Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

 কলকাতার গর্বের চার্চ
 ​​​​​​শান্তনু বসু

১৬৯০ সালের ২৪ আগস্ট। সুতানুটির ঘাটে জাহাজ ভেড়ালেন জোব চার্নক। কলকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রাম নিয়ে গড়ে উঠল ইংরেজদের বাণিজ্যঘাঁটি। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী হিসেবে অবশ্য ইংরেজরাই কলকাতায় প্রথম নয়, তাদের আগে বসতি স্থাপন করেছিল আর্মেনিয়ান ও পর্তুগিজরা।
জমির উপর ইংরেজদের বৈধ অধিকার নেই। একরকম জবরদখল করে সুতানুটি-কলকাতা-গোবিন্দপুর এলাকা জুড়ে তাদের বসে পড়া। গায়ের জোরেই তারা তখন ওই তিনখানি গ্রামের মালিক।  পর্তুগিজদের আবেদনে সাড়া দিয়ে ১৬৯০ সালে মুরগিহাটায় গির্জা গড়ার জন্য একখণ্ড জমি দান করলেন জোব চার্নক। সেই জমিতে ওই বছরেই গড়ে উঠল কাঠের তৈরি ছোট একটা উপাসনালয়। রোমান ক্যাথলিক চার্চ। দিশি লোকেরা বলত মুরগিহাটার গির্জা। সেই প্রথম কলকাতার বুকে কোনও চার্চের আত্মপ্রকাশ। 
ইংরেজরা গোড়া প্রোটেস্ট্যান্ট। তারা পর্তুগিজদের ক্যাথলিক গির্জায় উপাসনা করতে গেল না। কিন্তু ধর্মাচরণের তো একটা জায়গা চাই। আপাতত একটা পর্ণকুটিরকে অস্থায়ী গির্জাঘর হিসেবে ইংরেজরা নির্দিষ্ট করল। ১৬৯৬ সালে ফোর্ট উইলিয়াম গড়ে ওঠার পর ইংরেজদের অস্থায়ী গির্জা স্থানান্তরিত হল কেল্লার একটি ঘরে। 

১৭০০ সালে মুরগিহাটার কাঠের গির্জার পাশে ইট গেঁথে ছোট একটি চ্যাপেল গড়ে তুলল পর্তুগিজরা। বর্তমানে বড়বাজার অঞ্চলে পর্তুগিজ চার্চ স্ট্রিটে ‘ক্যাথিড্রাল অফ দ্য মোস্ট হোলি রোজারি’ নামে যে বিরাট চার্চটি আমরা দেখতে পাই, সেটি পুরনো চ্যাপেল ভেঙে ১৭৯৯ সালে ধনী পর্তুগিজ দুই ভাই জোসেফ ব্যারেটো ও লুই ব্যারেটোর অর্থ সাহায্যে গড়ে ওঠে। এখনও এই গির্জা অনেকের কাছে মুরগিহাটার গির্জা নামে পরিচিত।    
কলকাতার বুকে ইংরেজদের নিজস্ব কোনও চার্চ নেই। পাদরি নেই। প্রভু যিশুর ভজনা মনমতো হচ্ছে না। এ নিয়ে সবসময় খুঁতখুঁত করে ইংরেজদের মন। ফোর্ট উইলিয়ামের একটা স্যাঁতসেঁতে ঘরে কোনওরকমে সারতে হয় প্রেয়ার। উপাসনার সময় কাউন্সিলের একজন বয়স্ক সদস্যকে পাদরি সাজিয়ে দেওয়া হয়। তিনি সাধারণ পোশাকের উপর একটা কালো কোট চাপিয়ে সারমন দেন। এদিকে কলকাতায় ইংরেজদের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। কেল্লার ভিতরে ছোট উপাসনা ঘরে সকলের স্থান সংকুলান হয় না। এভাবে কতদিন আর চলে ?      

গির্জা তৈরির নামে ইংরেজরা চাঁদা তোলার সিদ্ধান্ত নিল। খুব অল্প সময়েই জোগাড় হয়ে গেল টাকা। ১৭০৯ সালে বর্তমান রাইটার্স বিল্ডিংয়ের পশ্চিম দিকে, পুরনো ফোর্ট উইলিয়ামের পাশে তৈরি হল গির্জা সেন্ট অ্যানস চার্চ। কোম্পানির ডিরেক্টররা ইংল্যান্ড থেকে গির্জায় ঝোলানোর জন্য সুন্দর একটা ঘণ্টা পাঠিয়ে দিলেন। একজন পাদরিকেও পাঠালেন। তাঁর নাম ছিল উইলিয়াম অ্যান্ডারসন।
সেন্ট অ্যানস চার্চ কলকাতা শহরের বুকে গড়ে ওঠা প্রথম প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ। আজ আর তার কোনও অস্তিত্ব নেই। ১৭৩৭ সালের আশ্বিনের ঝড়ে গির্জার চুড়োটা খসে পড়ে যায়। ১৭৫৬ সালে কলকাতা জয় করে ফেরার সময় নবাব সিরাজ-উদ্‌-দৌলা চার্চটিকে মাটিতে গুঁড়িয়ে দিয়ে যান। 
পলাশির যুদ্ধের পর কলকাতায় জাঁকিয়ে বসল ইংরেজরা। সমস্যা দেখা দিল তাদের ধর্মাচরণে। সেন্ট অ্যানস চার্চ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কলকাতার একমাত্র উপাসনালয় বলতে রয়েছে মুরগিহাটার ক্যাথলিক চার্চটি। সেখানে প্রোটেস্ট্যান্ট ইংরেজরা যায় কী করে? কথায় বলে জোর যার মুলুক তার। ক্লাইভ সাহেব মুরগিহাটার চার্চ পর্তুগিজদের কাছ থেকে কেড়ে নিলেন। সেখানে প্রোটেস্ট্যান্ট মতে ইংরেজরা ধর্মাচারণ শুরু করল।
কিছুদিন পর ইংল্যান্ড থেকে কোম্পানির ডিরেক্টরদের ধমক খেয়ে মুরগিহাটার চার্চ পর্তুগিজদের ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হলেন ক্লাইভ। একথাও অবশ্য ঠিক যে জোর করে দখল করা ক্যাথলিক চার্চে গিয়ে প্রোটেস্ট্যান্ট মতে উপাসনা অনেক ইংরেজেরই ঠিক পছন্দ হচ্ছিল না।

