচ সাধু
 

ক্যাপ্টেনকে এলাকা ছাড়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছে পরম। এদিকে, বিষ খেয়ে হজম করে দেখিয়ে দেবে বার বার বলছে পিশাচসাধু। বঁড়শিকে পালিয়ে আসতে বলল সহজ। কিন্তু সে রাজি হল না। তারপর... প্রবল দুশ্চিন্তা নিয়ে বাড়ি ফিরছিল সহজ। কিন্তু এলাকার কাছাকাছি আসতেই তার অদ্ভুত একটা অনুভূতি হল। বিশদ

26th  September, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ৩০
পিশাচ সাধু

জয়ন্ত দে

কাকভোরে ঠাকুরদা শশাঙ্ক মিত্রের সঙ্গে বাগানে দেখা করল সহজ। জানাল, বর্ণিনী গুরুদেবের আশ্রমে গিয়ে সব খোঁজ খবর নিয়ে এসেছে। তবে, একটাই খারাপ খবর, গুরুদেব আর ইহজগতে নেই। শশাঙ্ককে আশ্রমে পৌঁছে দেবে কথা দিল সহজ। এর কিছুক্ষণ পরই সৃজনী ফোনে জানাল, নচে বিষ খেয়েছে।  তারপর... বিশদ

19th  September, 2021
ছোট গল্প
সম্বল
সঞ্জীব ঘোষ

রাঘব একা মানুষ। নিজে রেঁধে বেড়ে খায়। তার এক কামরা পাকা ঘরের সামনে পিছনে অনেকখানি জায়গায় চাষবাস করে নিজের চলে। বাজারে বিক্রি করলে চাল কেনার টাকা উঠে যায়। একটু ছন্নছাড়া হলেও বাঁধা গতের জীবন তার। আশ্চর্যজনকভাবে দীনতা তাকে স্পর্শ করেনি। বিশদ

12th  September, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ২৯
জয়ন্ত দে

বর্ণিনীকে নিয়ে সহজ যখন পৌঁছল, তখন বাড়িতে পিশাচসাধু নেই। বঁড়শি একা। সে শোনাল, তার সন্দেহের কথা। বঁড়শির অনুমান, তার বাবা, যোগীনসাধু সহ একাধিক মৃত্যুর নেপথ্যে ক্যাপ্টেনের হাত রয়েছে। নিজের বক্তব্যের সপক্ষে একটি ডায়েরি দেখাল সে। ডায়েরির পাতার ছবি তুলে নিল বর্ণিনী। তারপর... বিশদ

12th  September, 2021
ছোট গল্প
টরেগাসি
বিনতা রায়চৌধুরী
​​

লিলি ঘরে ঢোকামাত্র শুভায়ু বলে উঠল আমার টরেগাসি? হেসে ফেলল লিলি, ‘আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকো না একটুও, তোমার মন পড়ে থাকে ওই তোমার টরেগাসি-র ওপর। তাই তো?’  ‘কথাটা পুরো সত্য নয়। আবার পুরো মিথ্যেও নয়।’ বলেই হেসে উঠল শুভায়ু।  বিশদ

05th  September, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব ২৮
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

ক্যাপ্টেনের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া বঁড়শির। এমন পরিস্থিতিতে পিশাচসাধু যেন নিজেরই মুখোমুখি— সামনে এসেছে দাঁড়িয়েছে তার অতীত। প্রতিশোধ নিতে সে শুরু করেছে এক নরমেধ যজ্ঞ। জনৈক শ্মশানচারী সাধুকে বলি দিলে সম্পূর্ণ হবে তার এই যজ্ঞ। কিন্তু তার খোঁজ এখনও পায়নি ক্যাপ্টেন। তারপর... বিশদ

05th  September, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব ২৭
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

বোনকে নিয়ে সহজ পিশাচ সাধুর কাছে গিয়েছিল শুনে রেগে আগুন বিচিত্রদা। কথায় কথায় সহজ জানাল, বঁড়শির আদতে বিয়ে হয়েছে একটা মড়ার খুলির সঙ্গে। এবার বর্ণিনী যেতে চায় ক্যাপ্টেনের বাড়িতে। এদিকে, সহজকে ডেকে নচে শোনাল তার জীবনের কিছু বৃত্তান্ত। তারপর... বিশদ

29th  August, 2021
একনজরে
রাজ্যের ‘টি ট্যুরিজম’ প্রকল্পের স্বার্থে এক চা বাগানের রাস্তার একটি অংশ দেওয়া হয় অন্য দু’টি কোম্পানিকে। বাগান কর্তৃপক্ষ বিকল্প রাস্তা বানাতে গিয়ে স্থানীয় বিরোধের সম্মুখীন। ...

