বদমেজাজ ও কঠিন ব্যবহারে ঘরে-বাইরে অশান্তি ও শত্রুতা। পেট ও বুকের সংক্রমণে দেহসুখের অভাব। কর্মে ... বিশদ
ফোনে বাগেশ্বরের পুলিস সুপার অমিত শ্রীবাস্তব বলেন, আমরা দু’জন যাত্রীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে হলদওয়ানি মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করেছি। মৃতদেহ ও অসুস্থদের সেখানে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাকি আটকে থাকা যাত্রীরা ইচ্ছামতো ফিরে যেতে পারেন। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ওই পর্যটক দলের প্রত্যেক সদস্য এখনও আতঙ্কে রয়েছেন। তৃতীয় গাড়িটি খাদে পড়ার আগে দ্বিতীয় গাড়িটিতে ধাক্কা মারে। তখন দ্বিতীয় গাড়িটিও উল্টে যায়। কিন্তু, বরাত জোরে গাড়িটি খাদে পড়েনি। গাড়ির জানলার কাচ ভেঙে যাত্রীরা বেরিয়ে আসেন। সেখানেই ছিল তিনটি শিশু। তারা দুর্ঘটনার পর ‘ট্রমাটাইজ’ হয়ে গিয়েছে। গাড়ি দেখলেই যেন আঁতকে উঠছে। বাংলায় ফিরতে হবে। কিন্তু, গাড়ি চাপতেই রাজি নয় ছোটরা। এতটাই আতঙ্ক তাদের গ্রাস করেছে। তবে প্রশাসন অসুস্থ ও মৃতদের পরিবারের প্রতি যতটা যত্নশীল, ততটা তাঁদের প্রতি নয় বলে জানিয়েছেন ওই দলে থাকা অন্যান্যরা। তাঁদের দাবি, দু’টি ঘরে ২৪ জন মিলে কোনওরকমে তাঁরা রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার তিনটি গাড়ি নিয়ে মুন্সিয়ারি থেকে কৌশানি যাচ্ছিল আসানসোল, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের ৩০ জনের একটি বাঙালি পর্যটক দল। বাগেশ্বর জেলার কাপকোট থেকে ১০ কিমি দূরে হঠাৎই তৃতীয় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। দ্বিতীয় গাড়িটিকে পিছন থেকে ধাক্কা মেরে সেটি খাদে পড়ে যায়। তাতে রানিগঞ্জের দু’জন, আসানসোলের একজন ও দুর্গাপুরের দু’জনের মৃত্যু হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় বাগেশ্বর জেলা প্রশাসন দু’জনকে হেলিকপ্টারে করে মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করে।
অল্পবিস্তর জখম হওয়া চারজনের পাশাপাশি সুস্থ যাত্রীদের কপকোটেই হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেছিল পুলিস। সেখানেই রয়েছে ঊষশী, অহিন্দ্র ও পৃথ্বীরাজ। বয়স যথাক্রমে ৯, ১০ ও ১১। দ্বিতীয় গাড়িতে মা ও বাবার সঙ্গেই ছিল তারা। জীবনে প্রথমবার দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে তারা। গাড়ি করে যাওয়ার কথা শুনলেই বাবা, মায়ের মুখ চেপে ধরে বলছে, আমরা গাড়িতে চাপব না। যদি আমরা খাদে পড়ে যাই।
এদিনও নানা কারণে তারা বাড়ি ফেরার জন্য পাহাড়ি এলাকা থেকে নামতে পারেনি। শুক্রবার ভোরে তাদের বের হওয়ায় কথা। আটকে থাকা যাত্রী তুলিকা রায়, শুভ্রা রায় বলেন, কী করে বাচ্চাগুলিকে নিয়ে যাব বুঝতে পারছি না। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। আমরা চাইছি, প্রশাসন যেন আমাদেরও সাহায্য করে।