এবারে কী করা যায়? পরিত্যক্ত পুরনো কেল্লার একটি গুদাম ঘরকে চ্যাপেলে রূপান্তরিত করল ইংরেজরা। ১৭৬০ এর জুলাই থেকে ১৭৮৭ সাল পর্যন্ত এটি ছিল ছিল কলকাতায় ইংরেজদের প্রেসিডেন্সি চ্যাপেল— প্রধান উপাসনা গৃহ। তবে সেন্ট জনস চ্যাপেলের পরিবর্তে ‘চ্যাপেল অব দ্য ওল্ড ফোর্ট’ নামেই এটি সাহেবমহলে অধিক পরিচিতি লাভ করে।    
এখন কথা হল, কলকাতার বুকে যে মস্ত গির্জাগুলিকে এখনও আমরা দেখতে পাই তার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো কোনটি? ‘আর্মানি গির্জের কাছে আপিস’ সহজপাঠের দ্বিতীয় ভাগের অষ্টম পাঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে গির্জার কথা লিখেছেন, সেটিই প্রাচীনতম। বর্তমানে চীনাবাজারের ঘিঞ্জি এলাকার মধ্যে অবস্থিত আর্মেনিয়ান চার্চটি স্থাপিত হয় ১৭২৪ সালে। আর্মানি বণিক আগা নাজারের বিশেষ উদ্যোগে এটি গড়ে ওঠে। তার সম্মানেই এই গির্জার নাম রাখা হয়েছিল হোলি চার্চ অব নাজারেথ।     
সাবেকি মিশন রো, বর্তমানে আর এন মুখার্জি রোডের উপর রয়েছে ওল্ড মিশন চার্চ। জন জ্যাকেরিয়া কিয়ার‍্যান্ডার নামে লর্ড ক্লাইভের ঘনিষ্ঠ একজন প্রোটেস্ট্যান্ট মিশনারি এই চার্চ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ১৭৭০ সালে। বর্তমানে চার্চটির কোনও চূড়া নেই। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে চূড়াটি খসে যায়। তবে চূড়াসমেত চার্চটিকে দেখতে পাওয়া যায় শিল্পী টমাস ড্যানিয়েলের আঁকা ছবিতে।  
তৈরি হওয়ার পর দীর্ঘ দিন মিশন চার্চ ছিল পলেস্তরা বিহীন। গির্জার লাল ইটের দেওয়াল দেখে দিশি লোকেরা বলত ‘লাল গির্জা’। সেন্ট জনস চার্চের চেয়ে পুরনো হলেও এটি কখনও কলকাতার প্রেসিডেন্সি চার্চের সম্মান পায়নি। এই গির্জার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল প্রোটেস্ট্যান্ট মতে ক্যাথলিকদের দীক্ষিত করা। ধর্মান্তরকরণ মূল উদ্দেশ্য হওয়ায় চার্চের নাম হয় মিশন চার্চ। সেন্ট জনস গির্জা গড়ে ওঠার পর থেকে এটি ওল্ড চার্চ নামে অভিহিত হতো। পরে কোনও সময় চার্চের নামের প্রথমে ওল্ড কথাটি পাকাপাকিভাবে বসে গিয়ে চার্চের নাম হয়ে দাঁড়ায় ওল্ড মিশন চার্চ।   
এই গির্জা এক ঐতিহাসিক ধর্মান্তরকরণের সাক্ষী। ১৮৪৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল মিশন চার্চের বাইরে। কলকাতার সুপ্রিম কোর্টের নামজাদা উকিল রাজনারায়ণ দত্ত নিজস্ব লেঠেল বাহিনীর সাহায্যে ছেলেকে যাতে মিশন চার্চ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে না পারেন সেই জন্য এই ব্যবস্থা। তবে গোলমাল কিছু হয়নি। রাজনারায়ণ দত্তের ছেলে মধু নির্বিঘ্নেই আর্চডিকন ডিয়াল্ট্রির কাছ থেকে খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষা নিলেন। দীক্ষান্তে তাঁর নাম হয় মাইকেল মধুসূদন দত্ত।   
১৭৯৩ সালের কথা। কলকাতায় এসেছেন উইলিয়াম কেরি। মুন্সি রামরাম বসুকে সঙ্গে নিয়ে কেরিসাহেব সপরিবারে শহর দেখতে বেরিয়েছেন।  প্রথম পাতার পর
‘কেরী সাহেবের মুন্সী’তে পাওয়া যায়— ‘...ডাঃ কেরী, মিসেস কেরী, এবারে আমাদের নামতে হবে, সমুখেই সেন্ট জনস্‌ চার্চ, কলকাতার সবচেয়ে বড় গির্জা, এই সেদিনমাত্র তৈরি হয়েছে। ঐ যে গায়ে তারিখটা স্পষ্ট পড়া যাচ্ছে, ১৭৮৭ অ্যানো ডমিনি... কেরী ও টমাস গিয়ে গির্জের কাছে নতজানু হয়ে বসল আর প্রার্থনা শুরু করল, পাশে দাঁড়িয়ে রইল রামরাম বসু।’   
