বদমেজাজ ও কঠিন ব্যবহারে ঘরে-বাইরে অশান্তি ও শত্রুতা। পেট ও বুকের সংক্রমণে দেহসুখের অভাব। কর্মে ... বিশদ
রায়নায় দরিয়াপুরে নিজের গ্রামের বাড়িতে খুন হন সব্যসাচীবাবু। তা যে শুধু পারিবারিক সম্পত্তির কারণে নয়, তা একপ্রকার নিশ্চিত পুলিস। কারণ, সব্যসাচীকে খুনের হুমকি অনেকদিন ধরেই দেওয়া হচ্ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিস। এসডিপিও সদর(দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান বলেন, মৃতের পরিবার ও বড়বাজারের ব্যবসায়িক বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পারিবারিক ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সব্যসাচীবাবুর শত্রু নেহাত কম ছিল না। সেই শত্রুতার জেরে এই খুনের ঘটনা কি না, তা খুব তাড়াতাড়ি জানা যাবে।
খুনের হুমকির কথা ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছিলেন সব্যসাচীবাবু। তাই আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। সবসময় একজন দেহরক্ষী তাঁর সঙ্গে থাকত। তবে রায়নায় গ্রামের বাড়িতে এসে এভাবে খুন হতে হবে, তা হয়তো তাঁর মাথায় আসেনি। প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডে অভিযোগ উঠেছে সব্যসাচীবাবুর কাকা গৌরহরি মণ্ডল ও তাঁর দুই ছেলে দীনবন্ধু ও সোমনাথের বিরুদ্ধে। সব্যসাচীবাবুর বাবার সরাসরি অভিযোগ ছিল, সুপারি কিলার দিয়ে ছেলেকে খুন করিয়েছে তাঁর দুই ভাইপো। এর আগেও সব্যসাচীবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের একবার জেলও খাটতে হয়। জেলে থাকাকালীন কোন কোন আসামির সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হয়েছিল, সেই ব্যাপারেও পুলিস খোঁজ খবর শুরু করেছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুলিস কথা বলে জানতে পেরেছে, সব্যসাচীবাবুর ব্যক্তিগত শত্রু ক্রমশই বাড়ছিল। বড়বাজারে ত্রিপলের ব্যবসা রয়েছে সবসাচীবাবুর। সেই ব্যবসা বন্ধ করতে একটি চক্র সক্রিয় হয়েছিল বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, রায়নায় পিকনিক করতে আসার ঠিক একমাস আগেই সব্যসাচীবাবু বাংলা পক্ষের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, বড়বাজারে তাঁর ব্যবসা করতে অসুবিধা হচ্ছে। তাঁর উপর এবং বড়বাজারের বাঙালি ব্যবসায়ীদের উপর নিয়মিত একটি চক্র চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। ওই চক্রটি তাঁকে ব্যবসা থেকে উৎখাত করতে ও সম্ভবত হত্যা করতে চায়। এরপরই তিনি বাঙালি ব্যবসায়ীদের এককাট্টা করতে সক্রিয় হন। যা নিয়ে মামলাও চলছে। এছাড়া চলতি বছরের আগস্ট মাসে সব্যসাচীবাবুর শিবপুরের বাড়িতে পেট্রল বোমা ছোড়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেছিলেন। শিবপুর থানায় ২৫৩/২১ নম্বরের এফআইআরে নিজের কাকার ছেলেদের নামের পাশাপাশি উঠে আসে এক বিহারী মাফিয়ার নাম। সব্যসাচীবাবু নাম দিয়ে অভিযোগ করলেও ওই মাফিয়ার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকী সেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য নানা ভাবে হুমকি দেওয়া শুরু করে ওই মাফিয়া। বাংলা পক্ষের দ্বারস্থ হওয়ার পর ওই মাফিয়া বিহারে গিয়ে গা ঢাকা দিলে কিছুটা স্বস্তিবোধ করেন সব্যসাচীবাবু। পুলিস জানিয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।