বীরভূমে কালীপুজো ও দীপাবলিতে শব্দবাজির তাণ্ডব রুখতে দু’-একদিনের মধ্যে তল্লাশি শুরু করছে পুলিস। বিশেষ তল্লাশি চালানো হবে বীরভূম-ঝাড়খণ্ড সীমানায়ও। ...

ফের মালদহে আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া এলাকা থেকে চোরাই মোবাইল সেট উদ্ধার হল। বুধবার রাতে ইংলিশবাজার থানার মহদিপুর স্থলবন্দরের বড় পার্কিং এলাকা থেকে ১০টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে ইংলিশবাজার থানার আইসি আশিস দাস জানিয়েছেন। ...

দীপাবলির উপহার। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর পাইপলাইনের মাধ্যমে লাদাখের গ্রামে পৌঁছল পানীয় জল। মঙ্গলবার এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মান-মেরাগ গ্রামে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বদমেজাজ ও কঠিন ব্যবহারে ঘরে-বাইরে অশান্তি ও শত্রুতা। পেট ও বুকের সংক্রমণে দেহসুখের অভাব। কর্মে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৯৬৯: ইন্টারনেটের আগের স্তর আরপানেটের আবিষ্কার
১৯৭১: অস্ট্রেলিয় ক্রিকেটার ম্যাথু হেডের জন্ম
১৯৮১: অভিনেত্রী রীমা সেনের জন্ম
১৯৮৫: বক্সার বিজেন্দর সিংয়ের জন্ম
১৯৮৮: সমাজ সংস্কারক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৯৯: ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড়ে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু
২০০৫: দিল্লিতে পরপর তিনটি বিস্ফোরণে অন্তত ৬২জনের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার    
পাউন্ড    
ইউরো    
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,৭৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৬,২৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৯৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৫,০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৫,১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১২ কার্তিক, ১৪২৮, শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১। অষ্টমী ২১/৭ দিবা ২/১০। পুষ্যা নক্ষত্র ১৪/৪৮ দিবা ১১/৩৮। সূর্যোদয় ৫/৪৩/৮, সূর্যাস্ত ৪/৫৭/৪৪।  অমৃতযোগ দিবা ৬/২৮ মধ্যে পুনঃ ৭/১৩ গতে ৯/২৮ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৩ গতে ২/৪২ মধ্যে পুনঃ ৩/২৭ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৫/৪৮ গতে ৯/১৩ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৬ গতে ৩/১০ মধ্যে পুনঃ ৪/১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৩১ গতে ১১/২০ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৯ গতে ৯/৪৫ মধ্যে। 
১১ কার্তিক, ১৪২৮, শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১। অষ্টমী দিবা ৯/১৬। পুষ্যা নক্ষত্র  দিবা ৮/১০। সূর্যোদয় ৫/৪৪, সূর্যাস্ত ৪/৫৮। অমৃতযোগ দিবা ৬/৩৫ মধ্যে ও ৭/১৯ গতে ৯/৩১ মধ্যে ও ১১/৪৩ গতে ২/৩৮ মধ্যে ও ৩/২৩ গতে ৪/৫৮ মধ্যে এবং রাত্রি ৫/৪৩ গতে ৯/১১ মধ্যে ও ১১/৪৭ গতে ৩/১৫ মধ্যে ও ৪/৭ গতে ৫/৪৫ মধ্যে। বারবেলা ৮/৩৩ গতে ১১/২১ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/১০ গতে ৯/৪৬ মধ্যে। 
২২ রবিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৫ উইকেটে জয় পাকিস্তানের

11:42:00 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১ : পাকিস্তান : ১২২/৪ (১৭ ওভার)

10:55:43 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: পাকিস্তান ৭৫/১ (১১ ওভার)

10:21:48 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: পাকিস্তান ৩১/১ (৫ ওভার)

09:49:25 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৪৮ রান

09:45:03 PM

টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১: আফগানিস্তান ৯৩/৬ (১৫ ওভার)

08:49:51 PM