এখনও কলকাতার বুকে দাঁড়িয়ে থাকা সুমহান ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ স্থাপত্যগুলির মধ্যে অন্যতম সেন্ট জনস চার্চ। কলকাতার অন্যতম গর্ব। ১৭৭০ সালে সেন্ট জনস চ্যাপেল বা চ্যাপেল অব দ্য ওল্ড ফোর্টের চ্যাপেলিন নিযুক্ত হয়ে এসেছিলেন রেভারেন্ড উইলিয়াম জনসন। পলাশির যুদ্ধের পর থেকে কলকাতায় দ্রুত ইংরেজদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় স্থানাভাব হচ্ছে সেন্ট জনস চ্যাপেলে। বড়সড় একটি গির্জা গড়ে তোলার প্রস্তাব দিলেন জনসন। উদ্যোগী হলেন গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস। এই উদ্যোগ গতি পেল একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ঘটনাটি জানা যায় ‘কেরী সাহেবের মুন্সী’ বইটি থেকে—
পরিত্যক্ত কেল্লার ভিতরে সেন্ট জনস চ্যাপেল। ‘...ওখানে মেয়েদের পালকি থেকে নামতে বড় অসুবিধা হতো। একদিন, সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল,  গভর্নরের পত্নী এলেন পালকিতে। তিনি নামতে যাবেন, কখন স্কার্ট বেঁধে গিয়েছে একটা কাঁটায় সবসুদ্ধু সে এক লজ্জাকর বীভৎস ব্যাপার। সেই দিনই স্থির হল— না, এমন করে চলে না, শহরের যোগ্যতা মাফিক গির্জা গড়তে হবে। উপাসনার শেষেই চাঁদার আবেদন জানানো হল।’ 
১৭৮৪ সালের ৮ এপ্রিল এই গির্জার শুভ শিলান্যাস অনুষ্ঠান হয়। গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস বিশেষ কাজে বাইরে থাকায় শিলান্যাস অনুষ্ঠানের পৌরোহিত্য করলেন কাউন্সিলের প্রবীণ সদস্য এডওয়ার্ড হুইলার। গির্জার কাজ শেষ হওয়ার আগেই হেস্টিংস বিলেতে ফিরে গিয়েছিলেন। তাঁর জায়গায় এলেন লর্ড কর্নওয়ালিস।     
লটারি ও চাঁদার টাকায় গড়ে উঠেছিল সেন্ট জনস গির্জা। ১৭৮৭ সালের ২৪ জুন, রবিবার ব্যাপটিস্ট সন্ত জনের জন্মদিনে সপারিষদ গভর্নর জেনারেল, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও কলকাতার গণ্যমান্য নরনারীদের উপস্থিতিতে গ্রিক স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত সেন্ট জনস চার্চের শুভ উদ্বোধন  হল। কলকাতায় বিশপের পদ সৃষ্টি হয় ১৮১৩ সালে। তখন থেকে সেন্ট জনস চার্চকে বিশপের ক্যাথিড্রাল বলে ঘোষণা করা হয়। সেন্ট পলস ক্যাথিড্রালের উদ্বোধন পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বহাল ছিল।     
যেখানে এই চার্চটি অবস্থিত, সেখানে ছিল ইংরেজদের আদি গোরস্থান। এর পূর্বদিকে ছিল কোম্পানির পরিত্যক্ত বারুদঘর –ওল্ড পাউডার ম্যাগাজিন ইয়ার্ড। এই বারুদঘরের জমিটি নিলামে কিনে নিয়ে মহারাজা নবকৃষ্ণ দেব বাহাদুর গির্জা গড়ার জন্য ওয়ারেন হেস্টিংসকে দান করেছিলেন। 
‘কেরী সাহেবের মুন্সী’ থেকে জানা যাচ্ছে, ‘... রাম বসু সেন্ট জন গির্জার ইতিহাস বলতে শুরু করল, একজন হিন্দু রাজার দত্তা জমিতে এর ভিত্তিপত্তন, আর গির্জার পাথর আনা হয়েছে রাজমহল বলে একটা জায়গার নবাবী প্রাসাদ ভেঙে। সেই সুবাদে দেশীয় লোকেরা এটাকে বলে ‘পাথুরে গির্জা’। কাজেই দেখতে পাচ্ছেন যে, হিন্দু-মুসলমান ও খ্রীষ্টানের মিলন ইতিমধ্যেই ঘটেছে গির্জা গঠনে!’
সেন্ট জনস চার্চ কলকাতার প্রথম অ্যাংলিকান ক্যাথিড্রাল। কলকাতার পাঁচজন বিখ্যাত বিশপ মিডলটন, হেবার, জেমস, টার্নার ও উইলসন এই গির্জাতেই বিশপের পদে অভিষিক্ত হন।   
রাইটার্স বিল্ডিংয়ের পুব দিকে রয়েছে সেন্ট অ্যান্ড্রুজ চার্চ। এটি কলকাতার প্রথম স্কটিশ চার্চ।  স্কটিশ মিশনারি রেভারেন্ড জেমস ব্রাইসের উদ্যোগে, কোম্পানির অর্থ সাহায্যে এই চার্চটি গড়ে ওঠে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লর্ড ময়রা ও তার পত্নী কাউন্টেস লাউডন। 
