ব্যবসায়িক কাজকর্ম ভালো হবে। ব্যবসার প্রসারযোগও বিদ্যমান। উচ্চশিক্ষায় সন্তানের বিদেশ গমনের সুযোগ আসতে পারে। গৃহশান্তি ... বিশদ
সুষম এবং পুষ্টিকর খাদ্য
সারা বছরই বাচ্চাদের খাদ্যাভ্যাসের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। তবে শীতকালে শিশুদের স্বাস্থ্যরক্ষায় বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। মনে রাখবেন, ভিটামিন এ, সি, ডি, এবং ই সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য ইনফেকশনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। দিনে ৪-৫ বার অল্প পরিমাণে ফল এবং শাকসব্জি খাওয়ান বাচ্চাকে। দিনের শুরুতে স্বাস্থ্যকর প্রাতরাশ দেবেন। আপনার শিশু জাঙ্ক ফুড ভালোবাসলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন না দিতে। স্বাস্থ্যকর, ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ান। স্কুলেও বাড়ির তৈরি খাবার টিফিন হিসেবে দিন।
শীতের সঠিক পোশাক
বাইরে থাকাকালীন শিশুদের গরম রাখার জন্য হাল্কা, ঢিলেঢালা, পাতলা অথচ উষ্ণ কাপড়ের পোশাক দিন। ঠান্ডা বুঝে দরকারে একাধিক স্তর রেখে ভারী জ্যাকেট উপরে দিন। হাত ও কান মিটেন্স বা গ্লাভস, একটি টুপি এবং স্কার্ফ দিয়ে ঢেকে রাখুন। একটি সাধারণ নিয়ম হল, আপনি যত স্তর পরছেন, তার সঙ্গে আরও একটি স্তর যোগ করুন সন্তানের জন্য। তবে ঘুমের সময় খুব ভারী কম্বল ওদের দেবেন না।
বিশ্রাম, পর্যাপ্ত ঘুম
আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর বিশ্রাম ও ঘুমের সরাসরি এবং ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। আপনার সন্তানের ঘুমানোর রুটিন ব্যাহত হলে তার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার উপর প্রভাব পড়বে। তাই ঘুম নিয়ে হেলাফেলা নয়। ভালো ঘুম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মানদণ্ড— সাইটোকাইন ও লিউকোসাইট উৎপাদনে সাহায্য করে। তাই অন্তত ৮-১০ ঘণ্টা ঘুম প্রতিদিন শিশুদের জন্য দরকার। রাতে খাওয়ার আগেই শিশুর সব হোমওয়ার্ক এবং পড়াশোনা শেষ করান। শোওয়ার আগে মোবাইল ফোন ও অন্যান্য গ্যাজেটের ব্যবহার বন্ধ করুন। তা না হলে গভীর ঘুমের অভ্যাস হবে না। মন অতিরিক্ত চঞ্চল থাকবে।
এক্সারসাইজ
এক্সারসাইজ সকলের জন্য সবসময়ই উপকারী। এতে পেশি ও হাড়ের শক্তি বাড়ে। রক্তচাপ ও পাচনতন্ত্রের উন্নতি হয়। হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে এর জুড়ি মেলা ভার। মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার ক্ষেত্রেও শরীরচর্চা গুরুত্বপূর্ণ। অবসরে বাচ্চাদের হাঁটতে নিয়ে যেতে পারেন। ব্যায়াম, সাইকেল চালানো ইত্যাদির অভ্যাস করালে খুবই ভালো। এযুগের বাচ্চারা বেশিরভাগ টিভি বা মোবাইলে আসক্ত। মা-বাবাও শরীরচর্চার দিকটা অবহেলা করেন, সেটা করবেন না। আপনাকে দেখেই ওরা শিখবে।
হাইড্রেশন গুরুত্বপূর্ণ
গ্রীষ্মকালে প্রায়শই তেষ্টা থেকে প্রচুর জল খাওয়া হয়। যেটা শীতকালে ততটা হয় না। কিন্তু ঠান্ডাতেও বাচ্চাদের দিকে খেয়াল রাখুন। তারা যেন ঠিকমতো জল খায়। তেষ্টা না পেলেও তাকে পর্যাপ্ত জল দেবেন। বাচ্চা যদি যথেষ্ট জল না খায় তাহলে পেশিতে টান, ক্লান্তি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেবে।
একসঙ্গে এক গ্লাস জল না খেতে পারলে প্রতি ১৫-২০ মিনিট অন্তর অল্প অল্প জল খাওয়াতে পারেন। এতে ওরা হাইড্রেটেড থাকবে।
পরিবেশে ভারসাম্য
শীতকালে কুয়াশা এবং ধোঁয়ায় বায়ুর গুণমান খারাপ হয়। এই ধরনের বাতাসে শিশুদের শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে। এই ঋতুতে বেশিরভাগ ভাইরাস এবং সংক্রমণ বায়ুবাহিত হয়। শপিং মল, থিয়েটার এবং রেস্তরাঁর মতো ভিড়ের জায়গাগুলি কিছুটা এড়িয়ে চলুন। আপনার সন্তান যাতে যথেষ্ট পরিমাণে সূর্যের আলো পায়, সেটা নিশ্চিত করুন। ভিটামিন ডি-র এই উৎস লড়াই করার শক্তি জোগাবে। সূর্যের আলো থাকলে বাচ্চাকে বারান্দায় বসতে
বলুন বা বাড়ির বাইরে খোলা জায়গায় হাঁটতে নিয়ে যান।
অন্যান্য প্রতিরোধ
যারা ঠান্ডা, কাশি বা ফ্লু-তে আক্রান্ত, তাদের থেকে বাচ্চাকে দূরে রাখুন। শিশুকে রোজ ভালো করে হাত ধোয়ার নিয়ম শেখান। কাশি বা হাঁচি হলে টিস্যু পেপার ব্যবহার করতে বলুন। যদি টিস্যু পেপার না থাকে, তবে রুমাল দিন। কাশি-হাঁচির সময় কনুই দিয়ে আড়াল করতে শেখান। সর্দির সময় বাচ্চাকে স্যানিটাইজার দিন। মাস্ক পরান। টানা সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হলে বাচ্চার জামাকাপড় নিয়মিত ধুয়ে দিন। বারবার ওদের হাতের তালু এবং পিছনের অংশ পরিষ্কার রাখতে শেখান। শিশুর উপরে ডাক্তারি একদম নয়। অসুখ হলে সবসময় শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।