বদমেজাজ ও কঠিন ব্যবহারে ঘরে-বাইরে অশান্তি ও শত্রুতা। পেট ও বুকের সংক্রমণে দেহসুখের অভাব। কর্মে ... বিশদ
পুজোর পর থেকেই জেলায় ফের করোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। স্বাস্থ্যদপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ঘণ্টায় জেলায় করোনা সংক্রামিত হয়েছেন মোট ৫৩ জন। এর মধ্যে রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলায় রয়েছেন ২৯জন। বর্তমানে গোটা জেলায় উপসর্গহীন সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৩জন। আক্রান্তরা সবাই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। এনিয়ে জেলায় এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪লক্ষ ১০হাজার ১২১জন। আর করোনার বলি হয়েছেন ২৮৬জন।
স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, একই পাড়ায় তিন বা তার বেশি করোনা পজিটিভ কেস ধরা পড়লে ওই এলাকাটিকে মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করতে হবে। এব্যাপারে রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার ডেপুটি সিএমওএইচ(২) প্রকাশ রায় বলেন, আগের মতো বাঁশ দিয়ে এলাকা ঘিরে ফেলা হবে না। মাইক্রো কন্টেইনমেন্টে আক্রান্তের বাড়ির সবার চলাচল সীমাবদ্ধ করা হবে। ওই এলাকার দোকানপাট খোলা যাবে না। বাইরের কেউ সেখানে ঢুকতে পারবেন না। সেখানে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তাঁরা আক্রান্ত ও তাঁর পরিবারের উপর নজরদারি চালাবেন। সেই সঙ্গে মানুষকে সতর্ক করা হবে। যদিও এখনও পর্যন্ত জেলার একই পাড়ায় তিনটি পজিটিভ কেস পাওয়া যায়নি বলে প্রকাশবাবু জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, জেলায় যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে তাতে সেফ হোমগুলি ফের খোলার সম্ভবনা তৈরি হচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার মুরারইয়ের আম্ভুয়া সরকারি স্কুল ও নলহাটির সিএডিসি ভবন ও গতবছর থেকেই বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার দুবরাজপুরের নিরাময় হাসপাতালকে সেফ হোম করা হয়। কিন্তু এবছরের মাঝামাঝি আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে নামায় সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে, প্রয়োজনে সেগুলি ফের চালু করা হবে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন। রামপুরহাট মেডিক্যাল সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ে ২৮০বেডের কোভিড ওয়ার্ড রয়েছে। এছাড়া সিউড়ি, রামপুরহাট ও বোলপুর হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডের ৫০শতাংশ বেড কোভিড আক্রান্তের জন্য সংরক্ষিত রাখতে বলা হয়েছে। রামপুরহাট মেডিক্যালেও শিশুদের জন্য ২০টি আইসিইউ বেড তৈরি করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও শিশুর কোভিড আক্রান্তের খবর নেই বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান। কিন্তু এখন যেভাবে আক্রান্ত বাড়ছে তাতে বড়দের থেকে শিশুদের সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা কোনওভাবেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার সিএমওইচ জানান, মুরারইয়ের পাইকর ও ময়ূরেশ্বরের ষাটপলশায় পৃথক দু’টি কোভিড হাসপাতাল তৈরির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এজন্য নতুন ভবন তৈরি হবে। সেখানে ২০টি করে বেড থাকবে।
এই অবস্থায় জেলায় সংক্রামিতের সংখ্যা বাড়লেও অধিকাংশ মানুষের মধ্যে এখনও করোনা বিধি মেনে চলার সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। অনেকেই মাস্ক ছাড়াই হাট-বাজার, হোটেল-রেস্টুরেন্টে অবাধ যাতায়াত করছেন। দূরত্ব বিধি মানার বালাই নেই। সচেতনতামূলক প্রচারেও হুঁশ ফিরছে না। স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, এঁদের অনেকেই অজান্তে উপসর্গহীন করোনার বাহক হয়ে ঘুরছেন। ফলে, সংক্রমণ আরও ছড়াচ্ছে। তাই জ্বর, সর্দি, কাশি থাকলে চিকিৎসকরা দ্রুত করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে সংক্রমণ রোধে টিকাকরণেও জোর দিয়েছে দুই স্বাস্থ্যজেলাই।