কাউন্টেস লাউডন ছিলেন স্কটল্যান্ডের অধিবাসী। তাই এই গির্জা ছিল চার্চ অব হার নেটিভ কান্ট্রি। অনেকে এই চার্চকে বলত ‘লাট সাহেব কা গির্জা’। গির্জার দ্বারোদঘাটন হয় ১৮১৮ সালে। অত্যুচ্চ চূড়াটি এই গির্জার বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এই চূড়া তৈরির নেপথ্যে একটি মজার কাহিনি রয়েছে।
একই জাহাজে কলকাতায় এসেছিলেন বিশপ মিডলটন ও রেভারেন্ড ব্রাইস। মিডলটন মনে করতেন ব্রিটিশ কলোনিগুলিতে একমাত্র চার্চ অব ইংল্যান্ডের গির্জাতেই সুউচ্চ চূড়া নির্মাণের অধিকার আছে। তাই নিজের প্রভাব খাটিয়ে সেন্ট অ্যান্ড্রুজ চার্চের উঁচু চূড়া নির্মাণে তিনি বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করলেন।   
এদিকে ব্রাইস সংকল্প করলেন তিনি কলকাতার অ্যাংলিকান চার্চ সেন্ট জনস গির্জার চূড়ার চেয়েও উঁচু চূড়া তৈরি করবেন। চূড়ার উপরে বসাবেন মোরগ, যা বিশপের মাথার উপর কর্কশ স্বরে ডাকাডাকি করবে। সত্যিই গির্জার চুড়োয় মোরগ বসিয়ে ছাড়লেন ব্রাইস। 
কোম্পানি বিশপের ক্ষতস্থানে প্রলেপ লাগাতে এক নির্দেশিকা জারি করল  ‘... this audacious bird should not have the benefit of the public works department.’ মোরগটি এখনও সেন্ট অ্যান্ড্রুজ গির্জার চূড়ার শীর্ষে দিব্যি বসে থেকে দুই মিশনারির হাস্যকর অহংবোধের স্মৃতি বহন করে চলেছে।  
বৈঠকখানা অঞ্চলে পাঁচ বিঘে জমির উপর গড়ে উঠেছিল সেন্ট জেমস চার্চ। রবার্ট ল্যাজেরাস ডি এলিভিয়েরা নামে জনৈক ফিরিঙ্গি তার বাগানবাড়ি গির্জা নির্মাণের জন্য দান করেছিলেন। কলকাতার প্রথম বিশপ মিডলটন ১৮২০ সালে এই গির্জার ভিত্তি স্থাপন করেন। তিন বছর পরে এর দুয়ার উন্মোচন করেন বিশপ হেবার। পুকুর ভরাট করে নির্মিত হওয়ায় নরম মাটিতে গির্জাটি ক্রমশ বসে যাচ্ছিল। তাই বিপর্যয় এড়াতে গির্জার মাথায় চূড়া বসানো হল না। লোকে বলত ‘ন্যাড়া গির্জা’। ১৮৫৮ সালে গির্জার ছাদ ভেঙে পড়ে। তার পর চার্চটিকে ভেঙে ফেলা হয়। 
১৮৬৪ সালে লোয়ার সার্কুলার রোডের উপর (এখনকার আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস রোড) উপর নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হল সেন্ট জেমস চার্চ। এই গির্জার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল দুটি চূড়া, যা আর কোনও গির্জার নেই। তাই লোকে বলে ‘জোড়া গির্জা’।  
বর্তমান মিডলটন রো’তে অবস্থিত সেন্ট টমাস চার্চের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন লেডি উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক। ১৮৩১ সালে এই চার্চটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সেন্ট মাদার টেরিজার মৃত্যুর পর তার নশ্বর দেহ এই চার্চে সকলের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য প্রায় সপ্তাহকালব্যাপী শায়িত ছিল।  
বিশপের এলাকার মুখ্য প্রার্থনা গৃহকে বলে ক্যাথিড্রাল। কলকাতায় বিশপের পদ সৃষ্টি হয়েছে ১৮১৩ সালে, কিন্তু কলকাতায় কোনও ক্যাথিড্রাল নেই। সেন্ট জনস চার্চকেই তখন ক্যাথিড্রাল হিসেবে গণ্য করা হতো। ১৮১৯ সালেই কলকাতায় একটা ক্যাথিড্রাল গড়ার পরিকল্পনা করেছিল ইংরেজরা। কিন্তু সে পরিকল্পনা তখন রূপায়িত হয়নি। 
১৮৩৩ সালে কলকাতার চতুর্থ বিশপ টার্নার ফের ক্যাথিড্রাল গড়ার প্রস্তাব উত্থাপন করলেন। এবারে উদ্যোগ নিল ইংরেজরা। স্থির হল, ময়দানের দক্ষিণে, চৌরঙ্গিতে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল নামে বড় একটা উপাসনালয় তৈরি করা হবে। ১৮৩৯ সালে এর শিলান্যাস করলেন বিশপ ড্যানিয়েল উইলসন। সাত বছর সময় লেগেছিল এই চার্চ গড়ে তুলতে। ১৮৪৭ সালের ৮ অক্টোবর বিশপ উইলসনের হাত দিয়েই সেন্ট পলস ক্যাথিড্রালের দরজা জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ইন্দো-গথিক স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এই গির্জার চূড়া ২০১ ফুট উঁচু। এত দীর্ঘ চূড়া কলকাতার আর কোনও গির্জার নেই। সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল আজও কলকাতার গর্ব, এক সম্ভ্রমপূর্ণ প্রার্থনা মন্দির।    
কলকাতা বন্দরের কাছে ডায়মন্ড হারবার রোডের উপর খিদিরপুরে রয়েছে সেন্ট স্টিফেনস চার্চ।  তৈরি হয় ১৮৪৬ সালে। বহুদূর থেকে দেখা যায় এর গগনচুম্বী চূড়া। দূর থেকে দেখে মনে হয় জাহাজের মাস্তুল। গির্জার কাছেই কলকাতা বন্দর। ইংরেজ আমলে যাত্রীবাহী জাহাজ বন্দরের কাছাকাছি এলেই অনেকদূর থেকে এর চূড়াটি তাদের নজরে পড়ত। মূলত বিদেশি নাবিকদের কথা ভেবে এই গির্জাটি নির্মিত হয়েছিল।   
এদেশে ব্যবসা বিস্তারের গোড়ার দিকে কোম্পানির কর্মচারীদের প্রতি ইংল্যান্ডের ডিরেক্টরদের কড়া নির্দেশ ছিল নতুন দেশে স্থানীয় মানুষদের ধর্মাচরণের বিষয়ে তারা যেন একেবারেই মাথা না গলায়। তারা যেন এ নিয়ে কোনও গোলমাল পাকিয়ে এদেশের শাসকবর্গের বিরাগভাজন না হয়। মিশনারিরাও প্রথম দিকে বড় একটা আসেননি। তাই প্রায় গোটা অষ্টাদশ শতক জুড়ে কলকাতায় খ্রিস্টীয় উপাসনালয়ের প্রয়োজন হয়েছিল কেবল ইংরেজদের ধর্মাচারণের জন্য। অষ্টাদশ শতকে মাত্র তিনটি চার্চ ইংরেজদের উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল কলকাতায়। সেন্ট অ্যানস চার্চ, ওল্ড মিশন চার্চ ও সেন্ট জনস চার্চ।  
আঠেরো শতকের শেষ দিক থেকে ব্রিটিশ কলোনির অন্তর্ভুক্ত অখ্রিস্টান দেশগুলিতে মিশনারিদের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পায়। ১৮১৩ সালে কোম্পানির সনদ নবীকরণের সময় ধর্মপ্রচারের বাধানিষেধ তুলে নেওয়া হয়। তারপর থেকে নানা সম্প্রদায়ভুক্ত খ্রিস্টান পাদরিরা কলকাতায় আসতে শুরু করেন। তাদের প্রভাবে নেটিভরা অনেকে খ্রিস্ট ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ধর্মান্তরিত হতে শুরু করে।  
ভারতে কোম্পানির শাসন কায়েম হওয়ার পর রাজধানী কলকাতায় এমনিতেই ইংরেজদের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছিল। এদের ও ধর্মান্তরিত নেটিভদের ধর্মাচরণের সুবিধের জন্য গোটা উনিশ শতক জুড়ে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় খুব দ্রুত অনেকগুলি খ্রিস্টীয় উপাসনালয় গড়ে ওঠে। সাবেকি কলকাতার ঐতিহ্য ও ইতিহাসের সাক্ষর বহন করে আঠেরো ও উনিশ শতকে নির্মিত চার্চগুলি কলকাতার বুকে আজও গর্বের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে।  
দু’দিন আগেই চলে গেল বড়দিন। প্রভু যিশুর আবির্ভাব দিবসে রঙিন সাজে সেজে উঠল চার্চগুলি। ধৌত হল আলোর ঝরনায়। শীতের কলকাতা আমোদিত হল ক্রিসমাস ক্যারোলের সুরে। সাহেবদের বড়দিন পালনের ঘটা, গির্জায় গির্জায় আনন্দ উৎসব, কার্নিভাল প্রথমে হাঁ করে দেখত অখ্রিস্টীয় দিশি মানুষজন। পরে ধর্মীয় অনুষঙ্গ বাদ দিয়ে তারাও এই উৎসবের আনন্দে শামিল হতে শুরু করল। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যে কোনও ধর্মীয় উৎসবের আনন্দকে আত্তীকরণ করে নিতে বাঙালির যে জুড়ি নেই। সাধে কী বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ!
 ছবি: অতূণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সায়ন চক্রবর্তী
 গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায়: উজ্জ্বল দাস
27th  December, 2020
নোবেল, পেনরোজ, 
বং কানেকশন
মৃন্ময় চন্দ

অবিশ্বাস্য, পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কারে বং কানেকশন! আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি বা আপেক্ষিকতাবাদের সূত্রেই হকিং-পেনরোজ ব্ল্যাকহোলের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহাবিশ্বে অজস্র গ্রহাণুর বর্ণিল ঝিকিমিকির মধ্যে মূর্তিমান বেমানান ‘ব্ল্যাকহোল’, জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এমনটাই মনে করতেন আইনস্টাইন। বিশদ

17th  January, 2021
কোট-প্যান্ট 
পরা সন্ন্যাসী

অনেকেই জানতে চান, কার নির্দেশে গৈরিক সন্ন্যাসীরা কোট-প্যান্ট-টাই পরা সন্ন্যাসী হলেন? সহজ উত্তর, এর পিছনে রয়েছে স্বয়ং স্বামীজির সবুজ সঙ্কেত। সন্ন্যাসীদের কেন এই বেশবাস? লিখছেন শংকর। বিশদ

10th  January, 2021
আমার সন্তান যেন থাকে
ভ্যাকসিন  ভাতে
সুন্দর মুখোপাধ্যায়

দু’হাজার কুড়ি বিদায় নিয়েছে, দুর্যোগও যেন শেষ হতে চলল। তবে এ ব্যাপারটা হোল-ওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে আগে বুঝেছে বরানগরের বিল্টু। তার প্রেমিকা মিতা পুরো বছরটা ঝুলিয়ে রেখে একেবারে বছর শেষে বাড়ির অমতে বিয়েতে মত দিয়েছে। এই সুবর্ণসুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়, বিল্টুও করেনি। বিশদ

03rd  January, 2021
দেশবন্ধু ১৫০
রজত চক্রবর্তী

১৮৯৭। কলকাতা সরগরম। বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজে কিছুদিন ধরেই আলোচনা তুঙ্গে। চারিদিকে ছি ছি পড়ে গিয়েছে! ব্রাহ্ম সমাজের মাথারা আলোচনায় বসেছেন। কারণ, বরদানাথ হালদার ও ভুবনমোহন দাশ সমাজের অগ্রগণ্য দুই মানুষ জড়িয়ে গিয়েছেন এই ঘটনায়। বরদানাথ হালদার বিক্রমপুরের নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা আর ভুবনমোহন দাশ কলকাতার। বরদানাথ হালদারের আর্থিক অবস্থা ভালো হলেও ঋণগ্রস্ত ভুবনমোহন দাশের অর্থনৈতিক অবস্থা জর্জরিত। বিশদ

20th  December, 2020
লৌহপুরুষ
সমৃদ্ধ দত্ত

মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের প্রয়াণদিবস। ৭০ বছর হয়ে গেল তিনি আর নেই। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের অখণ্ডতা রক্ষায় তাঁর অবদান আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি সত্যিই এদেশের এক ও একমাত্র আয়রনম্যান।
বিশদ

13th  December, 2020
সিটিজেন বনাম 
সিনিয়র সিটিজেন
শংকর

আগামীকাল, ৭ ডিসেম্বর আমার জন্মদিন, কিন্তু আজ তো ৬ ডিসেম্বর, জোর করে বলা যায় না আমি এইট্টি সেভেন নট আউট হতে চলেছি আগামী কাল। নানা অনিশ্চয়তা নিয়ে এখনকার দিনকাল। তার সঙ্গে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার, যাদের ধরবার জন্য নবাগত একটি ভাইরাস নাকি বিশেষ আগ্রহী। দেখা যাচ্ছে, মানুষ থেকে জীবাণু পর্যন্ত কেউই নিজের জোরে রাজত্ব চালাতে আগ্রহী নয়, তাই বাংলা ভাষাতেও ‘কো-মরবিডিটি’ বলে একটা ইংরেজি শব্দের বেআইনি অনুপ্রবেশ ঘটল।  বিশদ

06th  December, 2020
অবিশ্বাস্য
রাতুল ঘোষ

পার্থিব জীবন থেকে মুক্তি মিললেও ডিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা অমর হয়ে থাকবেন। অন্তত এই গ্রহে যতদিন ফুটবল খেলা বেঁচে থাকবে। খ্যাতি-অখ্যাতির নেপথ্যে তাঁর এই চিরপ্রস্থানে ব্যথিত, শোকস্তব্ধ ফুটবল দুনিয়া। ফিফা আয়োজিত ফুটবলপ্রেমীদের গরিষ্ঠাংশের ভোটে মারাদোনা বিংশ শতাব্দীর সেরা ফুটবলারের সম্মান যৌথভাবে পেয়েছিলেন ফুটবল সম্রাট পেলের সঙ্গে ভাগাভাগি করে। বিশদ

29th  November, 2020
হেমন্তের দুর্গা 
সুখেন বিশ্বাস

মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের স্বপ্নে পাওয়া জগদ্ধাত্রী। এই পুজো এখন আর কৃষ্ণনগর বা চন্দননগরে সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে গিয়েছে বাংলার সর্বত্র। হেমন্তকালের শুক্লা কার্তিকের নবমীতিথিতে তাই বাংলায় নতুন করে দেখা যায় শরতের রোদ্দুর। আকাশবাণীর প্রভাতী অনুষ্ঠান বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জীর’ নেই... তবু প্রবাসীরা ঘরে ফেরে। দুর্গাপুজোর মতোই নতুন পোশাকে মানুষ বেরিয়ে পড়ে ঠাকুর দেখতে।  
বিশদ

22nd  November, 2020
শ্যামাসংগীত...
আলাদা একটা অধ্যায়
শ্রীকান্ত আচার্য্য

 ছোটবেলা থেকেই শ্যামাসংগীতে আমার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। সেটা পান্নালাল ভট্টাচার্যের গান শুনেই। বাড়িতে রেকর্ড ছিল। ‘দোষ কারও নয় গো মা...’ পাগল করা একটা গান, দাশরথি রায়ের অপূর্ব লিরিক। পুজোআচ্চা বা মন্দিরে যাওয়া, এসবে আমি নেই ঠিকই... কিন্তু ভক্তিগীতি বরাবর ভালো লাগে। শ্যামাসংগীত আমাদের বাংলা গানের ইতিহাসে পৃথক একটা অধ্যায় বলা যেতে পারে। এই গান ঘিরে যে সাহিত্য-সম্পদ তৈরি হয়েছে, তা অমূল্য। বিশদ

15th  November, 2020
একবার দেখা দিলি না মা... 

 আর দশ বছর পরই তাঁর জন্মশতবর্ষ। বাঙালি তাঁকে মনের মণিকোঠায় কতটা রেখেছে, বলবে সময়ের দলিল। কিন্তু একটা বিষয়ে সকলেই একমত... ফুল ছাড়া যেমন পুজো হয় না, পান্নালাল ভট্টাচার্যের শান্ত-মিঠে কণ্ঠ ছাড়া মা কালীর আরাধনাও যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। বহু সাধক-কণ্ঠে মায়ের গান শুনেও পান্নালালের সেই আর্তি খুঁজে পেয়েছেন, এমনটা হলফ কেউ বলতে পারেন না। মায়ের পায়ের জবা হয়ে ফুটে ওঠা পান্নালাল ভট্টাচার্যকে সেদিন ভুলে থাকে, সাধ্য কার! পান্নালালের চেয়ে আট বছরের বড়, তাঁর মেজদা ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য। তাঁরই ছেলে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য... পান্নালালের ভাইপো। যিনি গর্ব করে বলতেই পারেন, তাঁর বাবা-কাকার মতো শিল্পী আগামী দু’শো বছরে আর আসবে না এ বাংলায়। বলতেই পারেন, কালীপুজোর নির্ঘণ্ট মানে জবাফুল, বেলপাতা আর পান্নালালের গান। এই অমূল্য রত্নকে কাছ থেকে দেখা ভাইপো দীপঙ্কর ভট্টাচার্যর স্মৃতিচারণায় উঠে এলেন এক অন্য সাধক। শুনলেন অন্বেষা দত্ত। বিশদ

15th  November, 2020
মোদির মিশন বিহার
সমৃদ্ধ দত্ত

নরেন্দ্র মোদি রেকর্ড গড়তে ভালোবাসেন। যে কোনও একটি সাফল্যকেই তাঁর অনুগামী ও দল রেকর্ড হিসেবে প্রচার করে এবং বিশ্বাসও করে। রেকর্ড করতে কে না ভালোবাসে? তাই এটা কোনও অন্যায় নয়। অপার জনপ্রিয়তা, অপরিসীম ক্যারিশমা, দল ও সরকারের উপর একচ্ছত্র অথরিটি।   বিশদ

08th  November, 2020
হোয়াইট হাউসের 
ভাগ্য গণনা
সুদীপ্ত রায়চৌধুরী

ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের কথা। বিকেল গড়িয়ে প্রায় সন্ধে। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোবাইলের চেনা রিংটোন। স্ক্রিনে +৯১... নম্বর, মায়ের। অসময়ে ফোনটা দেখেই নাতাশার ভ্রূ দু’টো একে অপরকে আলতো করে ছুঁয়ে ফেলেছিল। ফোন কানে দিতেই বয়ে এল দুঃসংবাদ। আচমকাই মারা গিয়েছেন শ্বশুর। ব্যাঙ্কের কনফারেন্সে স্বামী তখন অন্য শহরে। বাড়ি ফিরে একটা ব্যাগে টুকিটাকি সমস্ত কিছু গুছিয়ে চার বছরের ছেলেকে নিয়ে সোজা এয়ারপোর্ট। এর মধ্যেই বরকে খবর দেওয়া, প্লেনের টিকিট কাটা...। বিশদ

01st  November, 2020
জাগরিত জ্যোতির্ময়ী 
সৌম্য নিয়োগী

১৯ বছর পর... আরও একবার কার্তিকে মায়ের আগমনি।
আজ মাস পয়লা। ১ কার্তিক, ১৪২৭। ক্যালেন্ডার থেকে আশ্বিনের পাতা ঝরে গিয়েছে। শরৎ নেই। আকাশের দিকে চোখ রাখা যায় না। মাটিতে রোদ্দুরের ছায়া। হেলে পড়া আলো আর বিষাদ। ঋতুর কি কোনও ভাবনা থাকে? মানুষ কি সৃষ্টি করে তাকে?   বিশদ

18th  October, 2020
থিমের বিবর্তন
প্যান্ডেলওয়ালা থেকে শিল্পের সফর
বন্দন রাহা

 একটি অগ্নিকাণ্ড একরাতেই বদলে দিয়েছিল বাংলার দুর্গাপুজো। একচালার সাবেকি দুর্গাপ্রতিমাকে পাঁচটি চালচিত্রে ভেঙে দিয়েছিলেন শিল্পী গোপেশ্বর পাল। দুঃসাহসিক এই পদক্ষেপের নেপথ্যে ছিলেন এক মহান বাঙালি, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। ১৯৩৮ সালে কুমোরটুলি সর্বজনীনে। বিশদ

11th  October, 2020
একনজরে
ইরাকের রাজধানী বাগদাদে আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারালেন কমপক্ষে ২৮ জন। জখম ৭৩ জন। বৃহস্পতিবার বাগদাদের ব্যস্ততম তায়ারান স্কোয়ারে পুরনো জামাকাপড়ের বাজারে পরপর এই হামলা চালানো ...

তড়িঘড়ি করে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে বিতর্কে জড়াল কর্তৃপক্ষ। ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রার্থীদের ডেকেও মাত্র একদিনের মাথায় পিছিয়ে এল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ...

শনিবার অসমে জমির পাট্টা বিলির সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক লক্ষের বেশি ভূমিহীনকে পাট্টা দেওয়ার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অসম সরকার। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল জানিয়েছেন, ‘দশকের পর দশক ধরে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে বেঁচে রয়েছেন বহু মানুষ। ...

চলতি আর্থিক বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ২৬ শতাংশ ব্যবসা বাড়াল বন্ধন ব্যাঙ্ক। গত আর্থিক বছরের ওই সময়ের নিরিখে এই বৃদ্ধি হয়েছে। ডিসেম্বর শেষে ব্যাঙ্কের ঋণ ও জমা মিলিয়ে মোট অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১.৫১ লক্ষ কোটি টাকা। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। তবে তা বাস্তবায়িত হওয়াতে সমস্যা আছে। লৌহ ও ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৬৬৬: মুঘল সম্রাট শাহজাহানের মৃত্যু
১৮৯৭ - কবি, লেখক সঙ্গীতশিল্পী তথা সুরকার দিলীপকুমার রায়ের জন্ম
১৯০০ - টেলিপ্রিন্টার ও মাইক্রোফেনের উদ্ভাবক ডেভিট এ্যাডওয়ার্ড হিউজ।
১৯০১: রানি ভিক্টোরিয়ার মৃত্যু
১৯২৭ - প্রথমবারের মতো বেতারে ফুটবল খেলার ধারাবিবরণী প্রচার।
১৯৭২: অভিনেত্রী নম্রতা শিরোদকরের জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭২.১২ টাকা ৭৩.৮৩ টাকা
পাউন্ড ৯৮.১২ টাকা ১০১.৫৯ টাকা
ইউরো ৮৬.৯৪ টাকা ৯০.১৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৫০,৩০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৭,৭২০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৮,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৭,৫০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৭,৬০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৮ মাঘ ১৪২৭, শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি ২০২১, নবমী ৩০/১৮ রাত্রি ৬/৩০। ভরণী নক্ষত্র ৩০/৪৪ রাত্রি ৬/৪০। সূর্যোদয় ৬/২২/৩৩, সূর্যাস্ত ৫/১৩/৫১।  অমৃতযোগ দিবা ৭/৫৯ মধ্যে পুনঃ ৮/৩২ গতে ১০/৪৩ মধ্যে পুনঃ ১২/৫২ গতে ২/১৯ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৫ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৬/৫৭ গতে ৮/৪৩ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৪ গতে ৪/৩৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৯ গতে ১১/২১ মধ্যে পুনঃ ৪/৩৭ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৯/৫ গতে ১১/৪৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৩১ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
৮ মাঘ ১৪২৭, শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি ২০২১, নবমী রাত্রি ৫/৫৪। ভরণী নক্ষত্র রাত্রি ৬/৩৯। সূর্যোদয় ৬/২৬, সূর্যাস্ত ৫/১৩। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৬ মধ্যে ও ৮/৩১ গতে ১০/৪৪ মধ্যে ও ১২/৫৮ গতে ২/১৭ মধ্যে ও ৩/৫৭ গতে ৫/১৩ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৮ গতে ৮/৫১ মধ্যে ও ৩/৪৩ গতে ৪/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/৩৪ গতে ১১/২৫ মধ্যে ও ৪/৩৪ গতে ৬/২৬ মধ্যে। বারবেলা ৯/৮ গতে ১১/৪৯ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৩১ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
৮ জমাদিয়স সানি।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
বিহারের বারসোইতে বেলাইন মালগাড়ি, আটকে একাধিক দুরপাল্লার ট্রেন 

09:38:49 PM

আইএসএল: ইস্ট বেঙ্গলকে ১-০ গোলে হারাল মুম্বই 

09:30:54 PM

বৈশালী ডালমিয়াকে বহিষ্কার করল তৃণমূল
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত বৈশালি ডালমিয়া। আজ, শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃণমূলের ...বিশদ

06:55:00 PM

ময়নাগুড়ির যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরে চুরি, চাঞ্চল্য
গতকাল রাতে ময়নাগুড়ির যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরে চুরির ঘটনায় ...বিশদ

04:55:05 PM

এক মিনিটের ব্যবধানে হাসপাতালে হাত ধরাধরি করেই মারা গেলেন করোনায় আক্রান্ত স্বামী-স্ত্রী
ভালোবাসার কাছে হার মানল করোনাও। প্রেমের গল্পে হাত ধরাধরি ...বিশদ

04:53:03 PM

সম্বর্ধিত ভারতীয় ক্রিকেট টিমের সদস্য কোলাঘাটের দয়ানন্দ
শুক্রবার সম্বর্ধনা দেওয়া হল ভারতীয় ক্রিকেট টিমের ম্যাসাজ থেরাপিস্ট কাম  ...বিশদ

04:41:00 PM